শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২:০০ এএম
আপডেট : ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৭:৫৬ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

মাদক প্রতিরোধের ‘বজ্র আঁটুনি ফস্কা গেরো’

এ এইচ এম ফারুক
মাদক প্রতিরোধের ‘বজ্র আঁটুনি ফস্কা গেরো’

বাংলাদেশ বর্তমানে শুধু প্রাকৃতিক দুর্যোগ নয়, বরং প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলো থেকে আসা মাদকের এক নীরব আগ্রাসনেরও শিকার। ইয়াবা, ফেনসিডিল এবং হেরোইনের মতো বিধ্বংসী মাদকগুলো সীমান্তের সহজলভ্যতাকে পুঁজি করে দেশের লাখ লাখ যুবককে আসক্ত করছে। এ মাদকগুলো সেবনকারীর মস্তিষ্কের স্নায়ুতন্ত্রে স্থায়ী ক্ষতি করে সাইকোসিস (পাগলামি) সৃষ্টি করে, হৃদযন্ত্রের কার্যকারিতা নষ্ট করে স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ায় এবং একই সিরিঞ্জ ব্যবহারে এইচআইভি/এইডস ও হেপাটাইটিস-সি ছড়িয়ে দিয়ে জনস্বাস্থ্য সংকট তৈরি করে। এ বহুমাত্রিক ধ্বংসযজ্ঞ এখন শুধু ব্যক্তিগত বা সামাজিক সমস্যা নয়, যা জাতীয় নিরাপত্তা, আইনশৃঙ্খলা এবং অর্থনীতির ওপর চরম চাপ সৃষ্টি করছে। মাদকাসক্তি এখন দেশের জাতীয় নিরাপত্তা সংকট। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর এবং বিভিন্ন গবেষণা সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে মাদকাসক্তের সংখ্যা প্রায় ৮৩ লাখ থেকে দেড় কোটি পর্যন্ত হতে পারে, যার মধ্যে প্রায় ৮০ শতাংশই হলো ১৮ থেকে ৩৫ বছর বয়সী তরুণ ও যুবক। উদ্বেগজনকভাবে, এ পরিসংখ্যানের মধ্যে প্রায় ২ লাখ ৮৫ হাজার নারী এবং ২ লাখ ৫৫ হাজার শিশু-কিশোরও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

মাদক নিয়ন্ত্রণে সরকারি পদক্ষেপগুলো আপাতদৃষ্টিতে কঠোর আইন ও বড় আকারের অভিযানের মাধ্যমে ‘বজ্র আঁটুনি’ দেখালেও, রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী ‘গডফাদার’ এবং তাদের অবৈধ অর্থায়নকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে না পারা এবং সীমান্তের মূল সরবরাহ চেইন অক্ষত থাকা এ ব্যবস্থার সবচেয়ে বড় ‘ফস্কা গেরো’ হয়ে আছে, যার ফলস্বরূপ মাদক সাম্রাজ্য নির্বিঘ্নে টিকে থাকছে।

এ প্রবন্ধে আমরা দেখব কীভাবে মিয়ানমার ও ভারতের সীমান্তপথ ব্যবহার করে এ বিষ আমাদের সমাজের রন্ধ্রে রন্ধ্রে প্রবেশ করছে এবং এর পেছনে কারা রয়েছে।

দেড় দশকে মাদক উদ্ধারের এক ‘অবিচ্ছিন্ন সরবরাহ’ চিত্র: মাদকের অন্যতম রুট কক্সবাজারের টেকনাফ অঞ্চল। সেখানে নিয়োজিত আছে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি) টেকনাফ ব্যাটালিয়ন। এ বিষয়ে কথা বলেছিলাম অধিনায়ক লে. কর্নেল আশিকুর রহমানের সঙ্গে। তিনি জানান, ২০২০ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত সর্বমোট ৩ কোটি ৫৮ লাখ ৯৫ হাজার ২১৭ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট এবং ১৪৯ দশমিক ৯৩৩৮ কেজি ক্রিস্টাল মেথ আইস জব্দ করা হয়েছে। যার সিজার মূল্য ১ হাজার ৮২৬ কোটি ৫২ লাখ ৫৫ হাজার ১০০ টাকা। এসব ঘটনায় মামলা হয়েছে ২ হাজার ৭৫৫টি এবং আসামি ১ হাজার ৯৭৫ জন।

