শোয়াইব রিফাত
প্রকাশ : ০৫ জুন ২০২৫, ১২:০০ এএম
আপডেট : ০৫ জুন ২০২৫, ০৮:৩৯ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

নামাজের কাতার শৃঙ্খলা শেখায়

নামাজের কাতার শৃঙ্খলা শেখায়

নামাজে মুসলমানদের এক কাতারে সমবেত হওয়ার সুযোগ তৈরি হয়। ধনী-গরিব, সাদা-কালো, রাজা-প্রজার মাঝে কোনো ব্যবধান থাকে না। সবাই এক কাতারে একাকার হয়ে যায়। ইসলামের মূল মর্মবাণীও এটাই। মানুষে মানুষে কোনো ভেদাভেদ নেই, সবাই আল্লাহর বান্দা। তাই নামাজে কাতার সোজা রাখার গুরুত্ব অপরিসীম। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘নিশ্চয় আল্লাহতায়ালা এবং ফেরেশতারা তাদের প্রতি রহমত বর্ষণ করেন, যারা কাতার সোজা করে। আর যে ব্যক্তি কাতারে ফাঁক বন্ধ করে আল্লাহ তার একটি মর্যাদা বৃদ্ধি করে দেন।’ (ইবনে মাজাহ: ৯৯৫; মুসনাদে আহমাদ: ২৪৬৩১)। আরও এসেছে, হজরত ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা কাতার সোজা করো। কাঁধসমূহকে বরাবর রাখো। ফাঁক বন্ধ করো। তোমাদের ভাইদের হাতে তোমরা নরম হয়ে যাও এবং শয়তানের জন্য ফাঁক ছেড়ে দিও না। যে কাতার সংযুক্ত করে আল্লাহতায়ালাও তাকে সংযুক্ত করে দেন। আর যে কাতার বিচ্ছিন্ন করে আল্লাহতায়ালা তাকে বিচ্ছিন্ন করে দেন।’ (আবু দাউদ: ৬৬৬)

হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘একদা নামাজের ইকামত দেওয়া হলে রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাদের অভিমুখী হয়ে বললেন, তোমরা তোমাদের কাতারগুলো সোজা করো এবং গায়ে গায়ে মিশে মিশে দাঁড়াও। কেননা আমি তোমাদের আমার পেছন দিক থেকেও দেখতে পাই।’ (বোখারি: ৭১৯)। অন্য এক হাদিসে এসেছে, হজরত নোমান ইবনে বশির (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাদের কাতারগুলোকে এমনভাবে সোজা করতেন, যেন তিনি তীর সোজা করবেন। এভাবে তিনি করতে থাকলেন যতদিন না তিনি দেখলেন যে, আমরা তার থেকে বিষয়টি অনুধাবন করতে পেরেছি। অতঃপর একদিন তিনি নামাজের জন্য বের হলেন। যখন তিনি তাকবির দিতে যাবেন সেই মুহূর্তে এক ব্যক্তিকে দেখলেন সে তার বুক কাতারের বাইরে বের করে রেখেছে। তখন রাসুল (সা.) বললেন, আল্লাহর বান্দারা, হয় তোমরা অবশ্যই কাতার সোজা করবে। নতুবা তোমাদের মাঝে আল্লাহতায়ালা অবশ্যই বিরোধিতা সৃষ্টি করে দেবেন।’ (বোখারি: ৭১৭; মুসলিম: ১০০৭)

জামাতের নামাজ আদায়ের সময় তিনটি বিষয় গুরুত্বের সঙ্গে লক্ষ রাখা—১. কাতার এমনভাবে সোজা করে দাঁড়ানো যে, কোনো মুসল্লি যেন তার পার্শ্ববর্তী মুসল্লির চেয়ে এগিয়ে না দাঁড়ায় এবং পিছিয়েও না দাঁড়ায়। কাতার বাঁকা করে আগে-পিছে দাঁড়ানো সুন্নত পরিপন্থি। ২. এমনভাবে দাঁড়ানো, যাতে দুই মুসল্লির মাঝখানে কোনো ফাঁক না থাকে। অর্থাৎ পরস্পরের মাঝে ফাঁক না রেখে দাঁড়ানো। ফাঁক রেখে দাঁড়ানো নিয়মবিরোধী ও সুন্নত-পরিপন্থি। ৩. একটি কাতার থেকে অন্য কাতারের মাঝখানে অস্বাভাবিক দূরত্ব না থাকা। বরং স্বাভাবিকভাবে সেজদা করতে যতটুকু দূরত্ব বজায় রাখা প্রয়োজন ততটুকু দূরত্ব বজায় রেখে কাতার তৈরি করা। দুই কাতারের মাঝখানে অস্বাভাবিক ফাঁকা রেখে কাতার করাও নিয়ম ও সুন্নত-পরিপন্থি।

আল্লাহতায়ালা আমাদের নামাজের কাতার সোজা রাখার তওফিক দান করুন।

লেখক: মাদ্রাসা শিক্ষক

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সৌদির নারীদের সম্পর্কে চমকপ্রদ তথ্য

ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আরও ১৭৩ জন

মোবাইলের ডায়াল প্যাড আগের মতো করবেন যেভাবে

মেয়াদ আছে তো!

শাপলা চত্বর গণহত্যার বিচারে আলাদা কমিশন গঠনের দাবি

‘১৭ বছরে ব্যবসা ছেড়ে ভারতে গেছেন অনেক স্বর্ণ ব্যবসায়ী’ 

ইতিহাস-ঐতিহ্যের অবিচ্ছেদ্য অংশ গোপালগঞ্জ : নুরুল হক 

ঐকমত্য কমিশনে মতামত দিয়েছে ২৩ দল

আন্ডারটেকার ও মাইক টাইসন আসছেন ‘বিগ বস ১৯’-এ!

চিলিতে ৭.৫ মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত

১০

ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির ‘খ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত

১১

সাবেক প্রেসিডেন্ট রণিল বিক্রমাসিংহে গ্রেপ্তার

১২

রাতে যেসব জেলায় ৬০ কিমি বেগে ঝড় ও বজ্রবৃষ্টির আভাস

১৩

সাফে ভারতের কাছে বাংলাদেশের হার

১৪

পুলিশের বিশেষ অভিযানে গ্রেপ্তার ১৮৮০

১৫

চীন সফরে নাহিদের সঙ্গে যাচ্ছেন যারা

১৬

ব্যালট বাক্সের হিসাব চেয়ে মাঠ কর্মকর্তাদের ইসির নির্দেশ

১৭

এক দশক পর কারামুক্ত ব্লগার ফারাবী

১৮

১০ মাসেও মেলেনি মোস্তাফিজ হত্যার রহস্য, থামছে না মায়ের কান্না

১৯

নিজের যেসব বদঅভ্যাসে লিভারের ক্ষতি করছেন না জেনেই

২০
X