পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ৯৫৬তম কমিশন সভায় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ কর্তৃক প্রস্তাবিত কমোডিটি মার্কেট অপারেশন চালুর অনুমোদন দিয়েছে। ফলে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ কমোডিটি মার্কেট অপারেশন চালু করতে পারবে। কমোডিটি মার্কেট অপারেশন চালুর মাধ্যমে দেশের পুঁজিবাজার ডেরিভেটিভ পণ্যের যুগে প্রবেশ করতে যাচ্ছে, যা নিঃসন্দেহে দেশের পুঁজিবাজারের জন্য একটি অনন্য মাইলফলক বলে জানিয়েছে বিএসইসি।
মঙ্গলবার (২৭ মে) বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র আবুল কালাম আজাদ সাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে জানানো হয়, কমিশন সভায় চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ কর্তৃক প্রস্তাবিত ‘চিটাগং স্টক এক্সচেঞ্জ (কমোডিটি ডেরিভেটিভস) রেগুলেশন ২০২৫’ প্রবিধানমালাটি অনুমোদনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। প্রবিধানমালাটি অনুমোদনের ফলে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ কমোডিটি মার্কেট অপারেশন চালু করতে পারবে। ফলশ্রুতিতে দেশের পুঁজিবাজারে কমোডিটি ডেরিভেটিভ পণ্য লেনদেন শুরু হবে বলে আশা করা যায়, যা পুঁজিবাজারের বৈচিত্র্যায়নকে অধিকতর ত্বরান্বিত করবে। কমোডিটি মার্কেট অপারেশন চালুর মাধ্যমে দেশের পুঁজিবাজার ডেরিভেটিভ পণ্যের যুগে প্রবেশ করতে যাচ্ছে, যা নিঃসন্দেহে দেশের পুঁজিবাজারের জন্য একটি অনন্য মাইলফলক।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সমন্বিত গ্রাহক হিসাব (সিসিএ) থেকে অর্জিত সুদ আয়ের ২৫ শতাংশ স্টক এক্সচেঞ্জের ইনভেস্টরস প্রটেকশন ফান্ডে জমা দিয়ে বাকি অর্থ ব্রোকাররা ব্যবহার করতে পারবে।
দেশের পুঁজিবাজারে বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) হিসাবের মেইনটেইন্যান্স ফি ৪৫০ থেকে কমিয়ে ১৫০ টাকা করার বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়। এ বিষয়ে আইনি প্রক্রিয়া শুরু করারও সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
কমিশন সভায়, বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ লিমিটেডের ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের ২৭ লাখ ২৮ হাজার ১১১টি সাধারণ শেয়ার প্রতিটি ১ হাজার ১১০ টাকা মূল্যে ১:১ হারে রাইটস শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে (উদ্যোক্তা, পরিচালক ও ৫% বা তার অধিক শেয়ার ধার করা কর্তৃক রাইটস শেয়ার পরিত্যাগ করার পর) মোট ৩০২ কোটি ৮২ লাখ ৩ হাজার ২১০ টাকা মূলধন সংগ্রহের আবেদন কমিশন অনুমোদন করেছে। বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ লিমিটেডের ওই রাইটস শেয়ার ইস্যু থেকে সংগৃহীত অর্থ ন্যাশনাল স্পেশাল ইকোনোমিক জোনে তৃতীয় কারখানা স্থাপন ও রাইট ইস্যু সংক্রান্ত খরচ মেটানোর জন্য ব্যবহার করবে। আইডিএলসি ইনভেস্টমেন্ট এক্ষেত্রে ইস্যু ব্যবস্থাপকের দায়িত্ব পালন করছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, দাখিলকৃত দলিলাদি সন্তোষজনক না হওয়ায় সার্বিক দিক বিবেচনায় জিপিএইচ ইস্পাতের ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের ১৬ কোটি ১২ লাখ ৯৪ হাজার ৪৮৫টি সাধারণ শেয়ার প্রতিটি ১৫ টাকা মূল্যে ১:৩ হারে রাইটস শেয়ার ইস্যুর মাধ্যমে মোট ২৪১ কোটি ৯৪ লাখ ১৭ হাজার ২৭৫ টাকা মূলধন সংগ্রহের আবেদন না মঞ্জুর করার সিদ্ধান্ত হয়।
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত জেড ক্যাটাগরির কোম্পানিগুলো এবং যেসব কোম্পানিতে স্পন্সর ও ডিরেক্টরদের যৌথভাবে ৩০ শতাংশের নিচে শেয়ার হোল্ডিং বিদ্যমান সেসব কোম্পানি ‘করপোরেট গভার্নেন্স কোড, ২০১৮’ পরিপালন করে স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগের ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
বাংলাদেশের পুঁজিবাজারের উন্নয়ন ও বাজারের সুশাসন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) কর্তৃক গঠিত ‘পুঁজিবাজার সংস্কার টাস্কফোর্স’ কর্তৃক সিকিউরিটিজ ও এক্সচেঞ্জ কমিশন (মিউচুয়াল ফান্ড) বিধিমালা এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (পাবলিক ইস্যু) রুলসের বিষয়ে পেশকৃত চূড়ান্ত সুপারিশমালার আইনি প্রক্রিয়া শুরু করার বিষয়টি অনুমোদনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। যার মাধ্যমে পুঁজিবাজারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও জরুরি দুটি সংস্কারের আইনি প্রক্রিয়া শুরু হলো।
ফলশ্রুতিতে মিউচুয়াল ফান্ড এবং আইপিও অনুমোদন প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও দায়বদ্ধতা বৃদ্ধি পাবে এবং সর্বোপরি বিনিয়োগকারীদের আস্থা বৃদ্ধি পাবে। এই সংস্কারের ফলে আগামীতে ভালো ও মৌল ভিত্তিসম্পন্ন কোম্পানিগুলো পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তিতে উৎসাহিত হবে এবং দেশের মিউচুয়াল ফান্ড খাতের টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত হবে।
মন্তব্য করুন