এ চিত্র সমন্বিতভাবে আরও ভয়াবহ। সংশ্লিষ্ট সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, ২০০৯ থেকে ২০২৫ সালের অক্টোবর অদ্যাবধি পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী (র্যাব, বিজিবি, পুলিশ, কোস্টগার্ড, সেনাবাহিনী) এবং মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের (ডিএনসি) সমন্বিত অভিযানে বিপুল পরিমাণ মাদক উদ্ধার হয়েছে, যা মাদকের ভয়াবহ ও অবিচ্ছিন্ন সরবরাহকেই নির্দেশ করে। শুধু ২০০৯ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্তই ২২ কোটি ৩০ লাখের বেশি ইয়াবা পিস এবং ৬৫ লাখের বেশি ফেনসিডিল বোতল উদ্ধার হয়েছে। এরপর ২০২০ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত ইয়াবা উদ্ধারের সংখ্যা আরও বেড়েছে, যা আনুমানিক ৩০ কোটি পিসের কাছাকাছি পৌঁছেছে। এই বিপুল পরিমাণ উদ্ধারের পাশাপাশি এ সময়ের মধ্যে প্রায় ১০ লাখের বেশি আসামির বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। তবে এ বিপুলসংখ্যক উদ্ধারের পরও মাদকের প্রবাহ বন্ধ না হওয়া এবং ২০২০ সালের পর ক্রিস্টাল মেথের (আইস) মতো নতুন মাদকের অনুপ্রবেশ প্রমাণ করে যে, কঠোর প্রচেষ্টা সত্ত্বেও প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলো থেকে মাদকের সরবরাহ রুটগুলো এখনো প্রায় অক্ষত রয়েছে, যা মাদক চক্রের আর্থিক ক্ষমতা এবং আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্কের শক্তিকে ইঙ্গিত করে। (সূত্র: ডিএনসি, বিজিবি, র্যাবের সমন্বিত পরিসংখ্যান এবং জাতীয় দৈনিকের প্রতিবেদন)

ইয়াবা-আইসের ‘মৃত্যুমিছিল’ ও আরাকান-কক্সবাজার রুট: মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য (আরাকান) এখন বাংলাদেশের ইয়াবা ও ক্রিস্টাল মেথ আইসের আগ্রাসনের প্রধান উৎসস্থল হিসেবে পরিচিত। এটি আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ‘গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গল’-এর প্রভাব বলয়ের মধ্যে পড়ে।

ইয়াবা ও আইস তৈরির উৎস: মিয়ানমারের শান এবং রাখাইন রাজ্যের ভেতরে অবৈধ কারখানাগুলোতে বিপুল পরিমাণে ইয়াবা ও ক্রিস্টাল মেথ আইস তৈরি হয়। এ কারখানাগুলো প্রায়ই জাতিগত মিলিশিয়া বা শক্তিশালী অপরাধী চক্র দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়।

আরাকান করিডোর: তৈরি হওয়ার পর ইয়াবা ও আইস প্রথমে সড়ক বা জলপথে রাখাইন রাজ্যের উপকূলীয় অঞ্চলে আসে। সেখান থেকে নাফ নদী এবং বঙ্গোপসাগরের জলপথ ব্যবহার করে কক্সবাজার জেলার টেকনাফ ও উখিয়া সীমান্তে প্রবেশ করানো হয়।

রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ব্যবহার: সীমান্তে বসবাসকারী এবং শরণার্থী ক্যাম্পে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর একটি অংশকে এ চোরাচালান চক্রগুলো অর্থ ও লোভ দেখিয়ে ‘ক্যারিয়ার’ বা বাহক হিসেবে ব্যবহার করে। ইয়াবা ও আইসের চালান মাছ ধরার ট্রলার, স্পিডবোটের গোপন কামরা বা এমনকি হেঁটে দুর্গম সীমান্ত পেরিয়ে দেশে আসে।

