বৃষ্টি শেখ খাদিজা
প্রকাশ : ০২ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৭:৪০ পিএম
আপডেট : ০২ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৭:৪৪ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
সাজবেলা

দুলল কাহার দুল গো

দুলল কাহার দুল গো

দুলল কাহার দুল গো!/ উস্খুসাল চুল গো!/ কাঁদছে পাখি পউষনিশির/ তেপান্তরের বক্ষে! দুল দোলা দিয়ে যায়। আবার দুলেই লুকিয়ে থাকে এক দুপুরের বিষণ্নতা। সুতরাং অন্তরমহলের হিল্লোল ফুটিয়ে তুলতে দুলে করা যাবে না ভুল। লিখেছেন বৃষ্টি শেখ খাদিজা

আজকাল স্বর্ণ-রুপার চেয়েও অন্য মেটালের গহনার দিকে বেশি ঝুঁকছেন নারীরা। পেছনে অবশ্য নিরাপত্তার কারণটাই বড়। তবে সেই টেনশন অন্য গল্প। আপাতত যত যাই হোক, দুলটা হতে হবে দশাসই।

রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে দেখা গেল দুলের রং, ডিজাইন ও সাইজে এসেছে পরিবর্তন। সিটিগোল্ড, কুন্দন, পুঁতি ও পাথরের চিরায়ত দুলগুলো এখন একটু আলাদা। এখন তো আবার নিজের মতো নকশা করে কারিগর দিয়ে সেটা বানানোর চলও চালু হয়েছে।

দেশীয় দুলগুলোর বডি তৈরি হয় তামা দিয়ে। সাভারের বাকুত্তা নামের একটা জায়গা থেকে বিভিন্ন নকশার কানের দুল ও গহনার বডি নিয়ে আসেন কারিগররা। এরপর তাতে যোগ করা হয় রং। এই রঙেরও আবার নাম আছে—রেকার, গোল্ডপ্লেট ও জিপি কালার।

রেকার কালারের স্থায়িত্ব ছয়-সাত মাস। গোল্ডপ্লেট ও জিপি কালারের স্থায়িত্ব বছর দুয়ের বেশি। তবে ব্যবহারের ওপরও অনেক সময় কালারের স্থায়িত্ব নির্ভর করে।

দুলের মূল বডিটা আনার পর তা পলিশের জন্য নিয়ে যাওয়া হয় বিডিআর গেট, বৈছিলা ও কামরাঙ্গীরচরে। পলিশ শেষে কারিগরের হাতে এসে পৌঁছায় সেগুলো। তাতে নকশা অনুযায়ী পুঁতি, পাথর, রুবি ও কুন্দন বসান তারা। পাথর হিসেবে বেশি ব্যবহার করা হয় এডি স্টোন। এতেও আছে রকমফের। এডি স্টোনের পাশাপাশি ব্যবহার করা হয় কেডি স্টোন, রুবি ও প্লাস্টিকের স্টোন।

এডি স্টোনের দাম ১৮০ থেকে ২০০, কেডি স্টোন ১৪০ থেকে ১৬০, প্লাস্টিক স্টোন ১০০ টাকা পড়ে। রুবির মধ্যেও আছে পার্থক্য। প্রকারভেদে দাম হয় ৭০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা।

ভারতের জয়পুর, যোধপুর ও দক্ষিণ ভারতের বিভিন্ন জায়গা থেকেও জুয়েলারি ইমপোর্ট করেন গহনা ব্যবসায়ীরা। তবে ভারত থেকে যেসব গহনা ও কানের দুল আনা হয়, সেগুলোর বেশিরভাগই হয় কুন্দন, না হয় ডায়মন্ড কাটের। আবার দেশীয় দুল ও গহনায় তামার ব্যবহার করা হলেও ভারতীয়রা তাদের গহনায় ব্যবহার করেন দস্তা। বাজারভেদে সেই দুলগুলোর দাম ৮০০ থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত।

সোনালি রং আর স্থায়িত্বের কারণে অনেকেরই পছন্দ সিটিগোল্ডের গহনা। দামও হাতের নাগালে। মার্কেট ঘুরে দেখা গেল, সিটিগোল্ডের তৈরি এসব গহনা আসে বেশি চীন থেকে।

অনলাইনেই পাওয়া যায় এসব দুল। বিভিন্ন পেজে ঢু মেরে দেখা গেল বাহারি দুলের সমারোহ। মার্কেট থেকে পাইকারি দামে কিনে সেটি ক্রেতাদের দরজায় পৌঁছে দেন অনলাইন ব্যবসায়ীরা।

দোকানিরা বললেন, অনলাইনের চেয়ে সাধারণ ক্রেতাই বেশি। কারণ দুলটা পরে দেখার ব্যাপার আছে। কিছু টাকা বা সময় খরচ হলেও সরাসরি এসে পণ্যটি দেখেশুনে নেওয়াতেই মত তাদের।

অনলাইনের সঙ্গে দামের ব্যবধানটা কেমন? এমন প্রশ্নে গহনা ব্যবসায়ীরা জানান, সাধারণ ক্রেতাদের কাছে আমরা যে দুল ৬০০ টাকায় বিক্রি করি, তা অনলাইনে হয়তো ৪৫০-৫০০ টাকায় পাওয়া যাবে। তাদের তো দোকান ভাড়া বা আরও অনেক খরচ লাগছে না।

এদিকে হকারদের সঙ্গে দুলবিষয়ক একপশলা বেরিয়ে এলো তারা পাইকারিতে দুল নিয়ে আসেন রাজধানীর চকবাজার থেকে। ভারতের জয়পুর থেকেও দুল ও গহনা ইমপোর্টাররা তাদের দিয়ে যায়। হকার্সের দোকানে থাকা দুলগুলোর দাম ২০০ থেকে ২ হাজার টাকা।

