চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারগামী প্রবাল এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রা বাতিল করা হয়েছে। এ খবরে স্টেশনে আসা যাত্রীদের মধ্যে শোরগোল শুরু হয়েছে। তাদের দাবি, পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই যাত্রা বাতিল করা হয়েছে।
শুক্রবার (১ আগস্ট) সন্ধ্যা ৬টার দিকে চট্টগ্রাম স্টেশনে এ ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশনে কক্সবাজারের প্রবাল এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রীরা অপেক্ষা করছিলেন। হঠাৎ ঘোষণা করা হয় যাত্রা বাতিলের কথা। এ খবরে যাত্রীরা ক্ষুব্ধ হয়ে স্টেশন ম্যানেজারের রুমে জড়ো হয়ে শোরগোল শুরু করেন। এক পর্যায়ে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে যাত্রীদের বাগ্বিতণ্ডা হয়।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম থেকে প্রবাল এক্সপ্রেস বিকাল ৩টা ১০ মিনিটে কক্সবাজারের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেই ট্রেন কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রাম স্টেশনে এসে পৌঁছায় বিকেল পাঁচটার পর। এরপর এই ট্রেন প্রবাল এক্সপ্রেস হয়ে কক্সবাজারে যায়। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের অনেক দেরিতে আসায় কক্সবাজারগামী প্রবাল এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রা বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেয় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
নগরীর সদরঘাট এলাকার বাসিন্দা মোমেনা বেগম কালবেলাকে বলেন, কোনো ঘোষণা ছাড়াই প্রবাল এক্সপ্রেস টেনের যাত্রা বাতিল হয়েছে বলে জানতে পেরে সিদ্ধান্তহীনতায় পড়েছি। বৃষ্টিতে পরিবার নিয়ে স্টেশনে এসে এ খবর শুনতে পাই। যাত্রা বাতিলের এ ধরনের ঘোষণা রেল কর্তৃপক্ষকে আগে জানিয়ে দেওয়া উচিত।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শুক্রবার সকালে চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারগামী সৈকত এক্সপ্রেসের নির্ধারিত আসনের চেয়ে ৩০টি আসন বেশি বিক্রি করা হয় অনলাইনে, যা সকালে ট্রেন ছাড়ার আগমুহূর্তে ধরা পড়ে। পরে নতুন করে কোচ লাগাতে হয়। এতে ১ ঘণ্টা ১৫ মিনিট দেরিতে সকাল সাড়ে ৭টায় ছাড়ে। এই ট্রেন কক্সবাজার থেকে প্রবাল এক্সপ্রেস হয়ে ফিরে আসার কথা ছিল দুপুর ২টা ১০ মিনিটে। কিন্তু চট্টগ্রাম থেকে যাত্রায় বিলম্ব হওয়ায় সময়সূচি গরমিল হয়ে যায়।
রেলওয়ের কর্মকর্তাদের দাবি, বাতিল না করে যদি ট্রেন চালাতে হতো তাহলে সেই ট্রেন কক্সবাজার পৌঁছাত রাত ১১টায়। তখন কক্সবাজার স্টেশনে আরেক ঝামেলার পরিস্থিতি তৈরি হতো। এসব বিবেচনায় ট্রেনের যাত্রা বাতিল করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন ম্যানেজার আবু বকর সিদ্দিকি কালবেলাকে বলেন, বৈরী আবহাওয়া এবং সময়ের গরমিলের কারণে প্রবাল এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রা বাতিল হয়েছে। বিকেলে এ খবর পেয়েছি। সকালে পেলে স্টেশনে মাইকিংয়ের মাধ্যমে জানিয়ে দিতাম। কিন্তু বিকেলে যাত্রা বিরতির খবর শুনে যাত্রী ক্ষুব্ধ হয়ে শোরগোল শুরু করেন- যেটি স্বাভাবিক। তবে ভাঙচুরের কোনো ঘটনা ঘটেনি।
ভাড়া ফেরত দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ভাড়া তো অবশ্যই ফেরত পাবেন। যাত্রীরা অনলাইনের মাধ্যমে টিকিট নিয়ে থাকলে কিংবা কাউন্টার থেকে কিনলে ভাড়া ফেরত পাবেন। অপরদিকে প্রবাল এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রার সময়েও পরিবর্তন আসতে পারে।
এ বিষয়ে রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এসএম শহিদুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারগামী প্রবাল এক্সপ্রেস ট্রেনের যাত্রা হঠাৎ করে বাতিল হয়ে যায়। এ খবরে অপেক্ষমাণ যাত্রীরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। এতে অনেক যাত্রী ফিরে গেলেও কিছু যাত্রী বিশৃঙ্খলা তৈরি করেন। কোনো ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেনি। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
মন্তব্য করুন