আলাউদ্দিন আরিফ
প্রকাশ : ০৫ অক্টোবর ২০২৫, ১২:০০ এএম
আপডেট : ০৫ অক্টোবর ২০২৫, ০৭:২৩ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

বিদেশে কর্মসংস্থান সংকুচিত হচ্ছে

বিদেশে কর্মসংস্থান সংকুচিত হচ্ছে

বাংলাদেশি শ্রমিকদের জন্য ধীরে ধীরে সংকুচিত হয়ে পড়ছে বৈদেশিক কর্মসংস্থান। মালয়েশিয়ার পর প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। সৌদি আরবের শ্রমবাজার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জনশক্তি রপ্তানি সংশ্লিষ্টরা। এর কারণ হিসেবে জানা গেছে, বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশ দূতাবাসগুলো সমস্যা সমাধানে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে না পারা, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তহীনতা এবং অদক্ষতা, বেসরকারি এজেন্সিগুলোকে সঠিকভাবে কাজের সুযোগ না দেওয়া। এর বাইরে বাংলাদেশে সরকারের বিভিন্ন সংস্থা মানব পাচার ও অর্থ পাচার প্রতিরোধে যেসব মামলা করেছে, সেগুলোর গতি ও তদন্ত ঠিকভাবে না এগোনোয় আন্তর্জাতিক মানব পাচার সূচকে (টিআইপি) বাংলাদেশের অবস্থান তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। মানব পাচারের ক্ষেত্রে ঝুঁকিপূর্ণ দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয়। ফলে শ্রমিক গ্রহণকারী দেশগুলো বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নিতে আগ্রহ হারাচ্ছে।

এরই মধ্যে বাংলাদেশের জন্য দ্বিতীয় বৃহত্তম শ্রমবাজার মালয়েশিয়ার দুয়ার গত বছরের মে মাসে বন্ধ হয়ে গেছে। ভিসা বন্ধ রয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের। ওমান ও বাহরাইনের শ্রমবাজারও বন্ধ। নানামুখী সমস্যায় হুমকিতে পড়েছে সৌদি আরবের শ্রমবাজার। সেখানে শ্রমিক যাওয়ার সংখ্যা কমার পাশাপাশি কমেছে রেমিট্যান্স আসার পরিমাণও। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে দ্রুততার সঙ্গে বন্ধ শ্রমবাজারগুলো উন্মুক্ত করা, দক্ষ-অদক্ষ শ্রমিকদের কর্মসংস্থানের নতুন নতুন বাজার খোঁজা জরুরি। এটা করা সম্ভব না হলে বেকার শ্রমিকের সংখ্যা বাড়বে এবং দ্রুতই রেমিট্যান্স প্রবাহ কমে যাবে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, এর আগে মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে জিটুজি প্লাস চুক্তি অনুযায়ী ৪ লাখ ৮০ হাজার শ্রমিক পাঠানো হয়। এই শ্রমিক পাঠাতে অর্থ পাচারের অভিযোগে বেশ কয়েকটি মামলা করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ও দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। এসব মামলায় সরাসরি অর্থ পাচারের অভিযোগ আনা হয়েছে। মামলার সঠিক তদন্ত না হওয়ায় এরই মধ্যে মালয়েশিয়া সরকার স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে এসব ‘অপ্রমাণিত’ অভিযোগ প্রত্যাহার না করা হলে তারা বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নেবে না।

পরিসংখ্যান বলছে, বাংলাদেশ থেকে সর্বাধিক শ্রমিক যায় সৌদি আরবে। দেশটিতে বৈধ-অবৈধ মিলে বাংলাদেশি শ্রমিক সংখ্যা প্রায় ২৬ লাখ। চলতি বছরের প্রথম পাঁচ মাসে ৩ লাখের বেশি শ্রমিক বৈধপথে সৌদি আরব গেছেন। রেমিট্যান্স প্রবাহের দিক থেকে তালিকায় এক নম্বরে থাকলেও সম্প্রতি সৌদি আরব থেকে রেমিট্যান্স আসার পরিমাণ অনেক কমেছে।

