ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার ভাষানচর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব ও চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ওঠা অনিয়মের অভিযোগের সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে ৩ সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে।
সোমবার (১৫ জুলাই) দুপুরে উপজেলার ভাষানচর ইউনিয়ন পরিষদে এ ঘটনা ঘটে।
চেয়ারম্যানের নির্দেশে তার লোকজন দৈনিক মানবকণ্ঠের সদরপুর উপজেলা প্রতিনিধি মিজানুর রহমান, বেসরকারি স্যাটেলাইট টেলিভিশন মাইটিভির প্রতিনিধি শফিকুল ইসলাম জনি ও দৈনিক ভোরের পাতার প্রতিনিধি আরিফুজ্জামান হিমনের ওপর হামলা চালায়। হামলার শিকার সাংবাদিকরা স্থানীয় হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
হামলার শিকার সাংবাদিক মিজানুর রহমান বলেন, উপজেলার ভাষানচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ গোলাম কাউসার ও সচিব তামান্না আক্তারের বিরুদ্ধে ওই ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যদের অভিযোগের সত্যতা যাচাই করতে গেলে চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে আমিসহ তিন সংবাদকর্মীর ওপর অতর্কিত হামলা চালানো হয়। চেয়ারম্যান নিজে দাঁড়িয়ে থেকে তার লোকজন দিয়ে আমাদের ওপর আক্রমণ করা হয়।
তিনি বলেন, দুপুরে বিভিন্ন বিষয়ে পরিষদে গিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের সচিবের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তিনি কোনো কথা বলতে পারবে না বলে অপারগতা প্রকাশ করেন। পরে চেয়ারম্যান পরিষদেেএলে তার সঙ্গে কথা বলতে গেলে তিনি ফোন দিয়ে তার লোকজনকে ডেকে আনেন। তারা এসেই আমাদের ওপর হামলা চালায়।
মারধরের শিকার মাইটিভির প্রতিনিধি শফিকুল ইসলাম জনি বলেন, হামলার ঘটনার পর দ্রুত জেলা শহরে এসে জেলার সাংবাদিকদের বিষয়টি জানাই। এ কারণে থানায় অভিযোগ দিতে পারিনি। সাংবাদিক নেতাদের বিষয়টি জানানো হয়েছে, তারা যে সিদ্ধান্ত দিবেন, সেটাই করা হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত চেয়ারম্যান শেখ গোলাম কাউসার হামলার সঙ্গে তার জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করে কালবেলাকে বলেন, ‘সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটলেও আমি এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত নই। তবে কারা হামলা চালিয়েছে সেটা বলতে পারব না।’
এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মাহাবুবুল ইসলাম পিকুল কালবেলাকে বলেন, সাংবাদিকদের সঙ্গে এ ধরনের আচরণ কাম্য নয়। চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে হামলা চালানো হয়েছে। চেয়ারম্যানসহ যারা এ ঘটনায় জড়িত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রশাসনের প্রতি দাবি জানাই।
সদরপুর থানার ওসি মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, সাংবাদিকদের ওপর হামলার বিষয়টি জানা নেই। তবে হামলার শিকার সাংবাদিকরা অভিযোগ দিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সদরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মোরাদ আলী কালবেলাকে বলেন, বিষয়টি জানতে পেরেছি। চেয়ারম্যানকে ফোন দিয়েছিলাম, তার দাবি তিনি হামলার সঙ্গে জড়িত নন। তবে বিষয়টি তদন্ত করে দেখব। হামলার শিকার সাংবাদিকরা যদি আইনের সহযোগিতা চায় তাহলে তাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে।
মন্তব্য করুন