সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২২ আগস্ট ২০২৪, ০৯:৫৯ পিএম
আপডেট : ২২ আগস্ট ২০২৪, ১০:১২ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

সেরাজুলের শরীরে ৭০ গুলি, নিভে গেছে চোখের আলোও

পুলিশের গুলিতে ঝাঁজরা হয়ে যাওয়া সেরাজুলের শরীর। নিভে গেছে তার চোখের আলোও।  ছবি : কালবেলা
পুলিশের গুলিতে ঝাঁজরা হয়ে যাওয়া সেরাজুলের শরীর। নিভে গেছে তার চোখের আলোও। ছবি : কালবেলা

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশ নিয়ে পুলিশের গুলিতে ঝাঁজরা হয়ে গেছে কলেজছাত্র সেরাজুলের শরীর। নিভে গেছে তার চোখের আলো। তারপরও এতটুকু দুঃখ নেই। শরীরের রক্তে ধুয়ে গেছে সব ধরনের বৈষম্য—এতেই প্রশান্তি দরিদ্র মৎস্যজীবীর ছেলে সেরাজুলের।

সেরাজুল ইসলাম (২১) সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার জালালপুর ইউনিয়নের সৈয়দপুর গ্রামের মাছ ব্যবসায়ী জেন্দার আলীর ছেলে। তিনি উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে সবেমাত্র স্নাতকে ভর্তি হয়েছেন। শরীরে ৭০টি বুলেটের ক্ষতচিহ্ন নিয়ে এখনো কাতরাচ্ছেন তিনি।

গত ৪ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চূড়ান্ত মুহূর্তে এনায়েতপুর থানার সামনে বিক্ষোভে অংশ নেন সেরাজুল। একপর্যায়ে পুলিশ ছররা গুলিবর্ষণ করলে তার চোখসহ শরীরে বিভিন্ন অংশে গুলিবিদ্ধ হয়। সৈয়দপুরের মাছ ব্যবসায়ী জেন্দার আলীর বাড়িতে সরেজমিন দেখা যায় শরীরে বিভিন্ন স্থানে ক্ষতের যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন কলেজ ছাত্র সেরাজুল। পাশেই মা রোজিনা খাতুন বসে ছেলের কষ্ট দেখে অঝোরে কাঁদছেন।

সেরাজুলের বাবা জেন্দার আলী বলেন, বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালনকালে পুলিশ উপর্যুপরি গুলিবর্ষণ করে। আর সে গুলিতেই ঝাঁজরা হয়ে যায় সেরাজুলের শরীর। রক্তাক্ত শরীরে রাস্তার ওপর লুটিয়ে পড়লে বন্ধুরা তাকে উদ্ধার করে খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।

সেখানকার চিকিৎসকরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বলেন, সেরাজুলের চোখ, মাথা, বুক, পাসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে ৭০টি বুলেট বিদ্ধ হয়েছে। একটি বুলেট বাঁ চোখে বিদ্ধ হয়েছে। চিকিৎসকদের পরামর্শে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়। ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে গুলি বের করা হলেও বাঁ চোখের আলো নিভে যায় সেরাজুলের। মা রোজিনা খাতুন বলেন, আমরা অনেক কষ্ট করে ছেলেকে পড়াশোনা করিয়েছি। আজ আন্দোলনে চোখ হারিয়ে ওর ভবিষ্যৎটা অন্ধ হয়ে গেছে। আমাদের ছেলেটা চিরতরে পঙ্গু হয়ে গেল। আমরা আল্লাহর কাছে এর বিচার দিলাম।

সেরাজুল বলেন, তার স্বপ্ন ছিল লেখাপড়া শেষ করে চাকরি করে দরিদ্র বাবা-মায়ের অভাব ঘোচাবে। কিন্তু কোটা প্রথা তার মতো অনেকের স্বপ্নের পথেই কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। আর এ কারণেই ছাত্রসমাজের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যুক্ত হন তিনি। সারা দেশের ছাত্রসমাজ সম্মিলিতভাবে কোটা নামের প্রাচীর সরিয়েছে। গড়ে উঠবে মানবিক এক বাংলাদেশ।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে আগুন

এবার তিশার বিরুদ্ধে মামলা হচ্ছে

আইটেম গানে শাকিবের নায়িকা, সমালোচনার কড়া জবাব

বিপিএল: বিদেশি লেগস্পিনারকে দলে ভেড়াল চট্টগ্রাম

চট্টগ্রাম বন্দরের ৩ প্রবেশপথ অবরোধ

এক লাফে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ শহরে উঠে এলো ঢাকা

পেছাতে পারে জকসু নির্বাচন, প্রার্থীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া

রশির সূত্র ধরে যেভাবে বেরিয়ে এলো শিশু জায়ান হত্যার রহস্য

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের তুমুল সংঘর্ষে আহত ২৭

ভূমিকম্পপ্রবণ ঢাকা হতে যাচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় শহর

১০

তপশিল ঘোষণার পর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরও ভালো হবে : সিইসি

১১

জামায়াতের মনোনয়ন পেলেন আলোচিত ড. ফয়জুল হক

১২

তৌসিফের নায়িকা মিস ওয়ার্ল্ড নীলা, পর্দায় আসছে নতুন জুটি

১৩

এবার নিজেকে ‘গার্ডিয়ান অব চিটাগাং’ ঘোষণা শাহজাহান চৌধুরীর

১৪

বার্সাকে উড়িয়ে দিল চেলসি, লেভারকুসেনে ‘স্তব্ধ’ সিটি

১৫

স্বামীর বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ, ১৪ বছরের সংসারের ইতি টানলেন সেলিনা

১৬

লক্ষ্মীপুরে বাসে আগুন

১৭

আজ কী আছে ভাগ্যে, জেনে নিন রাশিফলে

১৮

জানা গেল কবে বিয়ে করবেন রোনালদো, কোথায় হবে অনুষ্ঠান

১৯

বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কে নতুন অধ্যায় শুরু করতে প্রস্তুত ফ্রান্স

২০
X