

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ভোট গণনা পদ্ধতি নিয়ে শিক্ষক সংগঠনগুলোর মধ্যে পাল্টাপাল্টি মতামত প্রকাশ্যে এসেছে। ম্যানুয়ালি ভোট গণনার পক্ষে অবস্থান নিয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (জবিশিস), অন্যদিকে ওএমআর মেশিনের মাধ্যমে ভোট গণনার দাবি জানিয়েছে ইউনিভার্সিটি টিচার্স লিংক (ইউটিএল)। এ নিয়ে ক্যাম্পাসে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে।
বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) ক্যাম্পাসে পৃথক সংবাদ সম্মেলনে দুই শিক্ষক সংগঠন তাদের অবস্থান তুলে ধরে। জবিশিস নেতারা জানান, ম্যানুয়ালি ভোট গণনা হলে স্বচ্ছতা ও গ্রহণযোগ্যতা নিশ্চিত করা সহজ হবে। তাদের মতে, জকসুর মতো গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনে প্রযুক্তিগত জটিলতা এড়িয়ে সরাসরি ভোট গণনাই বেশি কার্যকর।
অন্যদিকে ইউটিএল নেতারা বলেন, ওএমআর মেশিন ব্যবহার করলে ভোট গণনায় সময় কম লাগবে এবং মানবিক ভুলের আশঙ্কা কমবে। তারা দাবি করেন, আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার নির্বাচন ব্যবস্থাপনাকে আরও গতিশীল ও নির্ভুল করবে।
এদিকে জকসু নির্বাচনকে সামনে রেখে বুধবার দুপুরে ‘মওলানা ভাসানী ব্রিগেড’ প্যানেল ১০ দফা ইশতেহার ঘোষণা করে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষাশহীদ রফিক ভবনের সামনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) প্রার্থী ইভান তাহসিব ইশতেহার পাঠ করেন।
ইশতেহারে নিরাপদ খাদ্য ও পানীয় নিশ্চিতকরণ, আবাসন সংকট নিরসন, দ্রুত দ্বিতীয় ক্যাম্পাস চালু, ঝুঁকিপূর্ণ ভবন সংস্কার, শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে ই-শাটল ও নিজস্ব বাস চালু এবং র্যাগিং বন্ধে হলের বাস কমিটিকে সক্রিয় করার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। পাশাপাশি ২০ টাকায় একবেলার মানসম্মত খাবার, ক্যাফেটেরিয়ায় আসনসংখ্যা বৃদ্ধি, নারী ও পুরুষের জন্য পৃথক ব্যায়ামাগার, মেন্টাল হেলথ কেয়ার সেন্টার ও পরিবেশবান্ধব ক্যাম্পাস গড়ার কথাও বলা হয়।
অন্যদিকে একই দিনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির কার্যনির্বাহী পরিষদ নির্বাচন–২০২৬-এর ফল ঘোষণা করা হয়। কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী না থাকায় নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান আনুষ্ঠানিকভাবে ফল ঘোষণা করেন।
ফল অনুযায়ী, শিক্ষক সমিতির সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. রইছ উদ্দীন এবং সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন মার্কেটিং বিভাগের অধ্যাপক ড. ইমরানুল হক। সহসভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন ফিন্যান্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মঞ্জুর মুর্শেদ ভূঁইয়া, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হয়েছেন ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বিলাল হোসাইন।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ভোট গণনা পদ্ধতি নিয়ে শিক্ষক সংগঠনগুলোর এই ভিন্নমত জকসু নির্বাচন প্রক্রিয়ায় নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
ভোট গণনা নিয়ে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক কানিজ ফাতেমা কাকলি বলেন, আমাদের আগে থেকে সিদ্ধান্ত ভোট গণনা মেশিনের মাধ্যমে হবে, কারণ ম্যানুয়ালি করলে অনেক সময়ের প্রয়োজন। আমরা জাকসু নির্বাচনে দেখেছি ম্যানুয়ালি ভোট গণনা করতে গিয়ে একজন শিক্ষক মারা গেছেন। তাছাড়া এতো সময় কোনো শিক্ষক ভোট গণনা করতে পারবেন না।
মন্তব্য করুন