মঠবাড়িয়া (পিরোজপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ০১:৩৪ পিএম
আপডেট : ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:৪৬ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

রাস্তার আলোতে পড়েও মারুফ হতে চায় ইসলামি বক্তা

মঠবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সামনে পড়ছে শিশু মারুফ। ছবি : কালবেলা
মঠবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সামনে পড়ছে শিশু মারুফ। ছবি : কালবেলা

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় সড়কের বিদ্যুতের বাল্বের আলোর নিচে বসে পড়াশোনা করে শিশু মারুফ ইসলাম। বড় হয়ে একদিন ইসলামিক বক্তা হতে চায় মারুফ। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মারুফ আল-হেরা মডেল মাদ্রাসার প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থী। তার গ্রামের বাড়ি সদর ইউনিয়নের মাঝের পোল এলাকায়। পৌর শহরের নিউমার্কেট এলাকায় বাসা ভাড়া নিয়ে থাকেন তার মা। গর্ভে থাকা অবস্থায় সাত মাস বয়সে মারুফকে ফেলে রেখে বাবা চলে যান। মা লাইলী বেগম দুই সন্তানকে নিয়ে অভাব-অনটনে সংসার চালাচ্ছেন।

চা, পান, সিগারেট ও বিস্কুট বিক্রি করে দৈনিক যে আয় হয়, তা দিয়ে খেয়ে না-খেয়ে কোনোরকমে চলে সংসার। ৬ বছরের এই ছোট্ট শিশু মাকে সহযোগিতা করার জন্য ছুটে আসে প্রেসক্লাবের সামনে মায়ের চায়ের দোকানে। মায়ের চায়ের দোকানের কাজের সহযোগিতা করে। ক্রেতাদের ভিড় কমলে পড়াশোনায় ব্যস্ত হয়ে পড়ে। কখনো প্রেসক্লাবের সিঁড়িকে ‘রিডিং রুম’ বানিয়ে ফেলে।

মারুফের মা লাইলী বেগম কালবেলাকে বলেন, নিজের সন্তান বলে বলছি না, মারুফ ভদ্র ও পরিশ্রমী ছেলে। ভালো কোথাও প্রাইভেট পড়তে দিতে পারিনি। পড়ার প্রতি অদম্য আগ্রহ ও মেধা দেখে প্রেসক্লাবের সহসভাপতি জামান আবির তাকে পড়াশোনা করাতে আগ্রহ গড়ে তোলেন এবং আমাকে চায়ের দোকানের ব্যবস্থা করে দেন। কিন্তু অভাবের সংসারে ছেলেটাকে সামনের দিনগুলোয় আর পড়াতে পারব কিনা, সেটা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। মারুফ বড় হয়ে ইসলামি বক্তা হতে চায়।

পৌর শহরের বাসিন্দা গাজী মাসুদ কালবেলাকে বলেন, প্রতিদিন ব্যবসায়ের কাজে যাওয়ার পথে তাদের দেখতে পাই। ছেলেটি মাকে সহযোগিতা করে পাশাপাশি রাস্তার বিদ্যুতের আলোতে এখানে পড়াশোনা করে।

প্রেসক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক ইসরাত জাহান মমতাজ কালবেলাকে বলেন, শিশুটি তার মায়ের সঙ্গে এখানে আসে। এখানের বিদ্যুতের আলোতে বসে পড়াশোনা করে। তার মাকে প্রেসক্লাবের সামনে সবাই মিলে বসার অনুমতি করে দিলে সেখানে বসে চায়ের দোকান দিয়ে সংসার চালাচ্ছেন। পাশাপাশি তার ছেলে মারুফের পড়াশোনার খরচ বহন করে।

মঠবাড়িয়া উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. শফিকুল আলম কালবেলাকে বলেন, আপনাদের মাধ্যমে শিশুদের খবর পেয়েছি। খোঁজখবর নিয়ে শিশুটির পাশে দাঁড়াব যাতে ভালোভাবে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারে।

মঠবাড়িয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবদুল কাইয়ূম কালবেলাকে বলেন, আমার এ বিষয়ে আসলে জানা ছিল না। পরিবারটির খোঁজখবর নিয়ে দরকার হলে উপজেলা প্রশাসন অবশ্যই তাদের পাশে দাঁড়াবে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

প্রশাসনে ৫ বড় পদে রদবদল

সাবেক সিইসি নুরুল হুদার জামিন মেলেনি

সাজানো অভিযান / কলাবাগান থানায় সাবেক ওসির বিরুদ্ধে মামলা

মধ্যপ্রাচ্যে ঘোষণা দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও সিলেট মারামারি করে : আসিফ নজরুল

গবেষণায় উৎকর্ষতার স্বীকৃতি পেলেন আইইউবিএটির শিক্ষার্থীরা

তাসকিনের তাণ্ডবের পরেও লঙ্কানদের লড়াকু সংগ্রহ

ইউলাবে রবীন্দ্র-নজরুল জয়ন্তী

কিছু রাজনৈতিক দল শেখ হাসিনার ষড়যন্ত্রে পা দিচ্ছে : দুদু

কম্পিউটার সমিতির সভাপতি জহিরুলকে সনির শুভেচ্ছা

শেখ রেহানার স্বামী-দেবরের জমিসহ ১০ তলা ভবন ক্রোকের নির্দেশ

১০

ছাত্রদলের অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের থাকতে অধ্যক্ষের নোটিশ

১১

ডেঙ্গুতে একদিনে আক্রান্ত আরও ৪১৬ জন

১২

এনবিআরের ৪ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসর

১৩

রাজশাহীতে অপহৃত স্কুলছাত্রী উদ্ধার, যুবক গ্রেপ্তার

১৪

সৌদিকে লিখিত বার্তা দিল ইরান

১৫

পরবর্তী জন্মে প্রিয়াংকার স্বামী হতে চান শাহরুখ খান

১৬

সেই সহকারী সচিব তাবাসসুম চাকরিচ্যুত

১৭

চট্টগ্রামে ডিআইজি কার্যালয়ের সামনে এনসিপি ও বৈষম্যবিরোধীদের বিক্ষোভ

১৮

ভাতা কার্ডের কথা বলে দলিলে স্বাক্ষর, সম্পত্তি লিখে নেন ছেলেরা

১৯

জাতিসংঘ মানবাধিকার বিষয়ক প্রধানকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা

২০
X