নেছারাবাদ (পিরোজপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০২ অক্টোবর ২০২৪, ০২:২৮ এএম
আপডেট : ০২ অক্টোবর ২০২৪, ০৭:৩২ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

ভিটে দখল করে বৃদ্ধ দম্পতিকে বের করে দেওয়া হলো

পিরোজপুরের নেছারাবাদ
ভিটে দখল করে বৃদ্ধ দম্পতিকে বের করে দেওয়া হলো

পিরোজপুরের নেছারাবাদে বৃদ্ধ দম্পতিকে এক কাপড়ে ঘর থেকে বের করে দিয়ে ভিটেমাটি দখল করার অভিযোগ উঠেছে সাবেক ইউপি সদস্য মো. সোবাহান মিয়ার বিরুদ্ধে। শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) সকালে উপজেলার বলদিয়া ইউনিয়নের বিন্না গ্রামের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ওই দম্পতিকে বের করে দেওয়া হয়। ভুক্তভোগী বৃদ্ধ দম্পতি বিচারের জন্য দ্বারে দ্বারে গিয়েও বিচার পাচ্ছেন না। অভিযুক্ত সোবাহান মিয়ার দাবি ওই জমিটি তিনি কিনে নিয়েছেন।

স্থানীয়রা জানান, দুই মেয়ের বিয়ের পর সুখরঞ্জন হালদার (৭০), স্ত্রী সবিতা মিস্ত্রী (৬৫) থাকতেন ওই ভিটায়। নানা রোগ-শোকে বেশি সময় অসুস্থ থাকতেন সুখরঞ্জন। মেয়ের জামাইদের সহায়তায় টেনেটুনে চলে তাদের পরিবার। ঘটনার দিন শতাধিক লোক এসে আকস্মিকভাবে তাদের ঘর ভেঙে ফেলে আসবাব ও কাগজপত্র নিয়ে যায় তারা। ঘটনার পর থেকে ভুক্তভোগী বৃদ্ধ দম্পতি অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন।

সবিতা রানী হালদার জানান, টাকার অভাবে মামলায় লড়তে বিলম্ব হয়েছে। মামলার রায় সোবাহান মিয়ার পক্ষে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ন্যায়বিচারের আশায় আপিল করেছি। সোবাহান মিয়া আপিল অমান্য করে গায়ের জোরে আমাদের মাথা গোঁজার ঠাঁইটুকু কেড়ে নিয়েছে। মাথা গোঁজার ঠাঁই হারিয়ে অসুস্থ স্বামীকে নিয়ে এখন অন্যের বাড়িতে আশ্রিত। আমার শ্বশুর ১৯৯৩ সালে বার্ধক্যজনিত রোগে মারা গেছেন। ১৯৯৭ সালে তিনি কীভাবে জমিটি বিক্রি করতে পারেন। সোবাহান মিয়া জাল দলিল করে অন্যায়ভাবে সাতপুরুষ ধরে বসবাসরত আমাদের ভিটামাটি দখলে নিয়েছে।

অভিযোগ অস্বীকার করে সোবাহান মিয়া বলেন, খরিদ সূত্রে এই জমির মালিক আমি। কোর্টে মামলা করে আদালতের রায়ে আমি বসতঘরসহ জমি দখল করেছি। আমি ১৯৯৭ সালে সবিতার শ্বশুর কেশব হালদারের কাছ থেকে ওই জমি কিনেছি। আদালতে মামলা করে জমি পেয়েছি। সবিতার শ্বশুর কেশব হালদার ১৯৯৭ সালে ভিটে বিক্রি করে ১৯৯৮ সালে মারা গেছেন। অবশ্য কেশব হালদারের মৃত্যুর সঠিক প্রমাণপত্র দেখাতে পারেননি সোবাহান মিয়া। অন্যদিকে সবিতা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে আনা তার শ্বশুরের মৃত্যু সনদ দেখিয়ে বলেন, তার শ্বশুর ১৯৯৩ সালে মারা গেছেন।

বলদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. সাইদুর রহমান জানান, সাবেক ইউপি সদস্য সোবাহান মিয়া নাকি সবিতা মিস্ত্রীর শ্বশুর কেশব হালদারের কাছে ১৯৯৭ সালে জমি কবলা করেছেন। তার এক বছর পর তিনি মারা গেছেন। এ কথা সোবাহান আমাকে বলেছেন। তবে এই মর্মে সোবাহান মিয়া জমিদাতার কোনো মৃত্যু সনদ দেখাতে পারেনি। সোবাহান কোর্টে মামলা করেছেন। সেখানে তিনি বলেছেন, জমিদাতা কেশব হালদার তাকে ১৯৯৭ সালে দলিল দিয়ে ১৯৯৮ সালে মারা গেছেন। অন্যপক্ষে সবিতা কোর্টে বলেছে তার শ্বশুর ১৯৯৩ সালে মারা গেছেন। তখন কোর্ট আমাকে তলব করে। আমি পরিষদের মৃত্যু সনদের রেজিস্টার নিয়ে হাজির হয়ে দেখিয়েছি। খাতায় কেশব হালদারের মৃত্যু তারিখ ১৯৯৩ সালের ১০ অক্টোবর। এমনকি উপজেলা স্যানিটারি অফিসের রেজিস্টারেও মৃত্যু তারিখ একই।

নেছারাবাদ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মনিরুজ্জামান জানান, আমি বিষয়টি স্থানীয় চৌকিদার এবং আমাদের সেনাবাহিনীর মাধ্যমে শুনেছি। তখন স্থানীয়ভাবে খবর নিয়ে জানতে পেরেছি, সোবাহান মিয়া আদালতের উচ্ছেদ অভিযানের রায় নিয়ে জমিটি দখল করেছেন। এখন বিষয়টি আদালতের ব্যাপার।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বানিয়ে নিন মুচমুচে ফুলকপির পকোড়া

মুক্ত আকাশে ফাঁদে আটকা ৯০টি শালিক পাখি

রামপুরায় ২৮ জনকে হত্যা : অভিযোগ গঠনে শুনানির তারিখ নির্ধারণ

প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইল রিয়াল মাদ্রিদ

দুর্নীতি চাওয়া না চাওয়ার মধ্যে ফাঁক রয়েছে : দুদক চেয়ারম্যান

বিয়ে নিয়ে নিরাপত্তা জটিলতায় টেলর সুইফট

পুরো অ্যাশেজ থেকেই কি ছিটকে গেলেন অজি তারকা?

দুর্ঘটনায় দুই বন্ধু নিহত, শেষ স্ট্যাটাস ভাইরাল

ঢাবি শিক্ষক কার্জনের জামিন

৩ বছর বিদেশে থেকেও ভোগ করেন বেতন-ভাতা

১০

রহস্যময় বেলুনে লিথুনিয়ার বিমানবন্দর বন্ধ

১১

বাউল শিল্পী-সমর্থকদের ওপর হামলার ঘটনায় এনসিপির নিন্দা

১২

রাতে ঘুমানোর আগে ঘরোয়া টোটকায় পা হবে নরম তুলতুলে

১৩

সিনিয়রদের মুখের ভাষাকে দুর্ভিক্ষ বলে এনসিপি নেতার পদত্যাগের ঘোষণা

১৪

‘আগামী ৫ বছরে মামলার সংখ্যা ৫০ শতাংশ কমবে’

১৫

২৪ ঘণ্টায় ১১৮ ভূমিকম্প

১৬

রোনালদোর অবিশ্বাস্য বাইসাইকেল কিকে আল-নাসরের টানা নবম জয়

১৭

দেড় বছর পর টেস্ট দলে ফিরলেন কেন উইলিয়ামসন

১৮

মার্কিন ভিসা না পাওয়ায় ভারতীয় চিকিৎসকের আত্মহত্যা

১৯

২৪ ঘণ্টার মধ্যে লঘুচাপ সৃষ্টির আভাস

২০
X