শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫, ২ কার্তিক ১৪৩২
শাহনেওয়াজ খান সুমন
প্রকাশ : ২৭ জানুয়ারি ২০২৫, ০৩:০৭ এএম
আপডেট : ২৭ জানুয়ারি ২০২৫, ০৭:৫৮ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

কাপ্তানবাজারে চাঁদাবাজির হাতবদল

কাপ্তানবাজারে চাঁদাবাজির হাতবদল

রাজধানীর গুলিস্তান-যাত্রাবাড়ী ফ্লাইওভার ঘেঁষে পুরান ঢাকার ওয়ারীতে ঐতিহ্যবাহী কাপ্তানবাজার। এখানেই প্রতি রাতে বসে ঢাকা শহরের মুরগির প্রধান পাইকারি বাজার। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ট্রাকে করে নানা জাতের মুরগি নিয়ে আসেন খামারি ও পাইকাররা। সুলভ মূল্যে মুরগি সংগ্রহ করতে বাজারে ভিড় জমান ঢাকার প্রায় সব এলাকার খুচরা ব্যবসায়ীরা। জমজমাট বেচাকেনা চলে রাত ১১টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত। প্রতিদিন এখানে লেনদেন হয় ৭ থেকে ১০ কোটি টাকা। আওয়ামী লীগ শাসনামলে এই মুরগির বাজারের একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রক ছিলেন স্থানীয় সাবেক কাউন্সিলর আহমেদ ইমতিয়াজ মন্নাফী গৌরব। সিটি করপোরেশনকে ‘ম্যানেজ’ করে ৩০ থেকে ৪০ জনের বিশাল বাহিনী দিয়ে প্রতি রাতে ৮ থেকে ১০ লাখ টাকা চাঁদা তোলা হতো।

কাউন্সিলরের ‘রাম রাজত্বে’ সহায়তা করতেন সরকারি কর্মকর্তা, এমনকি পুলিশ সদস্যরাও। পাঁচ মাস আগে গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হলেও চাঁদাবাজি থামেনি। ব্যবসায়ীরা বলছেন, আন্দোলনের পর শুধু চাঁদাবাজ বদলেছে, চাঁদাবাজি বন্ধ হয়নি। বেশকিছু দোকান দখল হয়েছে। প্রকাশ্যে অস্ত্র দিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে ত্রাস সৃষ্টি করা হয়েছে। চাঁদাবাজির প্রভাবে বাড়ছে মুরগির দাম। চাঁদাবাজি বন্ধে কাপ্তানবাজারের ইজারা ব্যবস্থা চাইছেন পাইকারি ব্যবসায়ীরা।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) ‘খাস আদায় উপকমিটির’ মাধ্যমে মুরগির সবচেয়ে বড় এই বাজার তদারকি করে। বাজারটি ইজারা দিতে গত মাসে তিনবার বিজ্ঞপ্তি দিলেও সিন্ডিকেটের কারণে ইজারাদার খুঁজে পায়নি ডিএসসিসি। ডিএসসিসির সম্পত্তি বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, কাপ্তানবাজারে অনেকদিন ধরেই বিশৃঙ্খলা চলছে। সেগুলো দ্রুতই ঠিক হয়ে যাবে। রাজনৈতিক প্রভাব ছাড়া রাতের এই মুরগির বাজার নিয়ন্ত্রণ সম্ভব না হওয়ায় ইজারাদার পেতে জটিলতা তৈরি হয়েছে। ডিএসসিসি সূত্রে জানা গেছে, হোমিওপ্যাথিক হাসপাতালের দক্ষিণ পাশের ব্লকে ও পশ্চিম ব্লকে মোট ৬ হাজার ৪২৫ বর্গফুট জায়গায় রাত্রিকালীন পাইকারি মুরগির বাজার এবং কাপ্তানবাজার কমপ্লেক্স ৩-এ মুরগি পট্টির অবশিষ্টাংশে ১০ হাজার ২০০ বর্গফুট মুরগির বাজারের ‘খাস’ আদায়ের জন্য ব্যবসায়ী প্রতিনিধি হিসেবে নিয়াজ মোর্শেদ জুম্মন ও নূর ইসলামকে দায়িত্ব দিয়েছে ডিএসসিসি।

