কালবেলা প্রতিবেদক
০২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০৭:১১ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

রায়ত বাংলা নাটক নানকার পালায় মুগ্ধ সিলেটের দর্শক

রায়ত বাংলা নানকার নাটকের একটি দৃশ্য। ছবি : কালবেলা

বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির উদ্যোগে এবং ৬৪ জেলা শিল্পকলা একাডেমির ব্যবস্থাপনায় একাডেমির মহাপরিচালক লিয়াকত আলী লাকীর ভাবনা ও পরিকল্পনায় বাংলা নাট্যসাহিত্যের বিশেষ ও বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত নাটকের পাণ্ডুলিপি বাছাইয়ের মাধ্যমে দেশব্যাপী চিরায়ত বাংলা নাটক নির্মাণ ও মঞ্চায়ন কার্যক্রম বাস্তবায়িত হচ্ছে। এরই অংশ হিসেবে জেলা শিল্পকলা একাডেমি সিলেটের ব্যবস্থাপনায় সিলেট জেলার প্রযোজনা নানকার পালা নাটকটির উদ্বোধনী মঞ্চায়ন হয়।

শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৭টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে প্রদর্শনীটির আয়োজন করা হয়। উদ্বোধনী পর্বে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন সিলেটের জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান।

জেলা কালচারাল অফিসার ও প্রযোজনা সমন্বয়কারী অসিত বরণ দাশ গুপ্তের সভাপতিত্বে এতে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দা জেবুন্নেসা হক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ মোবারক হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও নাট্যব্যক্তিত্ব ভবতোষ রায় বর্মণ, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও গবেষক মিহির কান্তি চৌধুরী, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির প্রতিনিধি পূর্ণলাক্ষ চাকমা, জেলা কালচারাল অফিসার রাজবাড়ী পার্থ প্রতীম দাস, সম্মিলিত নাট্য পরিষদের প্রধান পরিচালক অরিন্দম দত্ত চন্দন, বাংলাদেশ আবৃত্তি সমন্বয় পরিষদের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোকাদ্দেস বাবুল, কবি ও সাবেক জেলা সংগঠক মাহবুবুজ্জমান চৌধুরী, সিলেট মহানগর আওয়ামী লীগের কৃষিবিষয়ক সম্পাদক তপন মিত্র, সম্মিলিত নাট্য পরিষদের সভাপতি রজত কান্তি গুপ্ত ও সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক আহমেদ প্রমুখ। আব্দুল্লাহেল মাহমুদ রচিত নাটকটির নির্দেশনা দিয়েছেন ড. আহমেদুল কবির। প্রযোজনাটির নবপাঠ ও সহনির্দেশক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন আশরাফুল ইসলাম সায়ান।

দাসপ্রথার এক ঘৃণ্য নজির দৃশ্যমান ছিল পুণ্যভূমি সিলেটে। কথিত নান-রুটি দিয়ে কেনা সেই দাসের নামকরণ করা হয়েছিল নানকার। ব্রিটিশ শাসনাধীন তখনকার সিলেট জেলায় জমির মালিক ছিল অসংখ্য। সমগ্র জেলা অসংখ্য ছোট ছোট তালুকে বিভক্ত হয়ে অসংখ্য জমিদারের হাতে পড়েছিল। অল্প জমির মালিক এই সব ক্ষুদে জমিদাররা নিজেদের বিলাসী জীবনের খরচ জোগাতে প্রজাদের ওপর নিষ্ঠুর নির্যাতন চালাত। দাখিলা ছাড়া খাজনা তোলা, মর্জিমতো খাজনার পরিমাণ বাড়ানো, মাসে মাসে নজরানা, উপহার, জরিমানা, ইচ্ছে হলেই উচ্ছেদ, কাছারিবাড়িতে নিয়ে খেয়ালখুশিমতো শাস্তি প্রদান, নানকার নারীর সম্ভ্রম হরণ, খুন, নিজের কাজে বেগার খাটানো- যা ইচ্ছে তাই। নানকাররাও প্রতিবাদ করেছে। কখনো একা, আবার কখনো সম্মিলিতভাবে। ১৯৩৮ সাল নাগাদ সুনামগঞ্জ, সিলেট সদর ও করিমগঞ্জ মহকুমায় নানকাররা এই নিপীড়নের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ শুরু করে। কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালে ‘ভারত রক্ষা আইনে’র দোহাই দিয়ে ব্রিটিশ সরকার ও জমিদার শ্রেণি আন্দোলনকারীদের দমন করে। নিপীড়নের মাত্রা বেড়ে যায় আরও কয়েকগুণ।

