

বিশ্বে প্রতি চারজনে একজন স্ট্রোকে আক্রান্ত হচ্ছে। বিশ্বব্যাপী প্রতি বছর প্রায় ১ কোটি ২০ লাখেরও বেশি মানুষ প্রথমবারের মতো স্ট্রোকে আক্রান্ত হন। মোট স্ট্রোকের ৮৯ শতাংশই ঘটে বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে। এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর প্রতি মিনিটে ১.৯ মিলিয়ন মস্তিষ্কের স্নায়ুকোষ (নিউরন) মারা যায়। বর্তমানে বিশ্বে ১০ কোটিরও বেশি মানুষ স্ট্রোকের দীর্ঘমেয়াদি প্রভাবে ভুগছেন। তাই স্ট্রোকের রোগীদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে সময় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সাড়ে চার ঘণ্টার মধ্যে চিকিৎসকের কাছে নেওয়া গেলে রোগীকে সুস্থ করে তোলা সম্ভব। এ ছাড়া স্বাস্থ্য সচেতন থাকলে ৯০ শতাংশ স্ট্রোক প্রতিরোধ করা সম্ভব বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।
বিশ্ব স্ট্রোক দিবস উপলক্ষে গতকাল রোববার ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের পরিচালক অফিসের কনফারেন্স হলে এক মতবিনিময় সভায় চিকিৎসকরা এসব কথা বলেন।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপক হিসেবে স্ট্রোকবিষয়ক তথ্য উপস্থাপন করেন ঢামেক হাসপাতালের এন্ডোভাসকুলার ও স্ট্রোক সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. শাহেদুর রহমান শিকদার। তিনি বলেন, স্ট্রোক দুই ধরনের, এর মধ্যে ইশকেমিক অর্থাৎ রক্তনালি বন্ধ হয়ে ৮৫ ভাগ স্ট্রোক হয়, হিমোরেজিক ১৫ ভাগ। তিনি জানান, উন্নয়নশীল দেশে ৮৯ শতাংশ স্ট্রোক ঘটে। প্রতি মিনিটে প্রায় ১.৯ মিলিয়ন মস্তিষ্কের স্নায়ুকোষ (নিউরন) মারা যায়। তাই স্ট্রোকের রোগীদের জন্য সময় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সাড়ে চার ঘণ্টার মধ্যে চিকিৎসকের কাছে নেওয়া গেলে রোগীকে পুরোপুরি এবং ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আনা গেলে জীবন সুরক্ষা পায়। থেরাপির মাধ্যমে এ রোগীদের স্বাভাবিক জীবনে ফেরানো সম্ভব।
ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. মো. আসাদুজ্জামান বলেন, এখন রোগীরা বুঝতে পারে না তাদের স্ট্রোক হয়েছে কি না, এ সচেতনতা মানুষের মধ্যে তৈরি করাটা জরুরি হয়ে পড়েছে। স্ট্রোকের ক্ষেত্রে প্রতিরোধ অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
ঢামেকের নিউরোসার্জারি বিভাগের ডা. সুজন শরীফের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ঢাকা মেডিকেলের নিউরোসার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. শফিকুল ইসলাম, নিউরো সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. ফজলে এলাহী মিলাদ, ঢামেক হাসপাতালের ফিজিক্যাল মেডিসিন বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মনিরুজ্জামান, নিউরো সার্জারি বিভাগে ডা. আ ফ ম মমতাজুল হক, ডা. আশিক এহসান, ডা. মোতাসিম বিল্লাহ, ডা. ইসরাত জাহান রিফাত ও ডা. মশিউর রহমান মজুমদার প্রমুখ।
সেমিনারের আগে একটি সচেতনতামূলক র্যালির আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে বক্তারা স্ট্রোক চিকিৎসায় হটলাইন চালু ও স্ট্রোক অ্যাম্বুলেন্স সেবা প্রবর্তনের প্রস্তাব দেন। পাশাপাশি সচেতনতা বৃদ্ধিতে সরকার ও সংশ্লিষ্ট অংশীজনের কার্যকর ভূমিকা রাখার আহ্বান জানান।
মন্তব্য করুন