

শুক্রবার মুক্তি পেয়েছে বলিউডের আলোচিত সিনেমা ‘হক’। আদালতকেন্দ্রিক সামাজিক ড্রামা এটি। ভারতের ইতিহাসে আলোচিত শাহ বানু মামলা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে নির্মিত এ সিনেমার গল্প, ভারতীয় সমাজ ও আইন ব্যবস্থার অন্তস্থলে পৌঁছে দেয় এক গভীর মানবিক বার্তা। যেখানে ‘শাহ বানু’ চরিত্রে অভিনয় করেছেন বলিউড অভিনেত্রী ইয়ামি গৌতম। আর তার স্বামী আব্বাস খানের চরিত্রে অভিনয় করেছেন বলিউড অভিনেতা ইমরান হাশমি। সিনেমাটি পরিচালনা করেছেন রেসু নাথ। ‘হক’ সিনেমাটি মুক্তি প্রসঙ্গে সম্প্রতি বলিউড হাঙ্গামাকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন ইয়ামি। কালবেলার পাঠকের জন্য অনুবাদ করেছেন মহিউদ্দীন মাহি।
অভিনেত্রী ইয়ামি গৌতম। ছবি : সংগৃহীত
ঐতিহাসিক ‘শাহ বানু’ চরিত্রে অভিনয় করেছেন, চাপ ছিল কোনো?
প্রতিটি চরিত্রের জন্যই আলাদা প্রস্তুতি নিতে হয়। যে কোনো চরিত্রই নতুনভাবে নিজেকে উপস্থাপনের চেষ্টা থাকে। সে ক্ষেত্রে কিছু কিছু চরিত্রের জন্য কঠোর প্রস্তুতি নিতে হয়। এর বাইরে আলাদা কোনো চাপ থাকে না। কারণ বাড়তি চাপ নিয়ে কখনোই অভিনয়ে শতভাগ দেওয়া সম্ভব নয়।
অভিনেত্রী ইয়ামি গৌতম। ছবি : সংগৃহীত
এ সিনেমায় আপনি প্রথমবারের মতো ইমরান হাশমির বিপরীতে অভিনয় করেছেন। তার সঙ্গে অভিনয়ের অভিজ্ঞতা কেমন?
আমি ব্যক্তিগতভাবে ইমরানের অভিনয়ের ভক্ত। সে এরই মধ্যে বেশকিছু অসাধারণ কাজ উপহার দিয়েছে। যখন জানতে পারলাম সিনেমায় আমার স্বামী চরিত্রে তাকে কাস্ট করা হয়েছে। তখনই বুঝেছি দারুণ কিছু হচ্ছে। এ ছাড়া সহকর্মী হিসেবে তিনি দারুণ। সেটে আলোচনার মাধ্যমে আমরা নিজেদের মধ্যে অনেক সংলাপ ঠিক করে নিয়েছি, কীভাবে আরও ভালো করা যায়—এ বিষয়ে পরামর্শ করেছি। তবে শুধু ইমরান নয়, এ সিনেমার প্রতিটি আর্টিস্ট অসাধারণ ছিলেন। বিশেষ করে আমি দুজনের নাম বলব— একজন হচ্ছেন সাহেবা চাড্ডা অন্যজন অসিম। যারা আমার উকিল ছিলেন। তারা দুজন দারুণ করেছেন।
অভিনেত্রী ইয়ামি গৌতম। ছবি : সংগৃহীত
এ গল্পটি যখন আপনার কাছে আসে, তখন চরিত্রের জন্য কী ধরনের প্রস্তুতি নিতে হয়েছে?