শুধু সুন্দর কানের দুল বেছে নিলে চলবে না। কোন মুখের সঙ্গে কেমন দুল মানানসই, সে সম্পর্কেও থাকতে হবে সঠিক ধারণা।

লম্বাটে মুখের জন্য

লম্বাটে মুখের জন্য বড়, গোলাকার দুল বেছে নিন। চেহারায় ভারসাম্য থাকবে। এ ক্ষেত্রে লম্বা ঝোলানো দুল মানানসই নয়। তবে কেউ যদি ঝোলানো দুল বেশি পছন্দ করেন, সে ক্ষেত্রে চুল খোলা রেখে মাঝারি আকারের লম্বা দুল পরতে পারেন।

ডিম্বাকার মুখ হলে

মুখের আকৃতি যদি কেট হাডসনের মতো কিছুটা ডিম্বাকৃতির হয়, তবে যে কোনো দুল নিশ্চিন্তে পরতে পারেন।

গোলগাল মুখ

গোলাকার মুখের জন্য লম্বাটে, বড় দুল মানানসই। গোল মুখের সঙ্গে গোলাকার দুল একেবারেই মানাবে না।

চৌকো, ত্রিকোণাকৃতি বা পানপাতা

এ ধরনের মুখের জন্য ছড়ানো, বড় কানের দুল বেছে নেওয়ার পরামর্শ দেন ফ্যাশন বিশেষজ্ঞরা। পাশা, মাকড়ি বা এ জাতীয় বড় দুল মানায় এমন মুখে।

মুখ ও ঘাড়ের গঠন

কারও চেহারায় একটা বাঙালিয়ানা আমেজ থাকে। তাদের মুখের গঠনটাই এই ধাঁচের। তারা অনায়াসে মাদুলি ও বাঙালি ঘরানার গহনা পরতে পারেন। দেশজ ঐতিহ্যে তৈরি নানা দুলে তাদের দারুণ মানাবে। মুক্তার দুলও এমন চেহারায় মানানসই।

মুখের গড়নে খানিকটা পাশ্চাত্যের ধাঁচ থাকলে রিং পরতে পারেন। এ ক্ষেত্রে দেশীয় ঘরানার গহনার পরিবর্তে আধুনিক প্যাটার্নের গহনা বেশি মানাবে।

ঘাড়ের আকার একটু ছোট হলে খুব বড় ঝোলানো দুল এড়িয়ে চলুন। দুল যদি কাঁধ ছুঁয়ে থাকে, তবে তা দৃষ্টিকটু লাগবে।

চোয়াল খানিকটা বড় হলে বড় দুল বেছে নিন। দুলজোড়া কান থেকে নেমে চোয়ালের পাশটাও একটু ঢেকে রাখবে। আবার মুখটা একটু ভাঙা গড়নের হলেও এ ধরনের বড় দুল মানাবে।

মুখের গড়ন সরু হলে বড়, ভারী দুল মানিয়ে যায় সহজেই। কিন্তু চওড়া ও বড় মুখের কারও যদি এ ধরনের বড় দুল ভালো লেগে যায়, সে ক্ষেত্রে সাজ-পোশাকে খানিকটা পরিবর্তন আনতে হবে। যেমন—হালকা নকশার কালো শাড়ির সঙ্গে এমন গহনা মানাবে। আবার এ ক্ষেত্রে চুলের সাজটাও হালকা হতে হবে। এর জন্য চুলের শুধু নিচের দিকটা সামান্য কোঁকড়া করেও নিলেই হবে।

মডেল : কেয়া চৌধুরী ছবি : রনি বাউল

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

তিন মাসের জন্য মাঠের বাইরে রিয়াল তারকা

বাংলাদেশে পা রাখলো পাকিস্তান দল

মার্কিন এজেন্ট অপহরণের অভিযোগ, ৩ ইরানি কর্মকর্তাকে খুঁজছে এফবিআই

বিলীন হচ্ছে বর্ষার কদম ফুল

বাংলাদেশ দলের ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবছেন সাকিব

এবার গোপালগঞ্জে ইউএনওর গাড়িতে হামলা-ভাঙচুর

ইসির ওয়েবসাইট থেকে সরানো হলো ‘নৌকা’ প্রতীক

আবু সাঈদের কবরে শ্রদ্ধা

লিঙ্গসাম্যের জন্যই মূর্খ তৈরি হচ্ছে: কঙ্গনা রানাউত

আজ দেশে কত দামে স্বর্ণ বিক্রি হচ্ছে

১০

বৃষ্টিতে শিশুর যত্নে সহজ কিছু পরামর্শ

১১

১৬ জুলাই / আবু সাঈদের নৃশংস হত্যাকাণ্ডে ক্ষোভের বিস্ফোরণ

১২

মহেশপুর সীমান্তে ৭ বাংলাদেশিকে হস্তান্তর বিএসএফের

১৩

ঢাকায় বৃষ্টি নিয়ে আবহাওয়া অফিসের নতুন বার্তা

১৪

গোপালগঞ্জে পুলিশের ওপর নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের হামলা

১৫

যে তিক্ত অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়েছিলেন ফাতিমা

১৬

দুর্নীতি দমন কমিশনের নতুন সচিব খালেদ রহীম

১৭

গোপালগঞ্জে পুলিশের গাড়িতে আগুন

১৮

একযোগে গাজার বিভিন্ন এলাকায় হামলা, নিহত ৬১

১৯

চুরি করতে গিয়ে পুলিশ সদস্যের স্ত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ

২০
X