চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের এল এ শাখার সাবেক সার্ভেয়ার সুনীল কান্তি দেব মহাজন। চাকরি জীবনে অবৈধ আয়ের উৎস গোপন করতে গৃহিণী স্ত্রীকে বানিয়েছেন মৌসুমী ব্যবসায়ী। স্ত্রীর নামে এই সম্পদ গড়লেও শেষ রক্ষা হয়নি সুনীলের। দুদকের জালে আটকা পড়েছেন সাবেক এই সার্ভেয়ার। দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলার মুখোমুখি হতে হয়েছে সুনীল কান্তি দেব মহাজনকে। অবৈধ সম্পদের এই মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে তার স্ত্রী স্মৃতি রানী দেবকে।
রোববার (২১ জানুয়ারি) দুদকের উপসহকারী পরিচালক মো. খাইরুল ইসলাম ভূঁইয়া বাদী হয়ে তাদের দুজনকে আসামি করে এই মামলা দায়ের করেন। বিষয়টি দুদক চট্টগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়-২ এর উপপরিচালক আতিকুল আলম কালবেলাকে নিশ্চিত করেছেন।
আতিকুল আলম জানান, মামলায় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের এল এ শাখার সাবেক সার্ভেয়ার সুনিল কান্তি দেব ও তার স্ত্রী স্মৃতি রানী দেবের বিরুদ্ধে ৬০ লাখ ৯১ হাজার ৭৭১ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়েছে।
দুদক সূত্র জানায়, তার জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদ অর্জন করার অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় ২০২২ সালের ২০ ডিসেম্বর সম্পদ বিবরণী জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন দুদক। ২০২৩ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি দুদকে সম্পদ বিবরণী জমা দেন স্মৃতি রানী দেব। সম্পদ বিবরণে, ৫ লাখ ৩১ হাজার ৮২১ টাকা সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়ের উৎসের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণভাবে ৬০ লাখ ৯১ হাজার ৭৭১ টাকার সম্পদ খুঁজে পায় দুদক।
দুদক অনুসন্ধানে জানা যায়, স্মৃতি রানী দেব নিজেকে একজন মৌসুমী ব্যবসায়ী এবং বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ঋতুভিত্তিক পণ্যসামগ্রী ক্রয়-বিক্রয় করে কিছু টাকা আয় করেছেন বলে উল্লেখ করলেও মূলত তিনি একজন পুরোদস্তুর গৃহিণী। তিনি মূলত তার স্বামী সুনীল কান্তি দেব মহাজনের অসাধু উপায়ে অর্জিত অবৈধ সম্পদকে বৈধতা দেওয়ার জন্য নিজেকে ব্যবসায়ী হিসেবে প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেছেন। অর্থাৎ তার স্বামী সুনীল কান্তি দেব মহাজন তার অবৈধ আয় দ্বারা স্ত্রীর নামে সম্পদ অর্জনে সহযোগিতা করেছেন। মূলত তিনি তার অবৈধ আয় দ্বারা পারস্পরিক যোগসাজশে তার স্ত্রী স্মৃতি রানী দেবের নামে স্থাবর সম্পদ-জমিসহ বাড়ি (যার দলিলমূল্য ৬৭ লাখ ৫ হাজার ৫০০ টাকা) গড়ে তুলেন। পরস্পর যোগসাজশে অবৈধ সম্পদ অর্জন করে ভোগ দখলে রাখার দায়ে দন্ডবিধির ১০৯ ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক।
মন্তব্য করুন