আতাউর রহমান
প্রকাশ : ১০ জানুয়ারি ২০২৪, ০৩:৩৮ এএম
আপডেট : ১০ জানুয়ারি ২০২৪, ১১:৫৬ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের পর স্বস্তিতে পুলিশ

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি
শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের পর স্বস্তিতে পুলিশ

নানা শঙ্কা থাকলেও বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনার মধ্য দিয়ে মোটামুটি শান্তিপূর্ণভাবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন শেষ হয়েছে। নিরাপত্তা বাহিনীর আশঙ্কা ছিল, ভোটের আগের রাতে ব্যাপক মাত্রায় কেন্দ্র পোড়ানোর মতো নাশকতা এবং প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে হানাহানি হতে পারে। পাশাপাশি শতভাগ পেশাদারিত্বের সঙ্গে পুলিশের দায়িত্ব পালন নিয়েও শঙ্কা ছিল। তবে সবকিছু ভালোভাবে শেষ হওয়ায় আপাতত স্বস্তিতে আছে পুলিশ। বাহিনীটির বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য মিলেছে।

পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, ভোটের দিনের পরিবেশ ভালো হলেও নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতা যাতে না হয়, সে বিষয়েও সতর্ক রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। অবশ্য এরই মধ্যে মাদারীপুরের কালকিনিসহ বিভিন্ন এলাকায় ছোটখাটো কিছু সংঘাতের খবর পাওয়ার পরই কড়া বার্তা দেওয়া হয়েছে স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনকে।

ভোটের দুদিন আগে থেকে দেশের বিভিন্ন এলাকায় অন্তত ২১টি ভোটকেন্দ্রে অগ্নিসংযোগ করে দুর্বৃত্তরা। রাজবাড়ী এলাকায় একটি ভোটকেন্দ্রের পাশ থেকে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা গ্রামপুলিশ সদস্যের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া ভোটের আগে বিএনপির ডাকা হরতালে দেশের বিভিন্ন এলাকায় যানবাহনে আগুন দেওয়া হয়। রাজধানীর গোপীবাগে চলন্ত ট্রেনে দেওয়া আগুনে চারজন নিহত হন। এসব কারণে নড়েচড়ে বসে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার হাবিবুর রহমান কালবেলাকে বলেন, দেশের জাতীয় নির্বাচন একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। মানুষ যাতে তার ভোটাধিকার প্রয়োগ করে সঠিকভাবে নিজ মতের প্রতিফলন ঘটাতে পারে, সেজন্য সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ দরকার। পুলিশসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এই পরিবেশ সৃষ্টি করতে হয়। এ নির্বাচনে সততা, নিরপেক্ষতা ও শতভাগ পেশাদারিত্ব নিয়ে পুলিশ কাজ করতে পেরেছে। যার ফলে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন সম্পন্ন করা সম্ভব হয়েছে।

পুলিশ কমিশনার বলেন, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সাধারণত নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সমর্থকরা যাতে উত্তেজনা ও সহিংসতা করতে না পারেন, সে বিষয়ে দায়িত্ব পালন করে। তবে এবারের জাতীয় নির্বাচন ঘিরে ভিন্ন একটা পরিস্থিতি ছিল। ভোট প্রতিহতের ঘোষণা দিয়ে একটি পক্ষ জ্বালাও-পোড়াও, যানবাহন ও ট্রেনে আগুন দিয়ে মানুষ হত্যাসহ নানা ধরনের নাশকতা করছিল। এগুলো প্রতিরোধ করে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা এবং ভোটের সুষ্ঠু-শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখতে বাহিনীকে দায়িত্ব পালন করতে হয়েছে। এখানেও পুরোপুরি সফল হয়েছে পুলিশ। সুষ্ঠু পরিবেশে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট শেষ হওয়ায় পুলিশ আপাতত স্বস্তিতে রয়েছে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্র জানায়, তথ্য ছিল শক্তিশালী স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছে—এমন আসনগুলোতে ভোটের দিন সহিংসতা হতে পারে। তা ছাড়া ভোটাররা কেন্দ্রে যাওয়ার সময়ে যানবাহনে আগুন দেওয়াসহ বিভিন্ন স্থাপনায় নাশকতা হতে পারে। অনলাইন মাধ্যমে ছড়ানো হতে পারে গুজব। এসব প্রতিরোধে ইউনিফর্মে দায়িত্ব পালন ছাড়াও নানা বেশে দায়িত্ব পালন করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সাইবার পুলিশের ইউনিটগুলোও সতর্ক ছিল। এ ছাড়া নির্বাচনে স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে সশস্ত্র বাহিনী ও বিজিবি মোতায়েন ছিল। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলো পেশাদারিত্বের সঙ্গে দায়িত্ব পালন করায় ভোটের দিনে কোনো ধরনের বড় অঘটন ঘটেনি।

