আব্দুল আল মামুন, দৌলতপুর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৮ আগস্ট ২০২৩, ০৯:৩৭ এএম
অনলাইন সংস্করণ
দৌলতপুর সদর হাসপাতাল

আউটডোরে রোগী দেখেন ফিজিওথেরাপিস্ট, দেন প্রেসক্রিপশনও

ফিজিওথেরাপিস্ট আবদুল মজিদ ওরফে ডাক্তার জাহাঙ্গীর ওরফে ডা. জাকারিয়া। ছবি : সংগৃহীত
ফিজিওথেরাপিস্ট আবদুল মজিদ ওরফে ডাক্তার জাহাঙ্গীর ওরফে ডা. জাকারিয়া। ছবি : সংগৃহীত

মানিকগঞ্জের দৌলতপুর উপজেলার সদর হাসপাতালে মো. আবিদুল মজিদ ওরফে ডাক্তার জাহাঙ্গীর ওরফে ডা. জাকারিয়া নামের এক ফিজিওথেরাপিস্টের বিরুদ্ধে নিয়মিত জেনারেল রোগী দেখার অভিযোগ উঠেছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, দীর্ঘদিন যাবত প্রতিদিন তিনি ডাক্তারের ভূমিকায় নিয়মিত রোগী দেখছেন। তিনি যে প্রেসক্রিপশন করেন তা সম্পূর্ণ অস্পষ্ট, তার লেখা প্রেসক্রিপশন ওষুধ ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষ একদমই বুঝতে পারেন না। বেশির ভাগ রোগী ভুল ওষুধ নিয়ে বাড়ি ফিরছেন। তার প্রেসক্রিপশনে থাকে না ওষুধ খাওয়ার নিয়মনীতি।

আরও পড়ুন : ক্লাস নেন নিরাপত্তা প্রহরী, বাপ অফিস সহকারী, ছেলে লাইব্রেরিয়ান

মূলত তার কাজ গবেষণাধর্মী ও স্বতন্ত্র চিকিৎসা পদ্ধতি। ফিজিওথেরাপিস্ট মাধ্যমে নানা ধরনের শারীরিক সমস্যায় আছেন এমন মানুষকে থেরাপির মাধ্যমে চিকিৎসা দেওয়া। কিন্তু তিনি তা না দিয়ে হাসপাতালের আউটডোরে বিভিন্ন কক্ষে বসে ভুলভাল চিকিৎসা দিয়ে আসছেন। এতে বিপত্তিতে পড়েছেন চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী রোগী রুপা বেগম বলেন, কোনো কিছু জিজ্ঞেস না করে রোগী দেখেই প্রেসক্রিপশন লিখে দেন। কিন্তু সে যে প্রেসক্রিপশন করে সে ওষুধ কিনতে দোকানে গেলে ওষুধ ব্যবসায়ী তার লেখা পড়তে পারেন না।

সে বিষয়ে অন্য এক রোগী দিপালী চক্রবর্তী বলেন, আমি বহুদিন ধরে হাসপাতাল থেকে প্রেসক্রিপশন করিয়ে ওষুধ খাই। কিন্তু এই মজিদ ডাক্তার যে প্রেসক্রিপশন করে সে ওষুধ খাওয়া খুব কষ্টকর হয়ে পড়ে। এতে আমার মতো বহু রোগীকে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। অবিলম্বে এর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি জানাই।

সোমবার (৭ আগস্ট) ১২টার দিকে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায় তিনি অনুপস্থিত। পরিসংখ্যানবিদ মো. আসাদের সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, তিনি ছুটিতে আছেন। ছুটির দরখাস্ত দেখাতে বললে তিনি বলেন, দরখাস্ত এখনো আমার হাতে এসে পৌঁছেনি। তবে আমার মনে হয় তিনি ছুটির দরখাস্ত দিয়ে গেছেন।

