পদ্মা সেতু নির্মাণের উদ্দেশ্যে মোবাইল ফোনে ব্যবহৃত ব্যয়ের ওপর আরোপিত এক শতাংশ সারচার্জ বাতিলের দাবিতে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেছে ভোক্তা অধিকার সংস্থা ‘কনশাস কনজ্যুমার্স সোসাইটি’ (সিসিএস)।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) হাইকোর্টের বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি মো. হামিদুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে এই রিট দায়ের করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এ কে এম আজাদ হোসেন। এতে বাদী হিসেবে রয়েছেন সিসিএস-এর নির্বাহী পরিচালক পলাশ মাহমুদ। আইনজীবী আজাদ হোসেন জানান, আগামী সপ্তাহে রিটটির শুনানি হতে পারে।
রিটের আগে গত ৪ জুন সরকারের বিভিন্ন সংস্থা ও মোবাইল অপারেটরদের কাছে সারচার্জ প্রত্যাহারের দাবিতে আইনি নোটিশ পাঠায় সিসিএস। যাদের মধ্যে রয়েছেন অর্থ মন্ত্রণালয়, ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়, আইন মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ, অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগ, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর), বিটিআরসি এবং চারটি মোবাইল অপারেটর— গ্রামীণফোন, বাংলালিংক, রবি ও টেলিটক।
নোটিশে বলা হয়, ২০১৬ সালে ‘উন্নয়ন সারচার্জ ও লেভি (আরোপ ও আদায়) আইন, ২০১৫’-এর আওতায় মোবাইল ফোনে ব্যবহৃত খরচের ওপর এক শতাংশ হারে সারচার্জ আরোপ করে সরকার। এই অর্থ পদ্মা সেতু নির্মাণে ব্যয়ের অংশ হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। তবে ২০২২ সালে সেতুটি উদ্বোধনের পরও ওই সারচার্জ চালু রয়েছে, যা এখন পর্যন্ত ভোক্তাদের কাছ থেকে আদায় করা হয়েছে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকারও বেশি।
সিসিএস আরও জানায়, সংশ্লিষ্ট আইনের ৪ নম্বর ধারা অনুযায়ী সারচার্জ আরোপের জন্য নির্দিষ্ট মেয়াদ নির্ধারণের বাধ্যবাধকতা থাকলেও ২০১৬ সালের প্রজ্ঞাপনে কোনো মেয়াদ নির্ধারণ করা হয়নি। ফলে এক দশক ধরে এই আদায় চলমান থাকলেও তা বন্ধে সরকার কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। ফলে এটি আইনপরিপন্থী এবং ভোক্তাদের অর্থনৈতিক স্বার্থের পরিপন্থী।
পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হলেও মোবাইল ব্যবহারকারীদের ওপর এই কর অব্যাহত থাকায় বিষয়টিকে ‘বেআইনি’ এবং ‘ভোক্তাবিরোধী’ উল্লেখ করে আদালতের হস্তক্ষেপ চেয়েছে সিসিএস। সংস্থাটির দাবি, প্রকল্প শেষ হওয়ার পরও এই সারচার্জ চালু রাখা জনস্বার্থের পরিপন্থী। এজন্য তারা আইনি প্রতিকার চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছে।
মন্তব্য করুন