পুলিশ সূত্র জানায়, অনেক সময়ে ভোটকেন্দ্রে পুলিশের কেউ কেউ অপেশাদার আচরণ করে। কোনো প্রার্থীর পক্ষ নিয়ে কৌশলে প্রভাব বিস্তার করতে পারে। তবে এবারের নির্বাচনে তা ঠেকাতে দায়িত্বরত পুলিশের প্রতিও ছিল নজরদারি। সুপারভাইজিং অফিসাররা সব সময় কেন্দ্রে দায়িত্ব পালন করা পুলিশের দিকে নজর রেখেছেন। এসব কারণে ভোটের দিন পুলিশের বিরুদ্ধেও কোনো অভিযোগ ছিল না।

পুলিশ সদর দপ্তরের উপমহাপরিদর্শক (অপারেশন্স) আনোয়ার হোসেন কালবেলাকে বলেন, নির্বাচনী দায়িত্ব পালনে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে যাতে কোনো ধরনের প্রশ্ন না ওঠে, সেজন্য শুরু থেকেই তারা সতর্ক ছিলেন। অনেক আগে থেকেই নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের প্রস্তুতি নেওয়া শুরু হয়। এর অংশ হিসেবে আগেভাগেই নির্বাচনে দায়িত্ব পালনে আইন, বিধি ও পরিপত্র সম্পর্কে মাঠ পর্যায়ের পুলিশকে ব্রিফিং এবং প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়।

তিনি বলেন, শতভাগ পেশাদারিত্ব ও নিরপেক্ষতা বজায় রেখে পুলিশ দায়িত্ব পালন করেছে। এ জন্য অনেক শঙ্কার মধ্যেও কেউ বড় কোনো সহিংসতা বা নাশকতা ঘটাতে পারেনি।

পুলিশ সদর দপ্তরের এক কর্মকর্তা কালবেলাকে বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কেন্দ্র করে তিন ভাগে দায়িত্ব পালনের সিদ্ধান্ত ছিল। এর মধ্যে নির্বাচনের আগে এবং নির্বাচনের দিন দায়িত্ব পালনে সফল হয়েছে পুলিশ। এখন ভোট-পরবর্তী সহিংসতা মোকাবিলায় দায়িত্ব পালন চলছে। এ জন্য ভোট-পরবর্তী সময়েও জয়ী-পরাজিত প্রার্থীর কর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে বড় কোনো সংঘাত-সহিংসতা হয়নি।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ক্রিকেট ম্যাচে ওভার না দেওয়ায় গুলি, ২ ভাই নিহত

একই দিনে বুড়িগঙ্গা থেকে চার লাশ উদ্ধার

জামায়াত আমিরের স্বাস্থ্যের খোঁজ নিতে বাসায় গেলেন ইসহাক দার

ডাকসু নির্বাচনে ভিপি পদপ্রার্থীসহ দুজনের প্রার্থিতা বাতিলের সুপারিশ

লাইনচ্যুত বগি রেখেই ছেড়ে গেল ট্রেন

‘এটা কি আমার বাপের টাকায় করেছে? আমার নাম কেন থাকবে’

রুমিন ফারহানার বক্তব্যের ‘কড়া’ জবাব হাসনাতের

চট্টগ্রাম রেলস্টেশনে ট্রেন বিলম্বে যাত্রীদের বিক্ষোভ

খালেদা জিয়া নোবেল পুরস্কার পাওয়ার যোগ্য : বুলু

সিংহ শিকারের জন্য বেরিয়ে আসে, মোদিকে ওপেন চ্যালেঞ্জ বিজয়ের

১০

‘বাইরে থেকে লোক এসে দেশে সড়ক বানিয়ে দেয়, এটা লজ্জার’

১১

বাংলাদেশ পুলিশের সিনিয়র কর্মকর্তা ভারত থেকে আটক

১২

ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)-এর সরকারি ছুটি কবে?

১৩

শ্রাবন্তীর লেহেঙ্গায় মুগ্ধ ভক্তরা

১৪

শুক্র-শনি ছুটিসহ এনজিওতে চাকরির সুযোগ

১৫

এইচএসসি পাসেই চাকরি দিচ্ছে আকিজ গ্রুপ, পাবেন আবাসন সুবিধাও

১৬

একাদশে ভর্তির তৃতীয় পর্যায়ের আবেদন কবে?

১৭

মাঠের করুণ অবস্থা দেখে কান্না চলে আসছে : বুলবুল

১৮

আরও ১৪ জেলেকে অপহরণ করল আরাকান আর্মি

১৯

ব্রাজিলে বেড়ে ওঠেও আর্জেন্টিনার জার্সিতে স্বপ্ন দেখছেন তরুণ ফুটবলার

২০
X