ঈদের পর প্রায় দুই সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও রাজধানীতে নিত্যপণ্যের দামে বড় কোনো পরিবর্তন নেই। চাল, ডাল, তেল, আলু, পেঁয়াজের মতো পণ্যের সঙ্গে মাছ-মাংসের দামও উচ্চমূল্যে স্থিতিশীল হয়ে আছে। এদিকে তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে রাজধানীর বাজারগুলোতে বিক্রি কমে গেছে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। সরেজমিন ঘুরে বাজারে ক্রেতাও কম দেখা গেছে।
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর রায়সাহেব বাজার, নয়াবাজার, হাতিরপুল, নিউমার্কেট এলাকার বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রচণ্ড গরমের কারণে দিনের বেলা বাজারে ক্রেতারা আসছেন না বললেই চলে। অল্প কিছু ক্রেতা এলেও তারা মাছ-মাংসের চেয়ে সবজি কিনছেন বেশি। গরমে গরুর মাংসের চাহিদা কমেছে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা। নয়াবাজারের মাংস বিক্রেতা জয়নাল বলেন, রোজার মধ্যেও প্রতিদিন একটি গরু বিক্রি করেছি। ঈদের পরে বাজারে ক্রেতা তেমন নেই। ক্রেতারা অতিরিক্ত গরমের কারণে এক-দুই কেজির বেশি মাংস নিচ্ছেন না। এখন একটি গরু জবাই দিয়ে দুই দোকানে ভাগাভাগি করে বিক্রি করছি। ক্রেতা না থাকলেও দাম কমেনি। প্রতি কেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৮০ থেকে ৮০০ টাকায়। খাসির দাম ১ হাজার থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা কেজি। ব্রয়লার মুরগির দাম সামান্য কমেছে। আড়াইশ থেকে কমে ব্রয়লারের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৩০ টাকায়। সোনালি মুরগি আগের মতোই ৩৫০ থেকে ৩৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। বাদামি রঙের ডিম ১২০ টাকা ডজন; সাদা ডিম তার থেকে ১০ টাকা কম।
নিউমার্কেট কাঁচাবাজারে ক্রেতা রাব্বি রহমান বলেন, মাছ-মাংসের দাম আগের মতোই আছে, এতেই স্বস্তি। রোজার মধ্যে প্রতিদিনই দাম ওঠানামা করছিল। কিন্তু ঈদের পরে এখনো মাছ-মাংসের দাম আগের চেয়ে বাড়েনি। তাই আমাদের মতো অনেকে এখনো মাছ-মাংস কিনতে পারছেন।
বাজারে মাছের দামে বড় কোনো পরিবর্তন নেই। প্রতি কেজি পাঙাশ আগের মতোই ২২০ থেকে ২৩০ টাকা, রুই ২৮০ থেকে ৩০০, কাতলা ৩৮০ থেকে ৪০০, সিলভার কার্প ২৬০ থেকে ৩০০, তেলাপিয়া ২৬০ থেকে ২৭০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। নয়াবাজারের মাছ বিক্রেতা গোবিন্দ মালো বলেন, ঈদের পর থেকেই বাজারে ক্রেতার ভিড় কম, গরমের কারণে আরও কমেছে। তাই বিক্রিও তেমন নেই। দাম কমেনি।
এদিকে সবজির দাম স্থিতিশীল রয়েছে। পটোল, ঢ্যাঁড়স, চিচিঙ্গার মতো অধিকাংশ সবজি কেজিপ্রতি ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। ধুন্দল ও ঝিঙের দাম পড়ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকার মধ্যে। বাজারে অবশ্য আলুর দাম চড়া। প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকায়। পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি কমবেশি ৬০ টাকায়। কিছুটা বাড়তির দিকে আদা ও রসুনের দাম। মানভেদে মসুর ডাল বিক্রি হচ্ছে ১০৫ থেকে ১৪০ টাকার মধ্যে। নতুন দামের সয়াবিন বাজারে এসেছে, যদিও সরবরাহ এখনো কম। এখন বোতলজাত ১ লিটার তেলের দাম ১৬৭ টাকা।