আগামীকাল ৩১ জুলাই ভারত-বাংলাদেশ ছিটমহল বিনিময়ের আট বছরপূর্তি। ২০১৫ সালের এ দিন মধ্যরাতে ভারত-বাংলাদেশের মোট ১৬২টি ছিটমহল পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙে মুক্তির আনন্দে মেতে নিজ নিজ দেশের মূল ভূখণ্ডের সঙ্গে সংযুক্ত হয়। পরিসমাপ্তি ঘটে ৬৮ বছরের বন্দিজীবনের। ঐতিহাসিক এ দিনটি স্মরণীয় করে রাখতে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে অবস্থিত ভারতের ১১১টি সাবেক ছিটমহলের মধ্যে সর্ববৃহৎ ছিটমহল কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার দাসিয়ারছড়ায় ব্যাপক কর্মসূচি নিয়েছে বিলুপ্ত ছিটমহলবাসী।
রোববার (৩০ জুলাই) রাতে বিলুপ্ত ছিটমহলের কালিরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে ৬৮টি মোমবাতি প্রজ্বলন শেষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সূচনা করা হবে। এরপর ১ আগস্ট সকাল ১১টায় বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা, আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে বলে সাবেক ছিটমহল বিনিময় আন্দোলনের নেতারা জানিয়েছেন।
জানা গেছে, ছিটমহল বিনিময়ের পর বন্দিজীবন থেকে মুক্ত, বঞ্চিত, অসহায় মানুষগুলোকে মূলধারায় যুক্ত করতে বিভিন্ন ধরনের উন্নয়ন পদক্ষেপ নিয়েছে সরকার।
যোগাযোগ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, খাদ্যসহ নাগরিকদের সামাজিক নিরাপত্তার মতো মৌলিক অধিকারের সবকিছুই পূরণ করেছে সরকার। দেশের অভ্যন্তরের অন্য ছিটমহলগুলোর মতো ফুলবাড়ী উপজেলার দাসিয়ারছড়া ছিটমহলেও ব্যাপক উন্নয়ন প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। উন্নয়নের ছোঁয়ায় পাল্টে গেছে দাসিয়ারছড়াবাসীর জীবনচিত্র।
বিলুপ্ত ছিটমহল দাসিয়ারছড়ার আয়তন ৬ দশমিক ৬৫ বর্গকিলোমিটার। ২০১৫ সালের ভারত-বাংলাদেশের যৌথ হেড কাউন্টিং অনুযায়ী, বর্তমানে এখানে ১ হাজার ৩৬৪ পরিবারে ৬ হাজার ৫২৯ জন বাস করে।
ছিটমহলের বাসিন্দা গোলাম মওলা, লিটন মিয়া ও আব্দুল হাকিম জানান, শেখ হাসিনার সরকার আমাদের ৬৮ বছরের অন্ধকার জীবন থেকে মুক্তি দিয়েছে। বিলুপ্ত ছিটমহলের প্রতিটি ঘরে পৌঁছে দিয়েছে উন্নয়নের আলো।
বাংলাদেশ-ভারত সাবেক ছিটমহল বিনিময় আন্দোলনের দাসিয়ারছড়া ইউনিটের সভাপতি আলতাফ হোসেন জানান, গত আট বছরে ছিটমহলের রাস্তাঘাট, ব্রিজ-কালভাট, স্কুল-কলেজ ও ঘরে ঘরে বিদ্যুৎসহ ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। তবে আমাদের দাসিয়ারছড়াকে স্বতন্ত্র ইউনিয়ন ঘোষণা করা হলে আরও ভালো হতো।
ইউএনও সুমন দাস জানান, বিলুপ্ত ছিটমহলে সরকারের নেওয়া পরিকল্পনার বেশিরভাগ এরই মধ্যে বাস্তবায়িত হয়েছে। জমি ক্রয়-বিক্রয়ের সমস্যা ছিল, তা-ও সমাধান হয়েছে। এখন ছিটমহলবাসী জমি রেজিস্ট্রি করতে পারছে। উন্নয়ন অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে যা যা করার, সেসব পদক্ষেপই নেবে সরকার।
মন্তব্য করুন