বিদেশে শ্রমিক যাওয়া কমেছে: বাংলাদেশ জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) তথ্যমতে, ২০২৪ সালে বাংলাদেশ থেকে ১০ লাখ ১১ হাজার ৮৬৯ জন কর্মীর বিদেশে কর্মসংস্থান হয়েছে। এর মধ্যে ৯৫ শতাংশ কর্মী গিয়েছেন মাত্র পাঁচটি দেশে। দেশগুলো হচ্ছে সৌদি আরব, মালয়েশিয়া, কাতার, সিঙ্গাপুর ও সংযুক্ত আরব আমিরাত। তবে এই সংখ্যা ২০২৩ সালের তুলনায় প্রায় ৩০ শতাংশ কম। ২০২৩ সালে ১৩ লাখ ৭ হাজার ৮৯০ জন কর্মী বিদেশ পাঠানো হয়। ২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে মে মাস পর্যন্ত ৫ মাসে ৪ লাখ ২০ হাজার ৭২১ জন কর্মী বিদেশে গেছেন। এর মধ্যে সর্বাধিক ৩ লাখ ৪ জন কর্মী গিয়েছেন সৌদি আরবে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪০ হাজার ৩০৮ জন কাতারে ও তৃতীয় সর্বোচ্চ ২৬ হাজার ৩৮৯ শ্রমিক গেছেন সিঙ্গাপুরে। চারটি বড় শ্রমবাজার মালয়েশিয়া, ওমান, বাহরাইন ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের শ্রমবাজার বন্ধ হওয়ায় বৈদেশিক কর্মসংস্থান কমছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নতুন শ্রমবাজার খোলা সম্ভব না হলে ২০২৪ সালের তুলনায় ২০২৫ সালে বৈদেশিক কর্মসংস্থানের হার আরও কমে যাবে।

তদন্ত হয়নি ১১০০ এজেন্সির জালিয়াতি: ২০২২ থেকে ২০২৪ সালের ৩১ মে পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে ৪ লাখ ৮০ হাজার শ্রমিক মালয়েশিয়ায় পাঠানো হয়েছে। সিন্ডিকেট তৈরি, অতিরিক্ত অর্থ আদায়সহ নানা অভিযোগে বেসরকারি ১০০ রিক্রুটিং এজেন্সির বিরুদ্ধে পর্যায়ক্রমে মামলা করছে দুদক ও সিআইডি। এই ১০০ এজেন্সিসহ সহযোগী রিক্রুটিং এজেন্সি ছিল প্রায় ১১শ। সিআইডি ও দুদকের মামলার তথ্য অনুযায়ী, সিন্ডিকেটভুক্ত এজেন্সিগুলো ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা করে নিয়েছে। অথচ সরকার নির্ধারিত রেট ছিল ৭৮ হাজার টাকা। বাস্তবতা হচ্ছে, ৪ লাখ ৮০ হাজার শ্রমিক মালয়েশিয়া গেছেন এবং তারা ৫ থেকে ৬ লাখ টাকা পর্যন্ত ব্যয় করেছেন। এর মধ্যে মূল রিক্রুটিং এজেন্সির মালিকরা গড়পড়তায় ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা পেয়েছেন। বাকি সাড়ে ৪ লাখ টাকা গেছে সহযোগী এজেন্সি ও দালালদের হাতে। সিআইডি বা দুদকের মামলায় সহযোগী এজেন্সিগুলোকে আসামি করা হয়নি। অথচ প্রায় ১১শ সহযোগী এজেন্সি নিয়েছে জনপ্রতি সাড়ে ৪ লাখ টাকা করে।