গত বছরের ৪ অক্টোবর ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে দোকান ভাড়ার টাকা সংগ্রহের জন্য চার সদস্যের খাস আদায়ের উপকমিটি করা হয়। ২০২৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর থেকে খাস আদায় করা হচ্ছে। এর আগে ইজারার মাধ্যমেই চলত এই বাজার। ইজারা সংক্রান্ত জটিলতার প্রেক্ষাপটে খাস আদায় করছে সিটি করপোরেশন। প্রতিদিন সিটি করপোরেশনে জমা দেওয়া হয় ১ লাখ ৮ হাজার টাকা। খাস আদায় উপকমিটির ব্যবসায়ী প্রতিনিধি নিয়াজ মোর্শেদ জুম্মন ৩৪ নম্বর ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি। আর নূর ইসলাম ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশারের অনুসারী। চার সদস্যের উপকমিটিতে আরও রয়েছেন ডিএসসিসির সম্পত্তি কর্মকর্তা ও একজন সার্ভেয়ার।

গত ৩ ডিসেম্বর বার্ষিক ৩ কোটি ৬৭ লাখ টাকা ইজারা মূল্যে বাজারটি ইজারা দিতে বিজ্ঞপ্তি দেয় সিটি করপোরেশন। ইজারা নিতে খাস আদায়কারী দুই ব্যবসায়ী প্রতিনিধিসহ মোট পাঁচজন দরপত্র কিনলেও কেউ জমা দেননি। এরপর গত মাসেই আরও দুই দফা ইজারা বিজ্ঞপ্তি দিয়েও ঠিকাদার খুঁজে পায়নি সিটি করপোরেশন। দরপত্র নিতে আগ্রহীরা বলছেন, একসঙ্গে ৩ কোটি ৬৭ লাখ টাকা জোগাড় করতে না পারায় দরপত্র জমা দেননি।

সরেজমিন বাজার ঘুরে ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কাপ্তানবাজার টিনশেড মার্কেটে রয়েছে অর্ধশতাধিক স্থায়ী দোকান। এগুলো সারাদিনই খোলা থাকে। এ ছাড়া রাতে কাপ্তানবাজারের রাস্তায় বসে আরও ১৯০ থেকে ২০০ দোকান, যা চলে ভোর পর্যন্ত। বাজারে দেশি, সোনালি, ব্রয়লার, লাল লেয়ার, প্যারেন্টসসহ বিভিন্ন জাতের মুরগি বিক্রি হয়। শীতকালে হাঁসও বিক্রি হয় এ বাজারে। প্রতিদিনের দোকান ভাড়া বাবদ রসিদ ছাড়াই নেওয়া হয় ২ হাজার ৩০০ টাকা। এর মধ্যে ২ হাজার টাকা দোকান ভাড়া এবং লাইনম্যান, ঝাড়ু ও বাতির নামে ১০০ করে ৩০০ টাকা তোলা হয়। একদিনে ওঠানো হয় ৪ লাখ ৩৭ হাজার টাকা। এই হিসাব করা হয় এক ট্রাক মুরগির ওপর। এক ট্রাকের বেশি বিক্রি করলে গুনতে হয় অতিরিক্ত ১ হাজার টাকা। এ ছাড়া সিটি টোলের নামে মুরগির ট্রাক থেকে ১০০ ও ভ্যান থেকে ৬০ টাকা নেওয়া হয়। সবমিলে প্রতি রাতে মুরগি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে লাইনম্যানরা ৬ লাখ টাকা তোলেন। মাসিক হিসাবে যা ১ কোটি ৮০ লাখ টাকার বেশি। তবে সিটি করপোরেশন প্রতি মাসে পাচ্ছে মাত্র ৩২ লাখ টাকা।

বাজারে থেকে খাস আদায়কারী ব্যবসায়ীদের লোক হিসেবে টাকা তোলেন আক্তার, এমদাদ, রাসেল, সুমন ও মনির নামের পাঁচ ব্যক্তি। বাজারের ব্যবসায়ীদের ওপর হামলা ও মারধরের অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। প্রায় ৪০ জন ব্যবসায়ীর দোকানের জায়গা দখল হয়ে গেছে। মোটা অঙ্কের টাকা অগ্রিম নিয়ে নতুন ব্যবসায়ীদের কাছে সেই দোকান ভাড়া দেওয়া হচ্ছে। তারা ছাড়াও রাজনৈতিক প্রভাব দেখিয়ে অনেকে নানা কৌশলে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নির্বিচারে চাঁদা আদায় করছে। অস্ত্র দিয়ে ভয়ভীতি দেখানোর ঘটনা ঘটছে অহরহ। গত সোমবার মুরগির বাজারে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে মহড়া দেওয়ার সময় মারজান আহম্মেদ রনি ওরফে ভাগ্নে রনি ও মাহিন খান নামে দুজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাদের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল, একটি ম্যাগাজিন ও চারটি গুলি উদ্ধার করা হয়।

