রাবিদ মাহমুদ চঞ্চল, আশাশুনি প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০১ আগস্ট ২০২৩, ০৩:৪১ পিএম
আপডেট : ০১ আগস্ট ২০২৩, ০৪:১২ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

সাতক্ষীরা-আশাশুনি সড়ক এখন মরণ ফাঁদ

সাতক্ষীরা-আশাশুনি সড়কে সারি সারি দাঁড়িয়ে কঙ্কালসার গাছগুলো। ছবি : কালবেলা
সাতক্ষীরা-আশাশুনি সড়কে সারি সারি দাঁড়িয়ে কঙ্কালসার গাছগুলো। ছবি : কালবেলা

মাইলের পর মাইল সারি সারি দাঁড়িয়ে আছে কয়েকশ কঙ্কালসার গাছ। হালকা বাতাসে প্রাণহীন গাছের শুকনো ডালগুলো হুটহাট ভেঙে পড়ে রাস্তায়। ফলে সাতক্ষীরা-আশাশুনি সড়কের বড় একটি অংশ এখন এক মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে।

গাছের শাখা-প্রশাখা ভেঙে গায়ে পড়ার এক আতঙ্ক মাথায় নিয়ে জনগুরুত্বপূর্ণ এ সড়কে চলাচল করতে বাধ্য হচ্ছে মানুষ। কেবল আতঙ্ক নয়, মরা এসব গাছের ডাল ভেঙে পড়ে দুর্ঘটনাও ঘটেছে কয়েকবার। দিনে দিনে প্রাণহানির ঝুঁকি বেড়েই চলছে।

আরও পড়ুন : সাতক্ষীরায় বাঁশের সাঁকোয় পারাপার, শঙ্কায় এলাকাবাসী

সম্প্রতি মরা গাছের ডাল ভেঙে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ব্রহ্মরাজপুর ইউনিয়নের মেল্লেকপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল খলিল হাজীর ছেলে ফারুক হোসেন। ভেঙে গেছে ফারুক হোসেনের মেরুদণ্ডের হাড়।

গেল ঈদুল আজহার দিন সন্ধ্যায় আশাশুনি থেকে নিজ বাড়িতে ফেরার পথে সাতক্ষীরা-আশাশুনি সড়কের কোমরপুরে একটি মরা শিশু গাছের (রেইন ট্রি) ডাল ডেঙে গায়ে পড়ে গুরুতর আহত হন তিনি। এ সময় ক্ষতিগ্রস্ত হয় তার মোটরসাইকেলটিও।

সরেজমিনে সাতক্ষীরা-আশাশুনি সড়কের সাতক্ষীরা আলিয়া মাদ্রাসা মোড় থেকে যতনমালী মোড় পর্যন্ত কয়েক কিলোমিটার রাস্তা ঘুরে দেখা গেছে, সড়কের দুই ধারে সারি সারি মরা গাছের কঙ্কালসার দাঁড়িয়ে আছে। যা ক্রমেই ক্ষয়প্রাপ্ত হচ্ছে প্রকৃতির নিয়মে। আর ভয়টা সেখানেই। এসব মরা গাছের ডাল আকস্মিকভাবেই ভেঙে পড়ে সড়কের ওপর।

ধুলিহর-ব্রহ্মরাজপুর এলাকার বাসিন্দা মেহেদী হাসান শিমুল জানান, প্রায় ৩০ বছর আগে এই সড়কের দুপাশে শিশু (রেইনট্রি) গাছ রোপণ করে জেলা পরিষদ ও স্থানীয় বাসিন্দারা। বছরখানেক আগে সড়কটির বেশকিছু স্থানের গাছ শুকিয়ে যেতে থাকে। একপর্যায়ে শত শত গাছ মারা যায়। সামান্য ঝড় বৃষ্টিতেই গাছের ডাল ভেঙে পড়ে। অনেক সময় সাইকেল, মোটরসাইকেল, ইজিবাইকসহ অন্যান্য যানবাহনে চলাচলকারী ও পথচারীরাও দুর্ঘটনার শিকার হন। আমরা দীর্ঘদিন ধরে সংশ্লিষ্টদের বলছি গাছগুলো অপসারণ করতে, কিন্তু এ বিষয়ে কোনো উদ্যোগ এখনো চোখে পড়েনি। হয়তো কর্তৃপক্ষ জীবনহানির অপেক্ষা করছে।