পরিচালকের মাধ্যমে গল্পটি যখন আমার কাছে আসে, তখন আমি এবং আমার স্বামী স্ক্রিপ্টটি নিয়ে বসি। তারপর তার কাছ থেকে আমি অভিনয়ের ধারণা নেই। সে আমাকে প্রচুর কথা বলার পরামর্শ দেন। এর কারণ গল্পে হাসি, কান্না, প্রেম ভালোবাসা সব আছে এবং আলাদা আলাদা চরিত্রে নিজেকে উপস্থাপন করতে হবে। তখন আমার স্বামী বলেন, তুমি অতিরিক্ত কথা বলার চেষ্টা কর। কারণ এখানে অনেক কথা বলতে হবে। তার পরামর্শে আমি কথা বলার প্র্যাকটিস করি। এরপর অডিশন দেই, তারপর সিলেকশন।
অভিনেত্রী ইয়ামি গৌতম। ছবি : সংগৃহীত
আপনি এরই মধ্যে ক্রাইম, থ্রিলার, ড্রামা, অ্যাকশন ও কমেডি ধাঁচের গল্পে অভিনয় করেছেন। এর মধ্যে কোন ধরনের গল্পে কাজ করতে বেশি ভালো লাগে?
প্রথমে যে কোনো গল্পেই কাজ করতে আমার ভালো লাগে। তার জন্যই দর্শক আমাকে ভিন্ন ভিন্ন গল্পে দেখেছেন। তবে কাজের ক্ষেত্রে প্রথমে যেই বিষয়টি দেখে আমি অভিনয়ে হ্যাঁ বলি, সেটি হচ্ছে গল্পের মান, এরপর প্রডাকশন, তারপর নির্মাতা, সর্বশেষ সহকর্মী। সবকিছু ঠিক থাকলে তখনই আমি কাজ করি। কারণ গল্প, ভালো কিন্তু প্রোডাকশন ভালো না, তাহলে কাজ করে কখনো শান্তি পাওয়া যাবে না। আর কাজও ভালো হবে না।
আপনি এখন পর্যন্ত যে কয়টি সিনেমায় অভিনয় করেছেন, তার মধ্যে সবচেয়ে পছন্দের সিনেমা কোনটি?
নিজের সিনেমাকে কখনোই আলাদা আলাদা রেটিং করা যায় না। প্রতিটি ছবিই আমার পছন্দের। কারণ পছন্দ না হলে আমি কাজ করতাম না।
অভিনেত্রী ইয়ামি গৌতম। ছবি : সংগৃহীত
যে কোনো সিনেমায় চুক্তিবদ্ধ হওয়া আগে যে কাজটি আপনি সবচেয়ে বেশি করেন?
আমি গল্প পড়তে পছন্দ করি। তাই যে কোনো স্ক্রিপ্ট আমার কাছে আসলে আমি অনেকবার পড়ি। যেমন আমার একটি সিনেমা আছে ‘আর্টিকেল ৩৭০’। এটির স্ক্রিপ্ট আমি পঁয়ত্রিশ বারের বেশি পড়েছিলাম। কারণ গল্প না বুঝলে ভেতর থেকে চরিত্রের সেরাটি ফুটে উঠবে না। এটা আমার ধারণা। কারণ গল্পই বলে দেবে যে সিনেমাটি কত ভালোভাবে নির্মাণ হতে যাচ্ছে। তাই আমি সবসময় গল্প বোঝার চেষ্টা করি। তারপর বাকি সব।
স্বামী আদিত্য সুহাসের সঙ্গে ইয়ামি। ছবি : সংগৃহীত
আপনার স্বামী আদিত্য সুহাস জাম ভালে একজন চমৎকার নির্মাতা। অভিনয়ে তার কোনো পরামর্শ থাকে?
সে খুবই গুণী একজন মানুষ। সিনেমা নির্মাণে তার কাজের ধরনে আমাকে সবসময় মুগ্ধ করে। এটি স্ত্রী হিসেবে নয়, অভিনেত্রী হিসেবে বলছি। আদিত্য সবসময় গল্প নিয়ে কাজ করে। এরপর শুটিংয়ে নামে। তার কাছ থেকে আমি এটাই শিখেছি। কারণ যে কোনো নতুন কাজের ব্যাপারে ও আমাকে আগে গল্প বোঝার পরামর্শ দেয়।
‘হক’ সিনেমায় ইয়ামি গৌতম ও ইমরান হাশমি। ছবি : সংগৃহীত
‘হক’ নিয়ে প্রত্যাশা…
প্রত্যাশা একটাই, সেটি হচ্ছে দর্শকের ভালোবাসা। তারা ভালোবাসলেই আমাদের প্রত্যাশা পূরণ হয়ে যায়।
মন্তব্য করুন