আন্দোলনকারীদের তোপের মুখে সিলেট কানাইঘাটের সুরমা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক সাজিদ মিয়া পদত্যাগ করেছেন। সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুর ৩টায় ছাত্র এবং এলাকাবাসীর বিক্ষোভের মুখে তিনি পদত্যাগ করেন।
সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার রাজাগঞ্জ ইউনিয়নে অবস্থিত সুরমা স্কুলে নানা অনিয়মের অভিযোগ ছিল সাজিদ মিয়ার বিরুদ্ধে।
আন্দোলনরত ছাত্ররা সোমবার সকাল থেকে স্কুল ক্যাম্পাসে গিয়ে অবস্থান নেয়। এ সময় শত শত ছাত্র সাজিদ মিয়ার অপসারণের দাবিতে স্লোগান দেয়। দুপুর ১২টার পরে আন্দোলনরত ছাত্রদের সঙ্গে যোগ দেন এলাকার সর্বস্তরের মানুষ।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে তাৎক্ষণিক স্কুলের শিক্ষার্থীদের ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়। এরপর আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা সাজিদ মিয়ার কার্যালয়ে সামনে অবস্থান নেন। এসময় সাদা কাগজে লেখা পদত্যাগপত্রে সাজিদ মিয়া স্বাক্ষর করেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সোমবার সকাল থেকেই বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা সুরমা স্কুল মাঠে অবস্থান নেন। এসময় সাজিদ মিয়া তার পরিবারের লোকজন দিয়ে সাধারণ ছাত্রদের দমানোর চেষ্টা চালান। এসময় বেশ উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে এলাকার সর্বস্তরের মানুষ এসে যোগ দেন আন্দোলনরত ছাত্রদের সঙ্গে।
জানা গেছে, সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের একটি সুরমা উচ্চ বিদ্যালয়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। বিগত দিনে এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সুনাম থাকলেও নানা কারণে তা এখন তলানিতে পৌঁছে গেছে বলে অভিযোগ অভিভাবক ও সচেতন মহলের।
বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক বিনোদ রঞ্জন তালুকদার অবসরে যাওয়ার পর প্রায় ১৫ বছর ধরে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব নেন সাজিদ মিয়া৷
দায়িত্ব পেয়েই নানা অনিয়মে জড়িয়ে পড়েন তিনি। নিজের পরিবার তান্ত্রিক করে ক্রমশ; শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে রূঢ় আচরণসহ নানা অনিয়মে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। শিক্ষা ব্যবস্থা উন্নতি করণের চেয়ে, বিকেন্দ্রীকরণ হয়েছে বেশি এমন অভিযোগও তার বিরুদ্ধে। যে কারণে আগের তুলনায় শিক্ষার মানের দিকে প্রতিষ্ঠানটি পিছিয়ে যাওয়ায় অভিভাবক মহলেও ক্ষোভ বিরাজ করে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অনেক শিক্ষক-শিক্ষিকাও সাজিদ মিয়ার অনিয়মের বিষয়গুলো সামনে নিয়ে এসেছেন।
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের পরিবর্তনের স্রোতে এবার সিলেটের কানাইঘাট উপজেলার সুরমা উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের চেয়ারেও পদত্যাগের ধাক্কা লাগলো।
মন্তব্য করুন