মনিরামপুর (যশোর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৩ জুলাই ২০২৪, ০৯:৪৩ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

কনুই দিয়ে লিখে এইচএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে জাহিদুল

এইচএসসি পরীক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম। ছবি : কালবেলা
এইচএসসি পরীক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম। ছবি : কালবেলা

জাহিদুল ইসলামের হাত আছে, তবে কনুই পর্যন্ত। দুর্ঘটনায় তার দুই হাতের কনুইয়ের নিচের অংশ কেটে ফেলতে হয়। আঙুল না থাকায় স্বাভাবিকভাবে কিছু ধরতে পারত না। এরপরও থেমে থাকেনি। শারীরিক প্রতিবন্ধতাকে পেছনে ফেলে জীবনযুদ্ধে এগিয়ে চলছে সামনে। কনুইয়ের সাহায্যে লিখে সে এবার মানবিক বিভাগ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে।

যশোরের মনিরামপুর উপজেলার আগরহাটি গ্রামের মাহাবুবুর রহমানের ছেলে জাহিদুল ইসলাম।

জানা যায়, তৃতীয় শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় ২০০৮ সালে বাড়ির পাশে একটি তিন তলা ভবনের ছাদে খেলা করার সময় বিদ্যুৎস্পর্শে গুরুতর আহত হয় জাহিদুল ইসলাম। পরে ঢাকার একটি হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়। কেটে ফেলা হয় তার দুই কনুইয়ের হাতের নিচের অংশ। এ অবস্থায় সে দুই হাতের কনুই ব্যবহার করে তার সব কাজ করতে শিখে নেয়।

লেখালেখি দুঃসাধ্য হলেও লেখাপড়ার প্রয়োজনে দুই হাতের কনুই দিয়ে কলম চেপে লিখতে শেখা রপ্ত করে। চিকিৎসা শেষে চার বছর পর আবার তৃতীয় শ্রেণিতে ভর্তি হয়। লাউড়ি-রামনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাঠ সম্পন্ন করে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হয় সে। ধলিগাতী মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ২০২২ সালে এসএসসি পরীক্ষা অংশ নিয়ে ৪ দশমিক ৬ নম্বর পেয়ে ভর্তি হয় মনিরামপুর সরকারি কলেজে।

চলতি এইচএসসি পরীক্ষায় মনিরামপুর মহিলা কলেজের দ্বিতীয় তলায় ২০৭ (খ) নম্বর কক্ষে তার আসন পড়েছে। সেখানে অন্যান্য পরীক্ষার্থীদের সঙ্গে পরীক্ষা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

জাহিদুল ইসলাম বলেন, প্রথম দিকে অন্যের সহযোগিতা ছাড়া কোনো কাজ করতে গেলে অনেক কষ্ট হতো। কলম ধরে লেখা আয়ত্ব করতে সক্ষম হয়েছি। সাইকেল চালিয়ে কলেজে যাই। বন্ধুদের সঙ্গে ক্রিকেট খেলায়ও অংশ নিই। এখন নিজের সব কাজ নিজেই করতে পারি।

জাহিদুলের বাবা মাহাবুবুর রহমান জানান, বৈদ্যুতিক দুর্ঘটনার কারণে ছেলের দুই হাতের নিচের অর্ধেক অংশ কেটে ফেলতে হয়। তবে, তারা এ অবস্থার জন্য কখনো হতাশ হননি। কনুইয়ের সাহায্যে এখন সে নিজেই নিজের কাজ করতে পারে। পড়ালেখার প্রতি আগ্রহ থাকায় তাকে কলেজে ভর্তি করে দেওয়া হয়।

মনিরামপুর সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ জি এম রবিউল ইসলাম ফারুকী কালবেলাকে বলেন, শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে হার মানিয়ে এগিয়ে চলেছে জাহিদুল। মানবিক বিভাগ থেকে জাহিদুল চলতি এইসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে। পড়ার প্রতি তার ব্যপক আগ্রহ। সবাই সহযোগিতা করলে সে অনেক দূর যাবে।

মনিরামপুর মহিলা কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও কেন্দ্র সচিব আফরোজা মাহমুদ কালবেলাকে বলেন, কলেজের দ্বিতীয় তলায় ২০৭ (খ) কক্ষে সহপাঠীদের সঙ্গে বসেই পরীক্ষা দিচ্ছে জাহিদুল ইসলাম। কনুই দিয়ে লিখে বাংলা প্রথম ও দ্বিতীয় পরীক্ষা দিয়েছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ডাকসু নির্বাচন / প্রচারণার প্রথম দিনই শিবিরের ব্যানার ভাঙচুর

হিজাব বিতর্কে ভিকারুননিসার সেই শিক্ষিকা বরখাস্ত

এই ৩ ভুল করছেন? শত চেষ্টাতেও কমবে না মেদ

একদিন পর ভেসে উঠল ইসমাইলের মরদেহ

বিশ্বে প্রথমবার মানব শরীরে ইনসুলিন উৎপাদন

নির্বাচনের তারিখ নিয়ে আমাদের কোনো সমস্যা নেই : হাসনাত

ডাকসু নির্বাচনে চূড়ান্ত প্রার্থী ৪৭১

আমি বিবাহিত, ফেসবুকে প্রমাণ করার কিছু নেই : অপু

বাংলাদেশে শুরু হলো দ্বিতীয় আইসিএফপি সম্মেলন

মালয়েশিয়ায় নিবন্ধিত বাংলাদেশি কর্মীর সংখ্যা প্রকাশ

১০

ডাকসু নির্বাচনের প্রচারণা নিয়ে সাদিক কায়েমের পোস্ট

১১

বিটিভি চট্টগ্রামের বিশেষ নাটক ‘জিনের বাদশা’

১২

লন্ডনে তারেক রহমানের সঙ্গে খন্দকার মোশাররফ হোসেনের সাক্ষাৎ

১৩

ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি ৪৭০ জন

১৪

ব্যবসায়ী হত্যার দায়ে দুজনের মৃত্যুদণ্ড, একজনের যাবজ্জীবন

১৫

ড্রেনে গ্যাস জমে ভয়াবহ বিস্ফোরণ, কেঁপে উঠল আশপাশের এলাকা

১৬

আমিরকে নিয়ে এশিয়া কাপের জন্য দল ঘোষণা ওমানের

১৭

গাইবান্ধায় কবরস্থান থেকে ৩০টি কঙ্কাল চুরি

১৮

কাতারে জুমার নামাজের সময় দোকানপাট বন্ধ রাখার নির্দেশ

১৯

বরগুনায় অবৈধ ডায়গনস্টিক সেন্টারে অভিযান

২০
X