একাধিক রিক্রুটিং এজেন্সির মালিকরা বলেছেন, তারা প্রাপ্ত কোটার অনুকূলে বাংলাদেশ হাইকমিশন ডিমান্ড লেটার সত্যায়ন এবং মন্ত্রণালয়ের নিয়োগ অনুমতির পর কর্মীদের মেডিকেল, কলিং ভিসা ও ই-ভিসা সংগ্রহ করেন; বিএমইটির বহির্গমন ছাড়পত্র প্রাপ্তির পর কর্মীদের মালয়েশিয়ায় পাঠান। তারা আরও বলছেন, তালিকাভুক্ত ১০০ এজেন্সি স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে বরাদ্দ পাওয়ায় ভিসা ক্রয়ের প্রয়োজন হয়নি। বরাদ্দপ্রাপ্ত কোটার কর্মীদের নির্ধারিত পদ্ধতিতে পাঠানো হয়েছে। এক্ষেত্রে যে ১১শ সহযোগী এজেন্সি ছিল তারা ভিসা ট্রেড, অতিরিক্ত অর্থ আদায়সহ নানামুখী জাল-জালিয়াতির সঙ্গে জড়িত হয়ে পড়েছিল। তাদের বিষয়ে কোনো সংস্থা কোনো ধরনের আইনগত ব্যবস্থা নেয়নি বা তারা কোনো ধরনের তদন্তের আওতায় আসেনি। তাদের দ্রুত তদন্তের আওতায় আনা জরুরি।

ব্যর্থ হচ্ছে বোয়েসেল: মালয়েশিয়ার সম্ভাবনাময় শ্রমবাজারে নেপালসহ প্রতিবেশী দেশগুলো নতুনভাবে কর্মী পাঠানো শুরু করেছে। বাংলাদেশ থেকে কর্মী যাওয়া এখনো শুরু হয়নি। সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ ওভারসিস এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সার্ভিসেস লিমিটেডকে (বোয়েসেল) ২০২৪ সালে আটকা পড়া ৭ হাজার ৮৬৯ জন শ্রমিক পাঠানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। গত জুলাই থেকে নির্ধারিত সময়ের প্রায় চার মাস হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত একজন শ্রমিককেও মালয়েশিয়া পাঠাতে পারেনি বোয়েসেল। উল্টো যাদের বিনা খরচে পাঠানোর কথা, তাদের কাছ থেকে আদায় করা হচ্ছে ১ লাখ ৬২ হাজার ৫০০ টাকা করে। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় থেকে গত ৪ সেপ্টেম্বর জারি করা সার্কুলারে শ্রমিক পাঠানোর এই খরচ নির্ধারণ করা হয়। ২০২২ থেকে ২০২৪ সালের ৩১ মে পর্যন্ত বেসরকারি রিক্রুটিং এজেন্সিগুলোর জন্য সরকার অনুমোদিত খরচ ধরা হয়েছিল ৭৮ হাজার ৯০০ টাকা। ফলে বোয়েসেল উচ্চমাত্রায় অভিবাসন ব্যয় নির্ধারণ করাকে অবাস্তব বলছেন সংশ্লিষ্টরা। তাদের মতে, কোন যুক্তিতে সরকারি খরচের চেয়ে বেসরকারি অভিবাসন খরচ অস্বাভাবিক কম নির্ধারণ করা হয়েছে, তার কোনো সুস্পষ্ট ব্যাখ্যা পাওয়া যায়নি। অভিবাসন খাত সংশ্লিস্টদের ধারণা এবং অভিযোগ বোয়েসেল ভিসা ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ছে।

এ বিষয়ে বোয়েসেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সাইফুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, তারা ১ লাখ টাকা রেখেছেন ভিসা ক্রয়ের ফি বাবদ।

বায়রার এক কর্মকর্তা কালবেলাকে বলেন, এই শ্রমিকরা গত বছরের ৩১ মের আগেই মালয়েশিয়া যাওয়ার কথা ছিল। মালয়েশিয়ান বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে প্রয়োজনীয় লেভি পরিশোধ করে তাদের পাঠানোর জন্য কলিং ভিসা পাওয়া গেছে। কিন্তু সময়মতো তারা মালয়েশিয়া যেতে না পারায় সরকারের নির্দেশে প্রত্যেক শ্রমিকদের টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে। ওই টাকা ফেরত দেওয়ার পর তাদের লেভিসহ নিয়োগানুমতি বাতিল হয়ে গেছে। এর মধ্যে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ঘোষণা দিয়েছে রাষ্ট্রীয় সংস্থা বোয়েসেলের মাধ্যমে তাদের মালয়েশিয়া পাঠানো হবে; কিন্তু এসব নিয়োগানুমতি হয়েছিল বেসরকারি বিভিন্ন রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে। সরকার তাদের এসব শ্রমিক পাঠানোর অনুমতি দিলে তারা দ্রুততার সঙ্গে এসব শ্রমিক পাঠিয়ে দিতে পারত। কিন্তু বোয়েসেলকে দেওয়ায় তারা এখন পর্যন্ত একজন শ্রমিকও পাঠাতে পারেনি।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে এসব শ্রমিক পাঠানোর বাধ্যবাধকতা রয়েছে। বোয়েসেল সময়মতো এসব শ্রমিক না পাঠাতে পারলে নতুন করে জটিলতা দেখা দেবে। তা ছাড়া মালয়েশিয়ান নিয়োগকর্তারা যেসব শর্ত দিচ্ছে, বোয়েসেল সেগুলো পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে।

