কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১২ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:১১ এএম
আপডেট : ১২ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:২৭ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
চারদিক

যানজট কমবে কীভাবে

যানজট কমবে কীভাবে

আমি একটি উন্নত দেশে এক যুগ গাড়ি চালিয়েছি। এরপর আট বছর ধরে বাংলাদেশে নিজের গাড়ি নিজেই ড্রাইভ করি। আমার অভিজ্ঞতার আলোকে তুলনা করে আমি যা বুঝি, বাংলাদেশের গাড়ির তুলনায় যে পরিমাণ রাস্তা আছে, সেটি নেহাত কম নয়। গাড়ির গতি স্বাভাবিক রাখতে আমাদের ট্রাফিক সিগন্যালগুলো সক্রিয় করতে হবে। এমনভাবে লেনগুলো করতে হবে যেন গাড়ি অটোমেটিক লেন ধরে চলাচল করতে পারে। ইউ টার্ন, ডানে-বাঁয়ে গাড়ি ঘোরানো এসব। ট্রাফিক বিভাগে দেশজুড়ে বিভিন্ন জায়গায় অনেক ল্যাব থাকতে হবে, যেখানে ট্রাফিক সিগন্যাল প্রতিস্থাপনের আগে গবেষণা করতে হবে। রিকশাগুলো ইঞ্জিনচালিত হোক ভালো কথা, তবে রিকশার বডিতে পরিবর্তন আনতে হবে। রিকশা বা অটোরিকশার তৈরি প্রতিষ্ঠান সরকারের অনুমোদনকারী সংস্থা থেকে যাত্রীর ব্যবহার উপযোগী নকশার অনুমোদন নিতে হবে, যার আদলে গাড়িগুলো তৈরি করতে হবে। ইঞ্জিনচালিত গাড়ি হলে ভালো, তখন ট্রাফিক নিয়ম মানতে অসুবিধা হয় না। আর প্যাডেলচাপিত গাড়ি প্রখর রোদে আর সীমাহীন কষ্টে ট্রাফিক সিগন্যাল অমান্য করে বেশি। মানবিক দিক চিন্তা করে নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে ছাড় দেয় প্যাডেলচালিত রিকশাওয়ালাদের। অন্যদিকে ট্রাফিকের নিম্নপদের জনবল অমানবিক পরিশ্রম করে রাস্তায় শৃঙ্খলা ধরে রাখার চেষ্টা করে। কিন্তু এভাবে কত দিন?

আধুনিক নগর জীবনে এভাবে ট্রাফিক ব্যবস্থা যেমন শহরের যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ে, তেমনই নিম্নপদের ট্রাফিকের শারীরিক ও মানসিক সক্ষমতা ভেঙে পড়ে। এ ব্যবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে আমাদের ট্রাফিক সিগন্যালগুলোর সংস্কার করতে হবে। সরকার ল্যাব স্থাপন করে মাঠপর্যায়ে সার্ভে করে সিগন্যালগুলো প্রতিস্থাপন করুক। এতে ট্রাফিক জ্যাম অনেকাংশে ঠিক হয়ে যাবে। বর্তমানের চেয়ে দ্বিগুণ হবে গাড়ির গতি। ট্রাফিক কর্মীদের তখন রোদে পুড়ে, গাড়ির ধোঁয়া খেয়ে হাত তুলে সিগন্যাল নিয়ন্ত্রণকারী হতে হবে না। তখন উল্টো পথে, কাগজপত্রবিহীন রাস্তার মোড়ে বৈধ-অবৈধ পার্কিংগুলোর শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ সহজ হবে। এ ছাড়া ট্রাফিক কর্মীরা তার জোনের সব জায়গায় বিচরণ করে এ কাজ উন্নতমানের করতে পারবে!

আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ আমি মনে করি তা হলো—

১. শহরগুলোতে অধিক পরিমাণে সরকারি-বেসরকারি গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা। সে ক্ষেত্রে পার্কিংয়ের জন্য বেসরকারি উদ্বেগতাদের প্রণোদনা দিয়ে উৎসাহ জোগানো যেতে পারে। এতে কর্মসংস্থানও হবে অনেকের। কারণ পার্কিংগুলোতে ছোট ছোট ফুড কোর্ট করা যাবে।

২. বড় রাস্তা, পার্ক, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে মাঠে আন্ডারগ্রাউন্ড করে পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা। এগুলো অনেক ব্যয়বহুল; কিন্তু পার্কিংয়ের চাহিদা তুঙ্গে। তাই সরকার সহজেই লিজ দিতে পারবে। পার্কিংয়ের চাহিদা দিনের পর দিন তা শুধুই বাড়বে।

