কিশোর-তরুণদের মধ্যে নিত্যনতুন টেকনোলজির প্রতি রয়েছে দুরন্ত আকর্ষণ। তারা নিজেদের জ্ঞানপিপাসার তৃষ্ণা নিবারণ করতে চায়! কিন্তু বাস্তবতা হলো, স্কুল-কলেজের গণ্ডির মধ্যে আধুনিক বিশ্বের নতুন নতুন টেকনোলজি সম্পর্কে শেখার সুযোগ সীমিত।
এ ঘাটতি পূরণে প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটির কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) ডিপার্টমেন্ট এক ব্যতিক্রমী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
সিএসই ডিপার্টমেন্টের শিক্ষার্থীদের পরিচালিত আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) ক্লাব এবং প্রোগ্রামিং ক্লাবের উদ্যোগে মঙ্গলবার (১৩ মে) মতিঝিল মডেল স্কুল এন্ড কলেজ (এমএমএসসি) শিক্ষার্থীদের জন্য আয়োজন করা হয়েছিল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই এবং প্রোগ্রামিং সংক্রান্ত এক প্রাণবন্ত সেমিনার।
এ সেমিনারে প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটির ফাইনাল ইয়ারের ছাত্ররা অত্যাধুনিক টেকনোলজি সম্পর্কে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের অবহিত করেন এবং তাদের পরবর্তী শিক্ষাজীবনে প্রোগ্রামিং এবং এআইকে কিভাবে কাজে লাগানো যায় সে ব্যাপারে পরামর্শ দেন।
সার্বিক দিকনির্দেশনা প্রদান করেন প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটির কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের শিক্ষক নাজমুল হাসান।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) অ্যালামনাই এবং প্রেসিডেন্ট ইউনিভার্সিটি সাবেক ডিন অধ্যাপক হাকিকুর রহমান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
আরও উপস্থিত ছিলেন মতিঝিল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ চৌধুরী এমদাদুল করিমসহ অন্য শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। বিকাল তিনটা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত এমএমএসসি মিলনায়তনে সেমিনার এবং প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠিত হয়।
সেমিনারের বিষয়বস্তু ছিল কম্পিউটার প্রোগ্রামিং এবং আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স কিভাবে মানবজীবনকে বদলে দিচ্ছে এবং কিশোর তরুণরা এখন থেকেই কিভাবে আগামী বিশ্বের জন্য সঠিকভাবে প্রস্তুতি দিতে পারে। একজন ভালো গবেষকের দৃষ্টিভঙ্গে কেমন থাকা উচিত, সেবিষয়েও আলোচনা হয়। আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স শিক্ষার্থীদের জ্ঞানের পরিধি, শেখার আগ্রহ ও ব্যক্তিগত সীমাবদ্ধতা বিশ্লেষণ করে প্রতিটি শিক্ষার্থীর উপযোগী পাঠ্যসামগ্রী তৈরি করতে সক্ষম। ফলে শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ গতিতে ও নিজের পছন্দমতো শেখার সুযোগ পাচ্ছেন। যেমন, ডুলিঙ্গো, কোর্সেরা ও খান অ্যাকাডেমির মতো প্ল্যাটফর্মগুলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে শেখার গতি নির্ধারণ করছে। এআই টুলস যেমন চ্যাটজিপিটি, গ্রামারলি বা গুগল ট্রান্সলেট শিক্ষার্থীদের লেখা ও ভাষাগত দক্ষতা উন্নত করতে সাহায্য করছে।
এছাড়া পরীক্ষার প্রস্তুতিতে এআই ভিত্তিক কুইজ, ফ্ল্যাশকার্ড এবং মকটেস্ট শিক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাস বাড়াচ্ছে। শিক্ষকরা ক্লাস পরিকল্পনায় এআইয়ের সাহায্যে সময় সাশ্রয় করতে এবং শিক্ষার্থীদের অগ্রগতি সহজে মূল্যায়ন করতে পারছেন। অবাধ তথ্যপ্রবাহের এযুগে নতুন প্রযুক্তির কল্যাণে পুরো বিশ্ব এখন হাতের মুঠোয়। সুতরাং শিক্ষার্থীদের প্রতিদিনের সাধারণ পাঠের পাশাপাশি নতুন গবেষণা, প্রযুক্তির ট্রেন্ড সম্পর্কেও জানা উচিত। টেকনোলজি সম্পর্কিত ব্লগ, নিউজ ও জার্নাল পড়ার অভ্যাস করা উচিত।
প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটির সিএসই ডিপার্টমেন্টের হেড এবং ইউনিভার্সিটির কোয়ালিটি অ্যাশুরেন্স সেল (আইকিউএসি) এর ডিরেক্টর প্রফেসর ড. শহিদুল ইসলাম খান নাঈম জানান যে ভবিষ্যতে প্রেসিডেন্সি ইউনিভার্সিটির পরিকল্পনা রয়েছে এ ধরনের উদ্যোগ ঢাকার ভিতরে ও বাইরে অন্য স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে নিয়মিত আয়োজন করা যেন পঞ্চম শিল্পবিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় দক্ষ জনগোষ্ঠী গঠনে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অবদান রাখতে পারে।
মন্তব্য করুন