ব্যাপকতা: মিয়ানমার থেকে আসা এ ইয়াবার চালানগুলো আকারে এতটাই বিশাল যে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা সত্ত্বেও এর সরবরাহ বন্ধ করা কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ ইয়াবার স্রোত দেশের যুবসমাজকে সবচেয়ে দ্রুত ও ভয়াবহভাবে ধ্বংস করছে।

ভারতের সীমান্তে ফেনসিডিল ও হেরোইনের স্থির প্রবাহ: মিয়ানমারের ইয়াবার পাশাপাশি ভারতের দীর্ঘ স্থল সীমান্ত বাংলাদেশের মাদক বাজারের জন্য আরেকটি প্রধান রুট। এ পথ ব্যবহার করে প্রধানত ফেনসিডিল, হেরোইন এবং কিছু ইনজেকটেবল মাদক আসে।

ফেনসিডিলের রুট: কোডেইনভিত্তিক কফ সিরাপ ফেনসিডিলের প্রধান প্রবাহ আসে ভারতের সীমান্তসংলগ্ন রাজ্যগুলো থেকে। যশোর, কুষ্টিয়া, রাজশাহী, দিনাজপুর, কুমিল্লা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার স্থল সীমান্তগুলো দিয়ে ফেনসিডিলের চালান অবৈধভাবে প্রবেশ করে। যদিও ভারতীয় কর্তৃপক্ষ সীমান্তে কঠোরতা বাড়িয়েছে, তবুও চোরাকারবারিরা কাঁটাতারের নিচ দিয়ে গর্ত করে বা কৃষিপণ্যের আড়ালে এ মাদক চোরাচালান চালিয়ে যাচ্ছে।

রাজনৈতিক আঁতাত ও সাম্রাজ্যের বিস্তার; আন্তঃআঞ্চলিক চক্রের ভূমিকা: মাদক চোরাচালান শুধু সাধারণ অপরাধী বা বাহকের কাজ নয়; এর পেছনে রয়েছে রাজনৈতিকভাবে অত্যন্ত প্রভাবশালী এবং সুসংগঠিত একটি চক্রের আর্থিক বিনিয়োগ ও পৃষ্ঠপোষকতা।

রাজনৈতিক আশ্রয়দাতা: কক্সবাজারের মতো সীমান্ত অঞ্চলে সাবেক জনপ্রতিনিধি বা প্রভাবশালী রাজনৈতিক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মাদক চোরাচালানিদের ‘ইয়াবা সম্রাট’ বা ‘গডফাদার’ হিসেবে কাজ করার গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। সরকারি তালিকা এবং গণমাধ্যমে এ ধরনের ব্যক্তিদের নামও প্রকাশিত হয়েছে। তাদের ক্ষমতা ও পারিবারিক প্রভাব ব্যবহার করে তারা মাদক নেটওয়ার্ককে আইনি সুরক্ষা দেয় এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কার্যক্রমকে দুর্বল করার চেষ্টা করে।

আন্তঃআঞ্চলিক সংযোগ: গবেষণায় দেখা গেছে যে, প্রভাবশালী মাদকচক্রগুলো তাদের কার্যক্রম বিস্তারের জন্য নতুন নতুন নেটওয়ার্ক তৈরি করছে। যেমন, ইয়াবা সম্রাট হিসেবে পরিচিত সাবেক এক এমপির পরিবারের একজন নিকটাত্মীয়, যিনি আবার বিএনপির একজন সাবেক প্রভাবশালী মন্ত্রীরও আত্মীয় পরিচয় দেন, তার মাধ্যমে এ ব্যবসা রাঙ্গামাটি-খাগড়াছড়ির মতো পাহাড়ি অঞ্চল পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছে। একজন খাগড়াছড়ির বাসিন্দা, যিনি একসময় ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন, তিনি সেই রাজনৈতিক আঁতাতের সহায়তায় ঢাকায় কাঠ ব্যবসার আড়ালে ইয়াবা ও ক্রিস্টাল মেথ আইস কারবারের বিশাল সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছেন। তিনি পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রভাবশালী মহলের সহযোগিতা নিয়ে সেখানেও মাদকের বিস্তার ঘটিয়েছেন এবং বর্তমানে ঢাকায় একাধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বাড়ি, গাড়ি ও বিপুল সম্পত্তির মালিক। এ ঘটনা প্রমাণ করে যে, মাদক চক্রগুলো আঞ্চলিক এবং রাজনৈতিক ক্ষমতা ব্যবহার করে সহজেই তাদের নেটওয়ার্ককে পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে শুরু করে রাজধানী ঢাকা পর্যন্ত বিস্তৃত করছে।