বায়রার অন্য এক নেতা বলেন, বোয়েসেল শ্রমিকপ্রতি যে টাকা আদায়ের সার্কুলার দিয়েছে, সেটা যৌক্তিক নয়। তারা বলছে সার্কুলারে ঘোষিত টাকার মধ্যে ১ লাখ টাকা ভিসা ট্রেডের জন্য। তারা কীভাবে, কাদের এই টাকা পরিশোধ করবে—এ বিষয়ে পরিষ্কার কোনো ঘোষণা দেয়নি।

যেসব কারণ বললেন বিশেষজ্ঞরা: বৈদেশিক কর্মসংস্থান বিষয়ে ইউনিভার্সিটি অব পূত্রামালয়েশিয়ার গবেষক সৈয়দ কামরুল ইসলাম বলেন, মালয়েশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বিদেশে আমাদের যেসব দূতাবাস রয়েছে, তারা বিভিন্ন দেশে তৈরি হওয়া সমস্যাগুলো সমাধানে যথাযথ উদ্যোগ নিতে পারছে না। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়ে বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় বিদেশে নতুন শ্রমবাজার খুঁজতে এখন পর্যন্ত কার্যকর কোনো উদ্যোগ নিতে পারেনি। বেসরকারি বিভিন্ন সংস্থাকে স্বাধীনভাবে কাজের সুযোগ না দিয়ে নানা প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে। ফলে নতুন শ্রমবাজার খুলছে না; বরং পুরোনো যেগুলো আছে, সেগুলো ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, গত বছরের মে মাসে মালয়েশিয়ায় শ্রমিক নেওয়া বন্ধ হওয়ার পর বাংলাদেশ সরকার নতুন করে শ্রমিক পাঠানোর লক্ষ্যে বাজার খুলতে পারেনি। এ সুযোগ নেপাল, ইন্দোনেশিয়াসহ বিভিন্ন দেশ মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার দখল করে নিচ্ছে।

সৈয়দ কামরুল ইসলাম আরও বলেন, অন্তর্বর্তী সরকারের সময় আমরা বেশ কিছু বিধি ও শর্ত জুড়ে দেওয়ার বিষয়ে অবহিত হয়েছি। কিন্তু নতুন বাজার খোঁজা ও বিদ্যমান বাজারগুলোর সমস্যা সমাধানে কার্যকর উদ্যোগ নিতে দেখিনি।

বায়রার বক্তব্য: বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সির (বায়রা) সাবেক সাংস্কৃতিক সম্পাদক কে এম মোবারক উল্লাহ শিমুল কালবেলাকে বলেন, পুরো জনশক্তি রপ্তানি খাতে এখন হযবরল অবস্থা বিরাজ করছে। আমাদের কিছু ব্যবসায়ী ও কিছু বেসরকারি সংস্থা দেশের স্বার্থের বিরুদ্ধে কাজ করছে। দেশ থেকে জনশক্তি রপ্তানি শুরুর পর থেকেই প্রায় একই পদ্ধতিতে ভিসা ট্রেডসহ যাবতীয় কর্মকাণ্ড চলছে। এখন হুট করে এসে মামলার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ীদের পথে বসিয়ে দেওয়া হচ্ছে, যা শ্রমবাজারে বিরূপ প্রভাব পড়ছে। যে পৌনে পাঁচ লাখ শ্রমিক দুদেশের সরকার পর্যায়ের চুক্তি অনুযায়ী যাবতীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে গেছেন, তাদের বিষয়ে মানি লন্ডারিং ও মানব পাচারের মামলার কারণে আমাদের টিআইপি সূচক কমে আমরা রেড জোনে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। যার সুযোগ গ্রহণ করছে প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলো।