পরে আবার বিকেল ৪টার দিকে সরেজমিনে দেখা যায়, ফিজিওথেরাপিস্ট মজিদ হাসপাতালের ভিতর এলোপাতাড়ি ঘোরাফেরা করছেন। তার সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করলে তিনি দ্রুত হাসপাতালের প্রভাবশালী কম্পিউটার অপারেটর আসাদের রুমে অবস্থান নেন।

এ বিষয়ে ফিজিওথেরাপি মো. আবদুল মজিদ ওরফে ডাক্তার জাহাঙ্গীরকে প্রশ্ন করা হয় আপনি দীর্ঘ পাঁচ বছর ধরে কীভাবে হাসপাতালে রোগী দেখেন, আপনার পরিচয় কী, আপনি কি ডাক্তার, জবাবে তিনি কোনো উত্তর দিতে পারেননি। ছুটি সম্পর্কে তার সঙ্গে কথা বললে তিনি বলেন, আমি লিখিত কোনো ছুটি নেইনি। তবে আরএমও স্যারের সঙ্গে ফোনে কথা বলে মৌখিকভাবে ছুটি নিয়েছি।

এ বিষয় হাসপাতালের পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শাহ আলম সিদ্দিকী ফোনে বলে, তিনি ফিজিওথেরাপিস্ট, কোনো ডাক্তার নয়। আমি যোগদানের পর তাকে রোগী দেখতে মানা করা হয়েছে। তারপরও যদি সে রোগী দেখে থাকে তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব‍্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

মানিকগঞ্জ জেলার সিভিল সার্জন ডা. মোয়াজ্জেম আলী খান চৌধুরী বলেন, একজন ফিজিওথেরাপিস্ট কখনোই জেনারেল রোগী দেখতে পারেন না। বিষয়টা আমরা দেখব।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

জিআই স্বীকৃতি পেল নরসিংদীর লটকন

মুসলিম ছাত্রকে পাকিস্তানের পতাকায় মূত্রত্যাগে বাধ্য করার অভিযোগ ভারতে

পাকিস্তানের সেনাবাহিনীকে ‘কড়া হুঁশিয়ারি’ ভারতের

মে মাসে পুড়তে পারে দেশ

ভাঙা হলো ময়মনসিংহ সাহিত্য সংসদের ‘বীক্ষণ’ মঞ্চ

বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাদের সঙ্গে পুলিশের মতবিনিময় 

সেঞ্চুরির পর ৫ উইকেট আর জয়, মিরাজের ধন্যবাদ পেলেন যারা

সূর্যের তাপে পুড়ছে পাকিস্তান

রাজনৈতিক মতৈক্যে করিডরের সিদ্ধান্ত নিন, সরকারকে সমমনা জোট

ঈদের আগেই বাজারে আসছে নতুন নোট, যা থাকছে নকশায়

১০

মেধাবী শিক্ষার্থীদের পাশে ঢাবি অ্যালামনাই

১১

পদোন্নতির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে চিকিৎসকদের অবস্থান কর্মসূচি

১২

সাংবাদিককে হুমকি দেওয়া সেই অধ্যক্ষকে কেন্দ্র সচিবের পদ থেকে অব্যাহতি

১৩

রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা ছাড়া করিডর নয় : শেখ বাবলু

১৪

ইবিতে সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনায় ছাত্রদলের নিন্দা

১৫

ইসরায়েলি গুপ্তচর সন্দেহে ইরানে এক জনের ফাঁসি কার্যকর

১৬

তীব্র তাপদাহের সঙ্গে মে মাসে কালবৈশাখী-ঘূর্ণিঝড়ের আভাস

১৭

ফ্যাসিস্ট আমলে হাজার হাজার শ্রমিককে পথে বসানো হয়েছে : রিজভী

১৮

সীমান্তের বাসিন্দাদের যুদ্ধকালীন প্রশিক্ষণ দিচ্ছে ভারত

১৯

খুলনায় বিএনপির নেতাকর্মীদের থানা ঘেরাও

২০
X