হাজারও মানুষের পদচারণায় মুখরিত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবার গোসাইস্থল পদ্মবিল। ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের গা ঘেঁষা কসবা উপজেলার সিনাই নদীর তীরে অবস্থিত পদ্মবিল। কর্মব্যস্ত একঘেয়েমি যান্ত্রিক জীবনে জ্বালা জুড়াতে একবার হলেও ঘুরে আসতে পারেন আবহ বাংলার অপরূপ প্রকৃতির প্রতিচ্ছবি পদ্মবিল থেকে। ভাসমান পদ্মের রূপশোভা দেখতে প্রতিদিনই দূর-দূরান্ত থেকে সৌন্দর্যপিপাসুরা ছুটে আসছেন এখানে। চোখ জুড়ানো এ সৌন্দর্য শুধু প্রকৃতিপ্রেমীদেরই নয়, পরিবেশ সচেতন মানুষদেরও বিমোহিত করছে।
উপজেলা শহর থেকে বাড়াই গোপীনাথপুর চন্ডিদোয়ার হয়ে যেতে হবে গোসাইস্থল পদ্মবিলে। ঘুরে বেড়ানোর জন্য ওখানে অনেক ছোট ও মাঝারি নৌকা ভাড়া পাওয়া যায়। ভাড়া ২০০ থেকে ৩০০ টাকার মধ্যে। পর্যটক বেশি হলে ৪০০ টাকা দিতে হতে পারে ভাড়া। মাঝিরাই পুরো পদ্মবিল ঘুরিয়ে দেখায় পর্যটকদের।
আরও পড়ুন : নদী না বাঁচলে বাংলাদেশ বাঁচবে না
সরেজমিনে দেখা যায়, বিস্তৃত জলরাশির বুকে দল বেঁধে ফুটে আছে চোখ জুড়ানো পদ্ম। যতদূর চোখ যায় সবুজ গাছের সঙ্গে মিশে হাতছানি দিচ্ছে জলরাশির পদ্ম আর পদ্ম। এখানকার মনভোলানো দৃশ্য দেখে মুগ্ধ হবেন যে কেউ। তবে বিলে যাওয়ার উপযুক্ত সময় ভোর না হয় বিকেলকেই বেছে নিতে হবে।
হোগলাবন ও কচুরিপানার মধ্য দিয়ে ছোট ডিঙি নৌকায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা ঘুরে বেড়াতে আর পছন্দের ছবি তুলতে পারেন। মেতে উঠতে পারেন সেলফি উৎসবে। পদ্মপাতার জলে বিলিয়ে দিতে পারেন নিজেকে। সঙ্গে সামান্য রোদ আর মেঘ-বৃষ্টির খেলা হলে তো কথাই নেই। বিলে ফুটে থাকা অজস্র পদ্ম ছবির মতো সাজানো। বিলটি আকারে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার হেক্টর হলেও ৪০-৫০ হেক্টর সীমানায় ফোটে পদ্মফুল। বাকি অংশে রয়েছে হোগলা, কচুরিপানা ও শেওলা।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরকারি কলেজের এমবিএ’র শিক্ষার্থী ফারুক আহমেদ বলেন, বন্ধু ও ছোট ভাইবোনদের নিয়ে পদ্মবিলে ঘুরতে এসেছি। নগরজীবনের যান্ত্রিক দশা থেকে মুক্তি পেতে প্রকৃতির মাঝে বেড়াতে আসা। বিলের অপরূপ সৌন্দর্য দেখে আমি খুশি। যে কেউ এখানে পরিবার, আত্মীয়-স্বজন নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন।
স্থানীয় মাঝিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বছরে তিন মাস বিলে পানি থাকে, তখন পদ্ম ফোটে। এই সময়টাতে অনেক পর্যটক ঘুরতে আসে। তখন বিলে নৌকায় করে পর্যটকদের ঘুরিয়ে উপার্জন করি। বছরের বাকি সময়ে অন্যান্য কাজের প্রতি ঝুঁকতে হয়।
বিলের সৌন্দর্য দেখে আরও বেশ কয়েকজন ভ্রমণপ্রেমী মুগ্ধতা প্রকাশ করেন। তাদের মন্তব্য, ‘প্রাকৃতিক সৌন্দর্যমণ্ডিত এই এলাকা রক্ষণাবেক্ষণে সরকারের পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। এর মাধ্যমে নতুন প্রজন্ম প্রকৃতিপ্রেমী হিসেবে গড়ে উঠবে। একইসঙ্গে পর্যটনের সম্ভাবনা দেখে দেবে।’
মন্তব্য করুন