শেখ হাসিনা ভালো থাকলে বাংলাদেশ ভালো থাকবে। তাই শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে হলে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। কারও সঙ্গে বিরোধ না করে সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে দলকে সুসংগঠিত করতে হবে। শেখ হাসিনা কষ্ট পান এবং দলের সুনাম নষ্ট হয় এমন সব বিতর্কিত কর্মকাণ্ড থেকে দলের নেতাকর্মীদের সবসময় বিরত থাকতে হবে। আপনারা শেখ হাসিনার জন্য দোয়া করবেন তিনি যাতে সুস্থ্ থেকে দেশটাকে সুন্দরভাবে পরিচালনা করতে পারেন।
পিরোজপুরের ইন্দুরকানীতে মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) বিকেল ৫টা থেকে রাত সাড়ে ৯টা অব্দি উপজেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত উপজেলা আওয়ামী লীগের এক বিশেষ বর্ধিত সভায় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ এ কে এম এ আউয়াল তার প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন।
তিনি আরও বলেন, ‘জননেত্রী শেখ হাসিনার মনোনয়নে আমি এই আসন থেকে দুইবার এমপি নির্বাচিত হয়েছি। নেত্রী আমাকে পছন্দ করেন। আমি তার নির্দেশে সারাজীবন আওয়ামী লীগের জন্য কাজ করে যেতে চাই।’
দলের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনাদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল ইন্দুরকানী উপজেলা পুনরায় পিরোজপুর-১ আসনের সঙ্গে সংযুক্ত হোক। সেটা হয়েছে। একটা কথা মনে রাখবেন দল একটি শক্তি, দল একটি বল। তাই দলের প্রতি সবাইকে আন্তরিক থাকতে হবে। বিপদে আপদে সবাই সবার পাশে থাকতে হবে। সামনে নির্বাচন। যেসব ওয়ার্ড ও ইউনিয়নগুলোতে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের কমিটি নেই সেসব কমিটি দ্রুত গঠন করতে হবে। তাহলেই দল সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী হবে।
উপজেলা আ.লীগের সভাপতি অ্যাড. এম মতিউর রহমানের সভাপতিত্বে ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান সেলিম হাওলাদারের সঞ্চালনায় ওই বর্ধিত সভায় প্রধান বক্তা হিসেবে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. কানাইলাল বিশ্বাস বলেন, এ দেশে সংবিধান অনুযায়ী যথাসময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। কোনো ষড়যন্ত্রই এ নির্বাচনকে বানচাল করতে পারবে না। এ আসনটি শেখ হাসিনাকে উপহার দিতে হলে আমাদের সাংগঠনিক ভিত মজবুত করতে হবে। আগামী ৫ মাসের মধ্যে দল চাঙ্গা করতে হবে। শুধু মুখে বক্তৃতার মধ্যে বললে হবে না, মাঠে জোরালোভাবে কাজ করতে হবে। সংগঠনের নেতাদের প্রতি অনেক কর্মীর ক্ষোভ আছে। তাই কর্মীদের ভালো মন্দ খোঁজ খবর নিতে হবে। তাদের সুযোগ-সুবিধা ও বিপদ-আপদে পাশে দাঁড়াতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ইন্দুরকানী উপজেলা পিরোজপুর-২ আসনের সঙ্গে সংযুক্ত থাকায় এখানে জেপির প্রার্থী মহাজোট থেকে এমপি হয়েছিলেন। যার কারণে এ উপজেলায় আওয়ামী লীগ সাংগঠনিকভাবে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সংসদীয় আসন পুনর্বিন্যাসে ইন্দুরকানী আবার পিরোজপুর-১ আসনের সঙ্গে সংযুক্ত হওয়ায় প্রাণ ফিরে পেয়েছেন এখানকার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। ইন্দুরকানীর মাটি আউয়াল মিয়ার ঘাঁটি। তাই পিরোজপুর-১ আসনের মানুষের প্রাণের দাবি এ আসনটিতে আলহাজ এ কে এম এ আউয়ালকে নৌকার মনোনয়ন দেওয়ার।
বিশেষ অতিথি জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও পৌর মেয়র আলহাজ হাবিবুর রহমান মালেক বলেন, সামনে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় কিন্তু খুবই অল্প। হাত গুটিয়ে বসে না থেকে আপনারা ওয়ার্ড পর্যায় থেকে দলকে সুসংগঠিত করেন। বিভিন্ন ইউনিয়ন ও হাটবাজারে দলীয় অফিস নিয়ে দলের নেতাকর্মীরা নিয়মিত বসেন। বিভিন্ন এলাকায় সভা সমাবেশের মাধ্যমে জনগণের সামনে আ.লীগ সরকারের উন্নয়নের চিত্রগুলো তুলে ধরেন। জনসাধারণকে বোঝান শেখ হাসিনা ভালো থাকলে দেশটা নিরাপদে থাকবে, দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে।
জেলা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়াউল আহসান গাজী তার বিশেষ অতিথির বক্তেব্যে বলেন, মাঠপর্যায়ের কর্মীরা ভালো থাকলে সংগঠন গতিশীল হয়। এজন্য উপজেলা পর্যায়ে যারা দায়িত্বশীল জায়গায় আছেন তাদের দলের তৃণমূল নেতাকর্মীদের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। প্রত্যেকটি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে দলের নির্ভরযোগ্য লোক দিয়ে কমিটি গঠন করতে হবে। ওয়ার্ড পর্যায় থেকে সংগঠন গতিশীল হলে আপনা আপনি দল চাঙ্গা হয়ে উঠবে। সবসময় একটা কথা মনে রাখবেন- আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকলে কোনো অপশক্তিই কিন্তু মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারবে না। আপনারা ভয় পাবেন না। মনে শক্তি ও সাহস নিয়ে মাঠে কাজ করবেন। যে কোনো প্রয়োজনে আমরা সবসময় আপনাদের পাশে থাকব।
সভায় অন্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন, জেলা আ.লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ ফিরোজ আহম্মেদ, কৃষিবিষয়ক সম্পাদক অ্যাড. দেলোয়ার হোসেন, ইন্দুরকানী উপজেলা আ.লীগের সহসভাপতি মাহামুদুল হক দুলাল, উপজেলা আ.লীগের সাবেক আহ্বায়ক ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মোবারক আলী হাওলাদার, উপজেলা আ.লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাঈদুর রহমান সাঈদ, উপজেলা মহিলা আ.লীগের সভানেত্রী ও উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান দিলরুবা মিলন নাহার, উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক মাতুব্বরসহ উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন আ.লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ বিভিন্ন ওয়ার্ড আ.লীগের নেতৃবৃন্দ।
মন্তব্য করুন