উত্তরণের পথ ও নিরাপত্তার জন্য করণীয়: মাদক কারবারের বহুমাত্রিক হুমকি ও প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলোর মাধ্যমে মাদকের অনুপ্রবেশ যখন দেশের যুবসমাজকে ধ্বংস করছে, তখন শুধু অভিযান চালিয়ে এ সমস্যার সমাধান হবে না। এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রয়োজন একটি সমন্বিত ও বহুস্তরীয় জাতীয় পরিকল্পনা, যা সাপ্লাই চেইন বন্ধ করা, চাহিদা হ্রাস করা এবং আসক্তদের পুনর্বাসনের ওপর গুরুত্ব দেবে।

সরবরাহ চেইন ছিন্ন করা ও আর্থিক মেরুদণ্ড ভেঙে দেওয়া: প্রথমত এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো—মাদকের প্রধান সরবরাহ পথ সম্পূর্ণ ছিন্ন করা। এর জন্য মিয়ানমার ও ভারতের সীমান্তে নজরদারি ও প্রযুক্তিগত নিয়ন্ত্রণ আরও কঠোর করতে হবে। তবে শুধু বাহক বা খুচরা বিক্রেতা ধরে সমস্যার সমাধান হবে না। মূল ফোকাস দিতে হবে ‘ইয়াবা-আইস গডফাদার’ এবং তাদের অর্থনৈতিক সাম্রাজ্যের ওপর। রাজনৈতিক প্রভাব ব্যবহার করে যারা মাদকের ট্রানজিট রুট নিয়ন্ত্রণ করেন, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর, দ্রুত ও দৃশ্যমান ব্যবস্থা নিতে হবে। সাবেক জনপ্রতিনিধি, তার পরিবারের সদস্যরা এবং তাদের রাজনৈতিক আঁতাতের মাধ্যমে যে বিশাল সম্পত্তি (যেমন—খাগড়াছড়ির বাসিন্দা একজন মোটরসাইকেল চালক, পরবর্তীকালে কাঠ ব্যবসার আড়ালে ঢাকায় গড়ে তোলা বিপুল সম্পত্তি) তৈরি হয়েছে, সেগুলোর অর্থনৈতিক উৎস অনুসন্ধান করে বাজেয়াপ্ত করতে হবে। এ কালো টাকা জব্দ করা গেলে মাদক সাম্রাজ্যের মূল মেরুদণ্ড ভেঙে যাবে। এ পদক্ষেপগুলো বাস্তবায়নের জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সর্বোচ্চ রাজনৈতিক সদিচ্ছা এবং হস্তক্ষেপমুক্ত স্বাধীনতা দেওয়া অপরিহার্য।

চাহিদা হ্রাস ও পুনর্বাসন: দ্বিতীয়ত, মাদকের চাহিদা হ্রাস করতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, কর্মস্থল এবং পাড়ায় পাড়ায় ব্যাপক জনসচেতনতামূলক কর্মসূচি শুরু করতে হবে। পাঠ্যপুস্তকে মাদকের ভয়াবহ পরিণতি অন্তর্ভুক্ত করা এবং যুবকদের খেলাধুলা ও সৃজনশীল কাজে উৎসাহিত করা জরুরি। তৃতীয়ত, আসক্তদের জন্য সরকারি ব্যবস্থাপনায় পর্যাপ্ত চিকিৎসা ও পুনর্বাসন কেন্দ্র তৈরি করতে হবে। মাদকাসক্তিকে অপরাধের পরিবর্তে একটি মানসিক রোগ হিসেবে দেখে, তাদের সমাজে ফিরিয়ে আনার কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে।