৩. বাস টার্মিনালগুলোকে মাটির নিচে-ওপরে মিলে বহুতলবিশিষ্ট করা যেতে পারে।

৪. রিকশা, সিএনজিচালিত অটোরিকশা বা যে কোনো ধরনের গাড়ি যেন রাস্তার মোড় ব্লক না করে, সেদিকে তীক্ষ্ণ নজর রাখে।

৫. আরেকটা কঠিন কাজ করা যেতে পারে। জানি না, বেঁচে থাকতে এর সমাধান দেখতে পারব কি না। ভ্যানগাড়িমুক্ত রাস্তা এবং ফুটপাত ব্যবসামুক্ত রাস্তা। ফুটপাত বা রাস্তা ব্যবসার জায়গা নয়। এগুলো বন্ধ করতে পারলে ঢাকায় গাড়ির গতি বেড়ে যাবে। এটা অবশ্য বলার কিছু নেই, সবাই জানেন।

৬. যদি রাস্তায় গাড়ি দুর্ঘটনা হয়, শুধু ড্রাইভার না আরও কিছু বিষয় আইনের আওতায় আসতে পারে। যেমন—রাস্তায় স্ট্রিটলাইট, লেন ও বিভিন্ন ট্রাফিক সিগন্যালের জন্য সাংকেতিক চিহ্ন স্থাপনকারী সরকারি সংস্থার দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি। যদি গাড়ি দুর্ঘটনার জায়গায় রাস্তায় স্ট্রিটলাইট, লেন ও বিভিন্ন ট্রাফিক সিগন্যালের জন্য সাংকেতিক চিহ্ন না থাকে, সংশ্লিষ্টরা যথাযথ কারণ ব্যাখ্যা করতে না পারে, তবে তাকে দুর্ঘটনার জন্য দায়ী করতে হবে।

মো. শাহিনুর রহমান

প্রকৌশলী

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

মধুমতীতে বিলীন ১৪ ব্যারাক, আরও ৩টি অতিঝুঁকিতে

ভাঙার দুই দিনেও মেরামত হয়নি বেড়িবাঁধ, তলিয়েছে ঘরবাড়ি

শহীদ মীর মুগ্ধের জন্মদিনে ভাই স্নিগ্ধের আবেগঘন পোস্ট

ঢাকায় ১০ লাখ শিশুকে টাইফয়েড টিকাদানের লক্ষ্যমাত্রা, নিতে পারবে নিবন্ধন ছাড়াও

২৮ বছরের ক্রিকেট ইতিহাস নতুন করে লিখলেন ভারতীয় ওপেনার

হামাস-ইসরায়েলের সংলাপকে স্বাগত জানিয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তি

‘আইয়া দেখি মা-বাবাকে মাইরা খাটের ওপর বইসা রইছে’

নওগাঁর সাবেক এমপি ওমর ফারুক কারাগারে

হামজাদের খেলা দেখতে গেট ভেঙে স্টেডিয়ামে ঢুকলেন দর্শক

শুল্ক ফাঁকি দিয়ে আমদানিকালে ৭৫ হাজার কেজি সুতা জব্দ

১০

মায়ের লাশ আটকে সম্পত্তি ভাগ-বাঁটোয়ারা, ২০ ঘণ্টা পর দাফন

১১

ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের বাড়িতে অগ্নিকাণ্ড

১২

সন্ত্রাসবিরোধী আইনে বাংলাদেশে নতুন করে দমন-পীড়ন : এইচআরডব্লিউ

১৩

রাকসু নির্বাচন / ১৬ দফার ইশতেহার দিল গণতান্ত্রিক শিক্ষার্থী পর্ষদ

১৪

ব্যবসায়ীকে গুলি করে হত্যা, তিন দিন পরও হয়নি মামলা

১৫

হঠাৎ খুমেকে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতি, বিপাকে রোগীরা

১৬

‘মবোক্রেসি আমাদের ব্যর্থতা, সামাল দেওয়া যায়নি’

১৭

‘চন্দন কাঠ’ ভেবে উৎসুক জনতার ভিড়, না বুঝেই চলছে কেনাবেচা

১৮

মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন দাবিতে গণসমাবেশ ও মিছিল

১৯

ফেসবুকে যে পরিবর্তন আনতে যাচ্ছে মেটা

২০
X