শোষণের প্রক্রিয়াকে চিহ্নিতকরণ, অনুধাবন ও এর অবসানে সচেষ্ট হতে দর্শক-অভিনেতাদের উদ্বুদ্ধ করার তাগিদে এই নাট্যভাষ্য নির্মাণ করা হয়েছে। ত্রিমাত্রিক এক কল্পিত ভুবনে ইতিহাসের ঘটনার পুনরূপায়ণের মধ্য দিয়ে, বর্তমান সময়কে বুঝতে চাওয়াই এই নাটকের মূল উদ্দেশ্য। পুরো নাটকটি উপভোগ করেন হলভর্তি দর্শক, কলা-কুশলীদের অভিনয়শৈলীতে মুগ্ধ সিলেটের দর্শক। নাটকটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন মনিষা রায় অমি, দেবী রাজলক্ষ্মী তালুকদার, রোহেনা সুলতানা, পরাগরেণু দেব তমা, মো. শিমুল হাসান, রুবেল রাজ, মিহরাব আহমদ চৌধুরী হোসাইন, অমিত পণ্ডিত, প্রত্যাশা চৌধুরী শ্যামা, অনন্যা দাশ ঐশী, জ্যোতি সোম নূপুর, পূর্বা দাশ প্রমা, তুলসি বাউরি, এমরান আহমেদ রুবেল, দীপন তালুকদার, সুমন চক্রবর্তী, শুভ রঞ্জন দাশ, ধৃত তালুকদার, রাজীব দে চৌধুরী ও অসীম সরকার। পরিকল্পনা ও দৃশ্য ভাবনায় ছিলেন রাগীব নাঈম, আলোক ও রূপসজ্জা পরিকল্পনায় ড. আহমেদুল কবির, সংগীত ও দ্রব্য পরিকল্পনায় আশরাফুল হক সায়ান, পোশাক পরিকল্পনায় ছিলেন ফারজিয়া হক ফাহিম। এ ছাড়াও আলোক পরিকল্পনা সহযোগী ও আলোক প্রক্ষেপণে ছিলেন শাহাবুদ্দিন মিয়া ও মো. শাহজাহান মিয়া, সংগীত প্রয়োগে রেজাউল করিম রাব্বি, রূপসজ্জা প্রয়োগে সুমন রায় ও মো. ইসমাইল, দেহ বিন্যাস ও চলনে প্রতিভা রায় কেয়া এবং সমন্বয় সহযোগী ছিলেন রবিউল আহাম্মেদ রনি প্রমুখ।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

মেসির মায়ামিতেই অনুষ্ঠিত হবে কোপার ফাইনাল

জবির নতুন কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. হুমায়ুন কবীর

ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের টানেল ধ্বংসে ইসরায়েলের ভয়ংকর কৌশল!

বিদেশিদের চাপ একেবারেই নেই : ইসি আলমগীর

না ফেরার দেশে ‘সিআইডি’র ফ্রেডি

সরকার আশ্বাস দিয়েছে বলেই নির্বাচনে এসেছি : জাপা মহাসচিব

এবার দক্ষিণ গাজা খালি করতে চায় ইসরায়েল

কবে আসন ভাগাভাগির সিদ্ধান্ত হবে জানালেন কাদের

নির্বাচনে অবৈধ অস্ত্রের চোরাচালান ঠেকাতে সীমান্তে সতর্ক অবস্থানে বিজিবি

শুরু হলো এপিকটা অ্যাওয়ার্ড-২০২৩

১০

৬ ডিসেম্বর: লালমনিরহাট হানাদারমুক্ত দিবস আজ

১১

বিতর্কিত জলসীমায় চীনের ১৩৫ জাহাজ!

১২

ছাত্রদল নেতাকে না পেয়ে ক্রীড়াবিদ ছোট ভাইকে গ্রেপ্তার

১৩

জানা গেল হিরো আলমের বার্ষিক আয় ও সম্পদ বিবরণী

১৪

চাঁদপুরে মনোনয়নপত্র বাতিলের বিরুদ্ধে লড়বে ১১ প্রার্থী

১৫

জাতীয় অধ্যাপক ডা. আব্দুল মালিক আর নেই

১৬

প্রতারণায় মামলায় গায়ক নোবেলের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন ৩০ জানুয়ারি

১৭

চট্টগ্রামে সড়ক দুর্ঘটনায় ২ ভাই নিহত

১৮

জিম্বাবুয়ের নির্বাচনে কারচুপি, জড়িতদের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নিষেধাজ্ঞা

১৯

মিগজাউমের প্রভাবে লন্ডভন্ড ভারতের উপকূল, মৃত্যু ৮

২০
X