দোকান ভাড়া দেওয়ার কথা বলে এরশাদ নামে এক ব্যক্তির কাছ থেকে ৫০ হাজার টানা নেন মনির। কিন্তু তাকে ব্যবসা করার জন্য জায়গা বুঝিয়ে দেওয়া হয়নি। টাকা নেওয়ার কথা স্বীকার করে মনির বলেন, ‘এরশাদকে জায়গা দেওয়া হয়েছে, কিন্তু তিনি ব্যবসা করতে আসেন না।’

কাপ্তানবাজারে একযুগ ধরে মুরগির ব্যবসা করেন শহিদুল ইসলাম। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর তার দোকান দখল হয়েছে। এরপর থেকে আরেকজন ব্যবসায়ীর দোকানে কর্মচারী হিসেবে কাজ করছিলেন। গত ২৪ ডিসেম্বর ভোরে ওই দোকানে শহিদুলের ওপর হামলা হয়েছে। খাস আদায়কারীর প্রতিনিধি আক্তারের নেতৃত্বে তার ওপর বেধড়ক মারধরের ভিডিও এসেছে কালবেলার হাতে। শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘দোকান হারাইছি। অন্যের দোকানে কামলা দিতে গিয়েছি, তাতেও বাধা দিয়েছে। আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত—এই অজুহাতে হামলা করলেও আমি কোনো রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত না। মূলত মুরগির বাজারে ব্যবসায়ীদের নতুন সমিতি করতে চায় হামলাকারীরা। আমি বোরহানের লোক, এই কথা বলে আমাকে বেধড়ক পিটিয়েছে।’

এদিকে সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজি থেকে পরিত্রাণের জন্য প্রধান উপদেষ্টা বরাবর চিঠি দিয়েছেন কাপ্তানবাজার পোলট্রি মুরগি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির নেতারা। সমিতির সভাপতি কাজী বোরহান বলেন, স্বৈরাচার সরকারের আমলে স্থানীয় কাউন্সিলর গৌরব এবং আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী-চাঁদাবাজদের দ্বারা নির্যাতনের শিকার হয়েছি। বহু ব্যবসায়ী আওয়ামী লীগ নেতাদের রোষানলে পড়ে নিঃস্ব হয়েছেন। তারা সমিতির নেতাদের নির্যাতন করে বাজার থেকে তাড়িয়ে দিয়েছিল। অনেক ব্যবসায়ীকে হত্যার হুমকি দিয়ে বাজারছাড়া করেছে।

আইনসিদ্ধভাবে বাজারটি পরিচালনার জন্য ২০২৩ সালের ৪ অক্টোবর ঢাকা সিটি করপোরেশনের তৎকালীন মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসের বরাবর আবদেন করেছিলেন জানিয়ে কাজী বোরহান বলেন; কিন্তু আশানুরূপ কোনো ফল পাইনি। নানা কারসাজিতে বাজারে চাঁদাবাজি বহাল ছিল। ৫ আগস্টের পটপরিবর্তনের পর বাজারে গেলেও হুমকি দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে আমার ব্যবসা বন্ধ। চাঁদাবাজি ও দখলদারি থেকে পরিত্রাণ চাই আমরা। এ জন্য প্রধান উপদেষ্টা বরাবর চিঠি দিয়েছি।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারের ইজারা বাজারের ব্যবসায়ীদের হাতে দিলেই বাজার সুস্থ থাকবে, চাঁদাবাজি বন্ধ হবে। ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন, মাসের শুরুতেই দোকান ভাড়ার পুরো টাকা হিসাব করে জমা দিয়ে দিতে হয়। কোনো কারণে মুরগি অবিক্রীত থাকলে বা মুরগি আনতে না পারলেও দিন হিসাবেই দোকান ভাড়ার টাকা কেটে রাখা হয়। অগ্রিম না দিলে দোকান খোলা যায় না।

