

বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে সহজলভ্য এক জনপ্রিয় ফল পানিফল বা শিঙাড়া—ইংরেজিতে Water Chestnut নামে পরিচিত। নামের শেষে ‘Nut’ থাকলেও বাস্তবে এটি বাদামের সঙ্গে সম্পর্কহীন। পানসে স্বাদযুক্ত, হালকা মিষ্টি ও কষযুক্ত এ ফল শীতকালে বাজারে পাওয়া যায় প্রচুর আর এর প্রতিটি অংশেই লুকিয়ে আছে স্বাস্থ্য ও সৌন্দর্যের নানা উপকারিতা। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন ও খনিজে ভরপুর এ ফলটি হতে পারে আপনার দৈনন্দিন ডায়েটে নতুন সংযোজন
পুষ্টিগুণে ভরপুর পানিফল
পুষ্টিবিজ্ঞানীদের মতে, প্রতি
১০০ গ্রাম ভক্ষণযোগ্য
পানিফলে রয়েছে—
খাদ্যশক্তি: ৬৫ কিলোক্যালরি
জলীয় অংশ: ৮৪.৯ গ্রাম
আমিষ: ২.৫ গ্রাম
চর্বি: ০.৯ গ্রাম
শর্করা: ১১.৭ গ্রাম
খনিজ পদার্থ: ০.৯ গ্রাম
ফাইবার: ১.৬ গ্রাম
ক্যালসিয়াম: ১০ মিলিগ্রাম
আয়রন: ০.৮ মিলিগ্রাম
ভিটামিন বি১: ০.১৮ মিলিগ্রাম
ভিটামিন বি২: ০.০৫ মিলিগ্রাম
ভিটামিন সি: ১৫ মিলিগ্রাম
স্বাস্থ্য ও সৌন্দর্যে পানিফলের উপকারিতা
অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ
পানিফল শরীরের ফ্রি র্যাডিকেল দূর করে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং ত্বককে রাখে প্রাণবন্ত।
হরমোনের ভারসাম্য রক্ষায় সহায়ক।
ঐতিহ্যগতভাবে এটি সন্তান ধারণের ক্ষমতা বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখে এবং হরমোনের ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।
রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর
পটাশিয়ামসমৃদ্ধ এই ফল উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সহায়তা করে।
অ্যাসিডিটি থেকে মুক্তি
পানিফলের শীতল প্রকৃতি অম্লতা কমায় এবং হজম প্রক্রিয়া উন্নত করে।
রোজায় শক্তির উৎস
রোজার সময় খেলে শক্তি ধরে রাখতে সহায়তা করে এবং শরীরকে হাইড্রেটেড রাখে।
চুলের সৌন্দর্যে পানিফল
ভিটামিন ই, ভি-কমপ্লেক্স, জিংক ও পটাশিয়ামসমৃদ্ধ হওয়ায় চুল করে রেশমি ও স্বাস্থ্যকর। শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ দূর করে স্ক্যাল্পকে রাখে পরিষ্কার ও সতেজ। চুলের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে, ফলে চুল ভাঙা ও রুক্ষতা কমে।
ওজন কমাতে সহায়ক
কম ক্যালরি ও বেশি ফাইবার থাকায় এটি দীর্ঘক্ষণ পেট ভরা রাখে। ডায়েট ফ্রেন্ডলি একটি উপাদান হিসেবেও পানিফল বেশ জনপ্রিয়।
যেভাবে খাবেন
খোসা ছাড়িয়ে কাঁচা খেতে পারেন।
ভাজি করে রান্না করেও খাওয়া যায়।
শুকিয়ে গুঁড়ো করে আটা তৈরি করা যায়, যা দিয়ে রুটি বা পরোটা বানানো যায়।
পানিফল শুধুই শীতকালীন একটি ফল নয়; এটি স্বাস্থ্য, সৌন্দর্য ও পুষ্টির এক অসম্ভব সমৃদ্ধ উৎস। শীতের এ মৌসুমে আপনার খাদ্যতালিকায় এটি রাখলে উপকার পাবেন ভেতর থেকে বাইরে পর্যন্ত।
মন্তব্য করুন