আরও পড়ুন : এক লাখ গাছ লাগানোর উদ্যোগ সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের

স্থানীয়রা জানান, গাছগুলোর বয়স অনেক। রোগ বা পোকার আক্রমণে গাছগুলো মারা যাচ্ছে। ডাল ভেঙে পড়ে চলাচলের বিঘ্ন ঘটছে। একটু বাতাস হলেই ডাল ভেঙে সড়কের ওপর পড়ে।

সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ব্রহ্মরাজপুর ইউপির চেয়ারম্যান মো. আলাউদ্দীন বলেন, গাছগুলো এখন মানুষের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিষয়টি জেলা পরিষদকে জানানো হয়েছে। কিন্তু জেলা পরিষদ দেখছি বা ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে সময় ক্ষেপণ করলেও দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না বলে জানান তিনি।

এদিকে সাতক্ষীরা সামাজিক বন বিভাগ জানিয়েছে, গাছগুলো মারা যাওয়ার বিষয়ে বাংলাদেশ বন গবেষণা ইনস্টিটিউটে চিঠি দেওয়া হয়। সেখানকার একটি টিম এসে কাঠ ও পোকার নমুনা নিয়ে গেছে। প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে ‘লাখ্যা’ নামের এক ধরনের পোকার আক্রমণে গাছগুলো মারা যাচ্ছে। রিপোর্ট এলে সঠিক কারণ জানা যাবে। এ ছাড়া লবণাক্ততা বেড়ে যাওয়াও গাছগুলো মারা যাওয়ার অন্যতম কারণ।

এ বিষয়ে সাতক্ষীরা জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম ও জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলে দুজনের কেউই ফোন রিসিভ করেননি।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

তৃতীয় দিনের মতো চলছে টাইফয়েড টিকাদান কর্মসূচি

ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের দল ঘোষণা নিউজিল্যান্ডের

বাসে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ, চালক আটক

ফ্রেঞ্চ ফ্রাই নিয়মিত খেলেই কি বাড়তে পারে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি?

যেসব বিভাগ থেকে বিদায় নিয়েছে মৌসুমি বায়ু

ভারতের কাশির সিরাপে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সতর্কবার্তা

এক ক্লিকেই জামিন আদেশ যাবে কারাগারে: আইন উপদেষ্টা

ভাইয়ের চাপাতির কোপে ছোট ভাই নিহত

রুক্মিণীকে নিয়ে যা বললেন চিরঞ্জিৎ চক্রবর্তী

বিকাশ-নগদ-রকেটে লেনদেনের নতুন মাধ্যম, চার্জ কত

১০

ফুটবল খেলা নিয়ে সংঘর্ষ, বেরোবির ৮ শিক্ষার্থী বহিষ্কার 

১১

সাবেক রাষ্ট্রপতির বাড়ি এখন কিন্ডারগার্টেন স্কুল

১২

রাজধানীতে বাসের ধাক্কায় ক্রিকেটার নিহত

১৩

সর্বকালের সব রেকর্ড ভেঙে আবার বাড়ল স্বর্ণের দাম

১৪

অভিনয়ের বাইরে অন্য এক কৃতি

১৫

একেবারে শেষ মুহূর্তে গোল হজম, জিততে পারল না বাংলাদেশ

১৬

কফ সিরাপ কি স্বাস্থ্যের জন্য নিরাপদ, যে পরামর্শ দিলেন চিকিৎসক

১৭

অনড় এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা, আজ ‘মার্চ টু সচিবালয়’ কর্মসূচি

১৮

৬ দফায় যত বাড়ল স্বর্ণের দাম

১৯

ইলেকট্রনিকস ও কমার্শিয়াল বিভাগে চাকরি দিচ্ছে দারাজ

২০
X