বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আজ রোববার (২৮ অক্টোরব) ঢাকায় মহাসমাবেশ। অপরদিকে শান্তি সমাবেশ করবে ক্ষমতাসীন দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। গতকাল শুক্রবার দিনটি নানা নাটকীয়তার মধ্যে গেলেও রাতের চিত্র ছিল ভিন্ন।
রাতে বিএনপি ও আওয়ামী লীগকে তাদের পছন্দের জায়গায় সমাবেশের অনুমতি দেয় পুলিশ। তারপরই নয়াপল্টনে জড়ো হতে শুরু করে বিএনপির নেতাকর্মীরা। একপর্যায়ে চাপ সামাল দিতে নিজ দলের নেতাকর্মীদের নয়াপল্টন ছাড়তে বললে থেকে যায় কয়েক হাজার নেতাকর্মী। রাতভর স্লোগান, মিছিল করে ঢাকার বাইরে থেকে আসা নেতাকর্মীরা। রাত ২টায় হঠাৎ করেই বিকট শব্দ হয় কাকরাইল এলাকায়। পরে পুলিশ জানায় ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনার পরই ডিবিপ্রধান হারুন উর রশিদের নেতৃত্বে নয়াপল্ট এলাকায় অভিযানে নামে পুলিশ।
শুক্রবার রাত আড়াইটার দিকে ঘটনাস্থলে অভিযান শেষে এ কথা বলেন গোয়েন্দাপ্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ।
তিনি বলেন, মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে দুষ্কৃতকারীরা যেন কোনো ধরনের অঘটন ঘটাতে না পারে এ জন্য পুলিশ অভিযান পরিচালনা করে।
ঘটনাস্থলে আসামাত্র ১৫ থেকে ২০টি ককটেল পুলিশের ওপর নিক্ষেপ করা হয়।
গোয়েন্দাপ্রধান বলেন, কাকরাইলের ওই ভবনের ভেতরে প্রবেশ করে দেখা যায়, ভবনটিতে কয়েকশ নেতাকর্মী দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে এসেছেন। ভবনের ভেতরে রড, লাঠি, ককটেল, চাল, ডাল ও ইটভাঙা পাওয়া যায়। পরে সেখান থেকে প্রায় ২০০ নেতাকর্মীকে আটক করা হয়েছে।
বিএনপিকে মহাসমাবেশের অনুমতি দেওয়ার পর উত্তেজনার কেন্দ্রবিন্দু ছিল জামায়াত। অনুমতি দেওয়া হবে না নিশ্চিত জেনেও একের পর এক বিবৃতিত দেয় দলটি।
রাতে জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির বলেন, ২৮ অক্টোবর শনিবার বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঘোষিত মহাসমাবেশ সর্বাত্মকভাবে সফল করতে হবে এবং কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন দিতে সরকারকে বাধ্য করতে হবে।
তিনি বলেন, অনির্বাচিত অবৈধ সরকার জগদ্দল পাথরের মতো জাতির ঘাড়ে চেপে বসেছে। এই সরকারের পতন ঘটানো ছাড়া জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করা যাবে না। জামায়াতের মহাসমাবেশ বানচাল করার জন্য কোনো কোনো মহলের পক্ষ থেকে নানাভাবে গুজব ও মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে জনগণের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা হচ্ছে।
ভারপ্রাপ্ত আমির বলেন, আমি দেশবাসীকে সরকারি-বেসরকারি মহলের কোনো প্রকার গুজবে কান না দেওয়ার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। কোনো মানুষকে ভয় না করে শুধু আল্লাহকে ভয় করে দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থে জামায়াত ঘোষিত মহাসমাবেশে দলে দলে যোগদান করে সর্বাত্মকভাবে সফল করে তোলার জন্য আমি সংগঠনের সব জনশক্তি এবং দেশবাসীর প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।
যতই প্রতিবন্ধকতা তৈরি করুন ২৮ অক্টোবর শাপলা চত্বরে মহাসমাবেশ বন্ধ করা যাবে না এবং বর্তমান সরকারের পতন ঘটিয়ে কারাগারে থাকা আলেমদের মুক্ত করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ।
মন্তব্য করুন