তিনি আরও বলেন, সৌদি আরবসহ বিভিন্ন দেশে যারা পুরোনো শ্রমিক, তাদেরও তিন দিনের কর্মশালা করার বাধ্যবাধকতা দিচ্ছে মন্ত্রণালয়। এ ক্ষেত্রে আবার সংশ্লিষ্ট দপ্তরের স্লট পাওয়া যায় না। ফলে জিরো কস্টে সৌদি আরবসহ বিভিন্ন দেশে গৃহকর্মী পাঠানোতেও জটিলতা তৈরি করছে। মন্ত্রণালয় অনেক রিক্রুটিং এজিন্সির লাইসেন্স নবায়ন করছে না। নবায়নের ক্ষেত্রে নানা ধরনের জটিল শর্ত জুড়ে দিচ্ছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায়, মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের অদক্ষতার খেসারত দিচ্ছে জনশক্তি রপ্তানি খাত। এ খাতকে দ্রুত সম্প্রসারণের জন্য সরকারের উচিত অংশীজনের সঙ্গে বসা। সিনিয়র ব্যবসায়ীদের মতামত নিয়ে সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে সে আলোকে সেগুলোর সমাধান বের করা, তা না হলে অচিরেই আমাদের শ্রমবাজার ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যাবে।

সচিবের বক্তব্য: প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. নেয়ামত উল্যা ভূঁইয়া বলেন, সরকার প্রচলিত শ্রমবাজার টিকিয়ে রাখার পাশাপাশি নতুন নতুন শ্রমবাজার সৃষ্টির উদ্যোগ নিচ্ছে। এরই মধ্যে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার খোলার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। অন্যান্য দেশের শ্রমবাজারে সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে প্রতিকারের কাজ চলছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

দুই বাংলাদেশি যুবককে ফেরত দিল বিএসএফ

বিএনপির প্রতিটি নেতাকর্মী জনগণের পাশে রয়েছে : নীরব

শুভ প্রবারণা পূর্ণিমা আজ

ছক্কার ঝড় তুলে ম্যাচসেরা সাইফের মুখে আত্মবিশ্বাসের কথা

আফগানদের হোয়াইটওয়াশ করে তৃপ্ত জাকের

আবারও ভারতের কাছে কুপোকাত পাকিস্তান

সাবেক যুবদল নেতার উদ্যোগে স্বেচ্ছাশ্রমে রাস্তা সংস্কার 

আজ কোজাগরী লক্ষ্মীপূজা

কাশিয়ানীতে বিএনপির ৩১ দফার লিফলেট বিতরণ

দাবি আদায়ে প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎ চান মুক্তিযোদ্ধা পরিবার ও বস্তিবাসীরা

১০

নির্বাচনের জন্য দীর্ঘ ১৭ বছর আন্দোলন-সংগ্রাম করেছি : লায়ন ফারুক 

১১

সাইফ ঝড়ে আফগানিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করল বাংলাদেশ

১২

আফগানদের বিরুদ্ধে জয়ের স্বপ্ন দেখছে বাংলাদেশ

১৩

বৃষ্টিসহ আগামী ৫ দিনের পূর্বাভাস দিল আবহাওয়া অফিস

১৪

প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটি ও কার্টিন ইউনিভার্সিটির চুক্তি স্বাক্ষর

১৫

স্মার্ট কার্ডের সংকট কাটাতে আসছে ‘ব্ল্যাংক কার্ড’

১৬

সেই বিয়ের কথা স্বীকার করলেন পরীমনি

১৭

দুর্গোৎসবে টাইমস স্কয়ারে ঢাকেশ্বরী মন্দিরের আবহ

১৮

‘নির্বাচন কমিশন সচিবালয় আইন ২০০৯’ সংশোধন করে অধ্যাদেশ জারি

১৯

জুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষার নীতিমালা সংশোধন

২০
X