গাইবান্ধা প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৪ জুলাই ২০২৪, ০৫:৪২ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

বিপৎসীমার ওপরে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি

নদীর পানি বেড়ে প্লাবিত নিম্নাঞ্চল। ছবি : কালবেলা
নদীর পানি বেড়ে প্লাবিত নিম্নাঞ্চল। ছবি : কালবেলা

টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে গাইবান্ধায় ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা, করতোয়া, ঘাঘট সবগুলো নদীর পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) বিকেল ৩টায় গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী গত ২৪ ঘণ্টায় ৭০ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি ফুলছড়ি পয়েন্টে বিপৎসীমার ৭২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

অন্যদিকে ঘাঘট নদীর পানি ৯ সেমি বৃদ্ধি পেয়ে নতুন ব্রিজ এলাকায় বিপৎসীমার ২০ সেমি ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তবে তিস্তা ও করতোয়া নদীর পানি এখনো বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে নদীর তীরবর্তী এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়ে হাজারও মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।

জানা যায়, গত কয়েক দিনের ভারি বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পানির ঢলে জেলার সবগুলো নদ-নদীর পানি আবারও বাড়তে শুরু করে। এ কারণে নদীর তীরবর্তী ও নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হতে শুরু করেছে। এসব এলাকার বেশ কিছু ঘরবাড়ি ও বিভিন্ন ধরনের ফসল পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে হাজারও মানুষ। ফলে এসব এলাকার মানুষের মাঝে বন্যা আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। পানি বৃদ্ধির কারণে গাইবান্ধা সদর, সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলার নদীবেষ্টিত চরাঞ্চলে বেশ কিছু এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।

বিপৎসীমার ওপরে থাকায় ব্রহ্মপুত্র নদ বেষ্টিত সদর উপজেলার মোল্লারচর, কামারজানি, ঘাগোয়া, ফুলছড়ির ফজলুপুর, এরেন্ডাবাড়ি এলাকায় প্লাবিত হতে শুরু করেছে। পানিবৃদ্ধির ফলে নিচু এলাকার ঘরবাড়িগুলোতে পানি উঠেছে, প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। এসব এলাকার পানিবন্দি মানুষরা গৃহপালিত পশু-পাখি নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। অন্যদিকে তিস্তার পানি আবারও বাড়তে থাকায় সুন্দরগঞ্জের হরিপুর, কাপাসিয়া, তারাপুর এলাকা প্লাবিত হতে শুরু করেছে।

এদিকে বুধবার বিকেলে সাঘাটা উপজেলার ভরতখালী ইউনিয়নের দক্ষিণ উল্যা এলাকায় বাঁধের অন্তত ৩০ ফুট এলাকা ধসে যায়। এতে ভরতখালী ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকাসহ ঘুড়িদহ ইউনিয়নের চিনিরপটল, খামার পবনতাইড়, হলদিয়া ইউনিয়নের গোবিন্দপুর, বেড়া, গাড়ামারা, দীঘলকান্দি, পাতিলবাড়ী, গুয়াবাডী, কালুরপাড়া, কানাইপাড়া, কুমারপাড়া এবং জুমারবাড়ী ইউনিয়নের কাঠুর, থৈকরের পাড়া ও পূর্ব আমদির পাড়াসহ প্রায় ১৫টি মৌজা প্লাবিত হয়েছে। প্লাবিত এলাকার কমপক্ষে সাড়ে ১৫ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এসব এলাকার বিস্তীর্ণ জমির পাট, কাউন, তিল ও শাকসবজিসহ বর্ষাকালীন ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে। পরিবারের শিশু, বৃদ্ধ ও গবাদিপশু নিয়ে বিপাকে পড়েছে বন্যাকবলিতরা।

সাঘাটা ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন সুইট জানান, তার ইউনিয়নের ৬টি ওয়ার্ড প্লাবিত হয়ে প্রায় ৫ থেকে ৬ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। মানুষের এবং গো-খাদ্যের সংকটের আশঙ্কা করা হচ্ছে। এসব এলাকায় বন্যার্ত মানুষসহ গো-খাদ্যের সংকট দেখা দিয়েছে।

গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী হাফিজুল হক বলেন, ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে গাইবান্ধায় সবগুলো নদ-নদীর পানি বাড়ছে। তবে ব্রহ্মপুত্র ও ঘাঘট নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। সব ধরনের ঝুঁকি মোকাবিলায় পানি উন্নয়ন বোর্ড প্রস্তুত রয়েছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

অষ্টাদশ শিক্ষক নিবন্ধনের জাতীয় মেধাতালিকা প্রকাশ

রিজার্ভ ৩০ বিলিয়ন ডলার ছাড়াল

বাংলাদেশ-চীন-পাকিস্তান মিলে কোনো জোট হচ্ছে না : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

অযোগ্য নেতৃত্বে দায়িত্বশীলতা আশা করা বোকামি : জবি ছাত্রশিবির সভাপতির প্রতিবাদ

ইরানে ব্যবহৃত বাঙ্কার বোমা পরীক্ষার ভিডিও প্রকাশ করল যুক্তরাষ্ট্র

জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন চায় জামায়াত : ডা. শফিকুর রহমান

শেখ হাসিনা পালানোর ব্রেকিং নিউজ দিয়ে অ্যাওয়ার্ড পেলেন প্রেস সচিব

৮ আগস্ট বিপ্লব বেহাত হওয়ার দিবস : জুলাই ঐক্য

ফেসবুক লাইভ করে আত্মহত্যার চেষ্টা শ্রমিকদল নেতার

মিথ্যা মামলা-গ্রেপ্তার কমাতে সরকারের উদ্যোগ

১০

বিএসপির মহাসচিব আব্দুল আজিজের স্মরণসভা অনুষ্ঠিত

১১

ইসরায়েলি গুপ্তচর ছাড়াও যারা ইরানকে ঘায়েল করছে

১২

লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সে ডাকাতি, টাকা-স্বর্ণালংকার লুট

১৩

যে মন্দকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে সেই ভালো মানুষ হয় : আবদুস সালাম 

১৪

এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের পানি, মাস্ক ও কলম দিলেন বিএনপি নেতা

১৫

প্রবেশপত্র নিতে গিয়ে পরীক্ষার্থীরা দেখেন কলেজ বন্ধ

১৬

বাংলাদেশ-নেপাল যৌথ আয়োজনে নেপালে হতে যাচ্ছে ইন্টারন্যাশনাল ক্লাইমেট ক্যাম্প

১৭

‘আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী না’

১৮

‘কঠিন দিন’ পেরিয়ে ঘুরে দাঁড়াতে চায় বাংলাদেশ

১৯

গত তিন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে তদন্তের সিদ্ধান্ত

২০
X