কোটা সংস্কার আন্দোলন ও কারফিউ জারির ফলে বিঘ্নিত হয়েছিল সারাদেশে যোগাযোগব্যবস্থা। সবজি সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছিল। এতে কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ার সবজি বাজারগুলোতে সবরকম সবজির ঘাটতি দেখা দিয়েছিল এবং দাম হয়ে উঠেছিল আকাশচুম্বী। যার ফলে বিপাকে পড়েছিলেন নিম্নআয়ের সাধারণ মানুষসহ নিম্নমধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্তরা।
তবে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে ওঠায় সবজি সরবরাহ ব্যবস্থাপনা সচল হয়ে উঠছে। এতে দাম কমতে শুরু করেছে অধিকাংশ সবজির। সবজির দাম আরও কমার সম্ভাবনার কথাও বলছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা। চড়া দামের সবজির বাজারে কিছুটা স্বস্তি ফিরছে বলে জানান ভোক্তারা। তবে এখনো পুরোপুরিভাবে আগের অবস্থায় ফিরে আসেনি সবজি বাজার।
শুক্রবার (২৬ জুলাই) উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, সবজি বাজারগুলোতে নানারকম সবজির সরবরাহ বাড়তে শুরু করেছে। কয়েকদিন আগেও যেসব সবজি চড়া দামে বিক্রি করেছেন সবজি ব্যবসায়ীরা সেসব সবজির দাম কিছুটা কমেছে। হাতেগোনা কয়েকটি সবজি ছাড়া অধিকাংশ সবজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে। দাম কমে প্রতি কেজি মিষ্টি কুমড়া ৩৫ থেকে ৪০ টাকায়, পেঁপে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা, বরবটি ৭০ থেকে ৮০ টাকায়, চাল কুমড়া ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়, ঢেঁড়স ৫৫ থেকে ৬০ টাকায়, চিচিঙ্গা ৫০ থেকে ৬০ টাকায়, পটোল ৫০ থেকে ৬০ টাকায়, কচুমুখী ৫০ থেকে ৬০ টাকায়, ধুন্দল ৫০ থেকে ৬০ টাকায়, শসা ৬০ থেকে ৭০ টাকায়, কাঁচামরিচ ১৬০ থেকে ১৭০ টাকায় ও টমেটো ১৯০ থেকে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া অন্যান্য শাকসবজির দামও কমেছে কিছুটা।
ব্রাহ্মণপাড়া সদর বাজারে সবজি কিনতে আসা মনিরুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, গত কয়েকদিন ধরে আন্দোলন ও কারফিউর কারণে যোগাযোগব্যবস্থা বিঘ্নিত হওয়ায় সবজির দাম বেড়ে সাধারণ মানুষের ক্রয়সীমার বাইরে যাওয়ার উপক্রম হয়েছিল। তবে এ দুয়েক দিনে সবজির সরবরাহ স্বাভাবিক হওয়ায় সবজির দাম কমতে শুরু করেছে। তবে এখনো সবজির দাম আগের অবস্থায় ফিরে আসেনি।
উপজেলার ধান্যদৌল বাজারে সবজি কিনতে আসা মোশাররফ হোসেন কালবেলাকে বলেন, কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সারাদেশে সহিংসতা ও কারফিউর কারণে সবজি বাজারে এর প্রভাব পড়েছিল। সবরকমের সবজির দাম বেড়ে গিয়ে ছিল। তবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে ওঠায় এখন সবজির দাম কমতে শুরু করেছে।
একই বাজারে সবজি কিনতে আসা আক্তার হোসেন নামের অন্য এক ক্রেতা বলেন, গত কয়েকদিনের তুলনায় সবজির দাম কিছুটা কমেছে ঠিকই, তবে এখনো সাধারণ মানুষের হাতের নাগালে আসেনি। সাধারণ মানুষের উপার্জন অনুযায়ী সবজির দাম আরও কম হওয়া উচিত। এখনো আন্দোলনের আগের বাজারদর ফিরে আসেনি।
সদর বাজারের সবজি বিক্রেতা ওয়াসিম মিয়ার সঙ্গে কথা হয়। তিনি কালবেলাকে বলেন, বাজারে সবজির সরবরাহ বেড়েছে। দু’একটা সবজি ছাড়া সবরকমের সবজির দামও কমেছে। সবজির সরবরাহ স্বাভাবিক থাকলে সবজির দাম আরও কমার সম্ভাবনা রয়েছে।
উপজেলার সাহেবাবাদ বাজারের সবজি বিক্রেতা বশির আহমেদ কালবেলাকে বলেন, কদিন আগের তুলনায় এখন সবজির দাম কিছুটা কমেছে। গত কয়েকদিন দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক না থাকায় সবজি সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হয়েছিল, তাই সবজির দাম বেড়ে গিয়ে ছিল।
ব্রাহ্মণপাড়া পশ্চিম বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক কাজল সরকার কালবেলাকে বলেন, গত কিছুদিন চড়া দামের কারণে স্বল্প আয়ের সাধারণ মানুষকে সবজি কিনতে হিমশিম খেতে হয়েছে। গত কয়েকদিনের তুলনায় বর্তমান বাজারে সবজির দাম অনেকটাই কমেছে। এতে সাধারণ মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরছে। তবে কোনো সবজি বিক্রেতা যাতে কৃত্রিম সংকট তৈরি করতে না পারে সে বিষয়ে বাজার কমিটি তৎপর রয়েছে।
মন্তব্য করুন