সত্যেন সেন খ্যাতিমান সাহিত্যিক, সাংবাদিক ও রাজনীতিক। ১৯০৭ সালের ২৮ মে মুন্সীগঞ্জ জেলার টঙ্গিবাড়ী উপজেলার সোনারঙ গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতৃব্য ক্ষিতিমোহন সেন ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য। সত্যেন সেন সোনারঙ হাই স্কুল থেকে এন্ট্রান্স পাস করে কলকাতা যান এবং সেখানকার একটি কলেজ থেকে এফএ ও বিএ পাস করে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে এমএ (ইতিহাস) শ্রেণিতে ভর্তি হন। যুগান্তর দলের সদস্য হিসেবে সন্ত্রাসবাদী রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার কারণে তিনি ১৯৩১ সালে গ্রেপ্তার হয়ে কারাবরণ করেন এবং জেলে থেকেই বাংলা সাহিত্যে এমএ পাস করেন। জেল থেকে মুক্তিলাভের (১৯৩৮) পর বিক্রমপুরে ফিরে কৃষক আন্দোলনে যোগ দেন এবং আমৃত্যু বামপন্থি আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। একপর্যায়ে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির নেতা নির্বাচিত হন। সত্যেন সেন ১৯৪৯, ১৯৫৪, ১৯৫৮ ও ১৯৬৫ সালে রাজনৈতিক কারণে গ্রেপ্তার হয়ে বিভিন্ন মেয়াদে কারাভোগ করেন। ১৯৫৪ সালে দৈনিক সংবাদে সত্যেন সেনের উল্লেখযোগ্য কয়েকটি গ্রন্থ ও উপন্যাস ভোরের বিহঙ্গী, অভিশপ্ত নগরী, পদচিহ্ন, পাপের সন্তান, কুমারজীব, বিদ্রোহী কৈবর্ত, পুরুষমেধ, আলবেরুনী, মা, অপরাজেয়, রুদ্ধদ্বার মুক্তপ্রাণ, ইতিহাস মহাবিদ্রোহের কাহিনী, বাংলাদেশের কৃষকের সংগ্রাম, মানবসভ্যতার ঊষালগ্নে, ব্রিটিশবিরোধী স্বাধীনতা সংগ্রামে মুসলমানদের ভূমিকা ইত্যাদি। তার রচনায় ইতিহাস-ঐতিহ্য, দেশের মাটি ও মানুষের শ্রেণি-সংগ্রাম প্রাধান্য পেয়েছে। তিনি ১৯৮১ সালের ৫ ডিসেম্বর শান্তিনিকেতনে মারা যান।