রাজনৈতিক সদিচ্ছাই শেষ ভরসা: মিয়ানমারের রাখাইন রুট হয়ে আসা ইয়াবা ও ক্রিস্টাল মেথ আইসের আগ্রাসন এবং ভারতের সীমান্ত দিয়ে ফেনসিডিল ও হেরোইনের প্রবাহ—এ দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্রের মাদকই আজ বাংলাদেশের যুবসমাজকে বিপর্যয়ের দ্বারপ্রান্তে এনে দাঁড় করিয়েছে। সবচেয়ে ভয়াবহ হলো, এ সাম্রাজ্য পরিচালনার জন্য স্থানীয় রাজনীতি এবং প্রভাবশালী মহলের যোগসাজশ, যা মাদক চক্রকে অজেয় করে তুলেছে। যেখানে কক্সবাজারের একজন সাবেক এমপির পরিবার এবং তাদের আত্মীয়তার সূত্র ধরে খাগড়াছড়ির মতো অঞ্চলে মাদক কারবারিরা কাঠ ব্যবসার আড়ালে সাম্রাজ্য বিস্তার করে, সেখানে এটি স্পষ্ট যে, শুধু অভিযান দিয়ে এ যুদ্ধ জেতা সম্ভব নয়। ক্রিস্টাল মেথ আইস ও ইয়াবার মতো বিষের আগমন বন্ধ করতে হলে, সরকারকে রাজনৈতিক ঝুঁকি নিতে হবে এবং মাদকের অর্থায়নকারী গডফাদারদের বিরুদ্ধে শূন্য সহনশীলতা নীতি কঠোরভাবে প্রয়োগ করতে হবে। দেশের যুবসমাজকে রক্ষা করা এবং জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য এটি এখন আর কোনো ঐচ্ছিক কাজ নয়, বরং অবশ্যকরণীয় কর্তব্য। দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বাঁচাতে হলে, মাদকের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার রাজনৈতিক সদিচ্ছাই আজ শেষ ভরসা।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

২০২৬ বিশ্বকাপের ড্র অনুষ্ঠিত: দেখে নিন কোন গ্রুপে কোন দল

২০২৬ বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা ও ব্রাজিলের প্রতিপক্ষ যারা

রাতে আবার হাসপাতালে গেলেন জুবাইদা রহমান

যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার পরিধি বাড়ছে, তালিকায় ৩০টির বেশি দেশ

খালেদা জিয়ার এন্ডোসকপি সম্পন্ন, বন্ধ হয়েছে রক্তক্ষরণ

‘বাঁধের মাটি বড় বড় খণ্ড হয়ে ঝুপঝাপ শব্দে ভেঙে পড়ে’

রাজমিস্ত্রির বাড়ি থেকে অস্ত্র-গুলি উদ্ধার

দেড় হাজার দৌড়বিদের অংশগ্রহণে হাফ ম্যারাথন

খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় ফ্রি যাত্রীসেবা

বিদেশি কোম্পানিকে ইজারা, প্রতিবাদে বিক্ষোভ 

১০

যুবদল নেতা সুমনের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার

১১

দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, একজন গুলিবিদ্ধসহ আহত ১০

১২

গণতন্ত্র মঞ্চের নতুন সমন্বয়ক সাইফুল হক

১৩

পুরোনো রাজনীতি পরিহার করে নতুন রাজনীতি করতে চাই : মঞ্জু

১৪

খালেদা জিয়ার জনপ্রিয়তা দেখার জন্য শেখ হাসিনা বেঁচে আছেন : স্বপন

১৫

ভুয়া ফটোকার্ড ও অপপ্রচারের অভিযোগে জিডি করলেন ছাত্রদলের আবিদ-মায়েদ

১৬

তারেক রহমান বাংলাদেশের ভোটার কি না এ প্রশ্ন অবান্তর : অ্যাটর্নি জেনারেল

১৭

দেশের ক্রান্তিলগ্নে খালেদা জিয়াকে খুবই প্রয়োজন : লুৎফুজ্জামান বাবর

১৮

খালেদা জিয়া কোটি মানুষের হৃদয়ের স্পন্দন : মান্নান

১৯

ধর্মকে রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করছে কিছু দল : আমিনুল হক

২০
X