এক ব্যবসায়ী বলেন, আমি কয়দিন বিক্রি করতে পারব বা পারব না—এটা হিসাব না, আমাদের মাসে যতদিন, ততদিনের হিসাবে টাকা দিয়ে দিতে হয়। অগ্রিম না দিলে দোকান খোলার অনুমতি নেই; কিন্তু সব ব্যবসায়ী প্রত্যেক দিন মুরগি পায় না। মাসে আমরা গড়ে ২০-২২ দিন ব্যবসা করতে পারি; কিন্তু টাকা দিতে হচ্ছে মাস হিসাব করে, ৩০ দিন হিসাব করে। এই টাকাও কোনো রশিদের মাধ্যমে নেওয়া হয় না, ডায়েরির কাগজে টুকে রাখা হয়। ফলে যেদিন আমি মুরগি বিক্রি করি, সেদিন আমাকে বেশি দামেই বিক্রি করতে হয়, লোকসান কমাতে।

আরেক ব্যবসায়ী বলেন, আমাদের ব্যবসায়ীদের হাতে তো ইজারা দিতে চায় না। কারণ আমরা ব্যবসায়ীদের পক্ষে কাজ করব, চাঁদাবাজি হতে দেবো না। নিয়ম মাফিক কাজ হবে। সম্প্রতি সেনাবাহিনী অভিযান চালালেও চাঁদাবাজরা আবার ফিরে এসেছে।

চাঁদাবাজির প্রভাব পরোক্ষভাবে ভোক্তার ওপর পড়ছে মন্তব্য করে এক পাইকারি ব্যবসায়ী বলেন, এই চাঁদাবাজির টাকা তো আমাদের অতিরিক্ত দামে মুরগি বিক্রি করেই ভারসাম্য ঠিক রাখতে হয়। এই টাকা আদায় না হলে আমরা আরও কম দামে বিক্রি করতে পারি। তাহলে ভোক্তাও কম দামে মুরগি পেত। খাস আদায়ের নামে সিটি করপোরেশন কিছু লোককে চাঁদাবাজির লাইসেন্স দিয়েছে।

এসব বিষয়ে খাস আদায় কমিটির সদস্য নূর ইসলাম বলেন, ‘আমি এখন খাস আদায় করি না। সবকিছু নিয়াজ মোর্শেদ জুম্মন করেন। তিনিই সিটি করপোরেশনে টাকা দেন। আমার হাতে কিছু নেই। ইজারা দিতে দরপত্র কিনেছিলাম।’

খাস আদায় কমিটির অপর সদস্য নিয়াজ মোর্শেদ জুম্মন বলেন, ‘বাজারে অবৈধ দোকান উচ্ছেদের দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের। অনেক অবৈধ দোকান বসে। বাজারটি রাতে বসে। আমরা নিজেরা থাকি না রাতে। লোক দিয়ে টাকা আদায় করা হয়। আমরা ১০৯টি দোকান থেকে মাসে ১ হাজার ৮০০ টাকা করে আদায় করি। আওয়ামী লীগ আমলে বাজারে আগে যে সিন্ডিকেট ছিল, তাদের অনেকেই এখনো সক্রিয়।’ চাঁদাবাজির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বাজারে কিছু চাঁদাবাজ রয়েছে। এখনো তারা মুরগির বাজারে আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টা করছে।’

এদিকে মুরগির বাজার স্থানীয় বাসিন্দা ও পূর্ব-দক্ষিণ অঞ্চল থেকে ঢাকায় আসা যাত্রীদের ভোগান্তির আরেক নাম। রাত ১১টার পর মুরগিবোঝাই শত শত ট্রাক-পিকআপে কাপ্তানবাজার, জয়কালী মন্দির, নবাবপুর ও গুলিস্তান ফ্লাইওভারে যানজট লেগে যায়। স্থানীয় লোকজন রাতে নিরাপদে চলাচল করতে পারে না। জরুরি চিকিৎসার জন্য রোগী নিয়ে আসা অ্যাম্বুলেন্সগুলো আটকে থাকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা।

কাপ্তান বাজারে যানজট নিরসন ও ফুটপাতসহ মূল সড়ক দখল করে বসানো অবৈধ দোকান উচ্ছেদে গত ১৭ ডিসেম্বর সেনাবাহিনীর নেতৃত্বে অভিযান চালানো হয়। অভিযানের শুরুতেই অনেক মুরগি ব্যবসায়ী দৌড়ে পালিয়ে যান। পরে উচ্ছেদ করা হয় সড়কের পাশের ব্যবসায়ীদের। এ সময় জব্দ করা হয় বেশ কয়েকটি দোকানের মুরগির খাঁচা। জরিমানা করা হয় কয়েক ব্যবসায়ীকে।

কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন কালবেলাকে বলেন, চাঁদাবাজির হাতবদল হচ্ছে। সরকার পতনের পর কয়েক সপ্তাহ চাঁদাবাজি বন্ধ ছিল, তারপর আবার নতুনরা চলে এসেছে। এই চাঁদাবাজির কারণেই দাম বৃদ্ধি পায়। কাপ্তানবাজারের বিষয়টি যেহেতু সিটি করপোরেশনের নিয়ন্ত্রণাধীন, তাই চাঁদাবাজির দায় সংস্থাটির ওপরও বর্তায়। চাঁদাবাজি বন্ধে সিটি করপোরেশনের কার্যকর উদ্যোগ থাকা দরকার।’

এ বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা কাইজার মোহাম্মদ ফারাবী কালবেলাকে বলেন, ‘বাজারটি ইজারা দিয়ে স্বচ্ছতার মধ্যে আনতে সর্বাত্মক চেষ্টা করা হচ্ছে। সড়ক দখল করে বাজার বসানোর কারণে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে জরিমানা করা হয়েছে। এ নিয়ে মামলাও হয়েছে। সিটি করপোরেশনের সম্পত্তি বিভাগ নিজস্ব জনবল দিয়ে খাস আদায় করে না। সেই জনবল আমাদের নেই। বাজারটির কার্যক্রম চলে রাতে। তাই স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা নিয়ে একটি উপ-কমিটির মাধ্যমে খাস আদায় করা হয়।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাজার ঘিরে রাজনৈতিক পেশিশক্তি কাজ করে। বারবার ইজারা বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হলেও কিছু লোক নিজেদের মতো বাজারটি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে। বাজারে কিছু অরাজকতা, বিশৃঙ্খলা আছে। সেনাবাহিনীর সদস্যরাও বাজারে অভিযান চালিয়েছেন। আমরা আশা করছি দ্রুত ইজারাদার খুঁজে পাবো।’

ওয়ারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফয়সাল আহমেদ বলেন, কাপ্তানবাজারে চাঁদাবাজি বন্ধে আমাদের নিয়মিত অভিযান চলছে। বাজারে যারা চাঁদাবাজি করছিল, ইতোমধ্যে তাদের গ্রেপ্তার করেছি। মামলা করা হয়েছে। কোনো অভিযোগ এলে আমরা তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিচ্ছি।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সিনিয়রদের পথে হাঁটতে ব্যর্থ প্রীতিরা

নিজেদের স্বার্থে হিন্দুদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান

পাবনায় কালবেলার ৩য় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন 

চরফ্যাশনে কালবেলার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত

তারেক রহমানের নেতৃত্বে আগামী দিনের বাংলাদেশ চলবে : আবু জাফর আহমদে

গাইবান্ধায় কালবেলার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত

ফেনীতে বর্ণাঢ্য আয়োজনে কালবেলার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত

রাঙামাটিতে প্রতিবন্ধী শিশুদের নিয়ে কালবেলার ৩য় বার্ষিকী উদযাপন

গোপালগঞ্জে কালবেলার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত

সব ব্যাঙ এক পাল্লায় ওঠানো যাবে না : মির্জা আব্বাস

১০

সাংবাদিক লাঞ্ছনায় প্রতিবাদ সমাবেশ

১১

জুলাই সনদে সই না করার ব্যাখ্যা দিলেন সারোয়ার তুষার

১২

নোয়াখালীতে বর্ণিল আয়োজনে কালবেলার প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত

১৩

‘জুলাই আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল কালবেলা’

১৪

নির্বাচন কীভাবে হবে, তা নিয়ে রাজনৈতিক নেতাদের প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান

১৫

চাঁপাইনবাবগঞ্জে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ঘরে আগুন ধরিয়ে দিল দুর্বৃত্তরা

১৬

বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের সেমিনার অনুষ্ঠিত

১৭

মৌলভীবাজারে বর্ণাঢ্য আয়োজনে কালবেলার ৩য় প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন

১৮

নারী ক্রিকেটে নতুন ইতিহাস গড়লেন ভারতীয় ব্যাটার

১৯

নির্বাচন বানচালের যে কোনো ষড়যন্ত্র সফল করতে দেওয়া হবে না : সেলিমুজ্জামান

২০
X