কয়রা (খুলনা) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৩ আগস্ট ২০২৩, ১০:৩৮ এএম
অনলাইন সংস্করণ

খুলনায় ছড়িয়ে পড়ছে গরুর লাম্পি স্কিন রোগ

লাম্পি স্কিন ডিজিজ (এলএসডি) আক্রান্ত গরু। ছবি : কালবেলা
লাম্পি স্কিন ডিজিজ (এলএসডি) আক্রান্ত গরু। ছবি : কালবেলা

খুলনার কয়রা উপজেলায় গবাদিপশুর গায়ে ছড়িয়ে পড়েছে লাম্পি স্কিন ডিজিজ (এলএসডি) রোগ। গত ১ মাসে উপজেলার ৫ থেকে ৭ হাজার গরু এ রোগে আক্রন্ত হয়েছে বলে জানা গেছে। এ ছাড়া এই রোগে আক্রান্ত হয়ে ২০০ থেকে ৩০০ গরু ইতিমধ্যে মারা গেছে। এতে প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে দেখা দিয়েছে আতঙ্ক।

গরুর শরীরে আক্রান্ত রোগটির বিষয়ে খামারিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এই রোগে আক্রান্ত হলে শুরুতে গরুর শরীরে বসন্তের মতো গুটি উঠছে। তারপর হাঁটু, গোড়ালি ও গলা ফুলে যায়। গলায় পানি জমে। জ্বর আর খাওয়া ছেড়ে দেয়। অনেক সময় মুখ দিয়ে লালা পড়ে। কেউ কেউ অন্যান্য সুস্থ গরুকে এ রোগ থেকে রক্ষা করতে আক্রান্ত গরুকে মশারি দিয়ে আলাদা করে রাখছে। কিন্তু এরপরও সংক্রমণ ঠেকানো যাচ্ছে না।

এদিকে খামারিদের অভিযোগ, প্রাণিসম্পদ অফিসের চিকিৎসকদের ডাকলে সাড়া দেন না। আর এলেও তাদের বড় অঙ্কের ফি দিতে হয়। নিরুপায় হয়ে তারা গ্রামের পশু চিকিৎসকদের মাধ্যমে আক্রান্ত গরুর চিকিৎসা করাচ্ছেন।

উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ৫ নম্বর কয়রা গ্রামের ক্ষুদ্র কৃষক নজরুল ইসলাম মিঠু জনান, আমার দুটি গরু ছিল কিন্তু দুটিই অসুস্থ হয়েছিল। অনেক খরচ করেও বাঁচাতে পারিনি। আক্রান্ত গরুর চিকিৎসার পেছনে অনেক টাকা খরচ হয়েছে। বাকি ১টি অসুস্থ গরু নিয়ে আমি খুব দুশ্চিন্তার মধ্যে আছি গরুর অবস্থা খুব খারাপ।

পাশের গ্রামের আবুল ইসলাম বলেন, এক মাসের মধ্যে তার ১টি গরু লাম্পি স্কিন ডিজিজে মারা গেছে। আক্রান্ত গরুর চিকিৎসা করাতে অনেক ব্যয় করেছি কিন্তু তারপরও বাঁচাতে পারেননি।

এলাকাবাসী জানায়, প্রতি বছরই এই রোগে গরু মারা যাচ্ছে কিন্তু রোগের প্রতিষেধক বা প্রতিকারে সরকারি উদ্যোগের কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। এমনকি যারা ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক তাদের জন্য সহায়তার উদ্যোগও নেই। রোগটি দ্রুত নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, লাম্পি স্কিন ডিজিজের সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা না থাকলেও ধরন অনুযায়ী চিকিৎসা দেওয়া হয়ে থাকে। আতঙ্কিত না হয়ে মশা-মাছি থেকে গরুকে নিরাপদ রাখতে হবে। গরুর শরীর ও পরিবেশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। এই বিষয়টি নিয়ে গরু খামারিদের অবশ্যই সচেতন থাকতে হবে। আর সরকারি প্রাণিসম্পদ বিভাগটিকে এ নিয়ে আরও সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে। ক্ষতিগ্রস্ত খামারিদের সহায়তায় সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে।

উপজেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. কাজী মুস্তাইন বিল্ল্যাহ বলেন, লাম্পিং স্ক্রিন এ রোগের সরাসরি কোনো প্রতিষেধক নেই। তবে ছাগলের বসন্ত রোগের প্রতিষেধক এ ক্ষেত্রে বেশ কার্যকর। তাই ইতোমধ্যেই প্রতিষেধকটির প্রয়োগ শুরু হয়েছে। প্রতিদিনই উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ক্যাম্প করে এই রোগের ব্যপারে সচেতন করে দিকনির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছেন তারা। তবে আক্রান্ত গবাদিপশুকে আলাদা করে মশারির ভেতর রাখতে হবে। এ ছাড়া নিমপাতা ও খাবার সোডা বেশি বেশি খাওয়ানোর পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

আন্তর্জাতিক রোবোটেক অলিম্পিয়াডে বিইউবিটির শিক্ষার্থীদের সাফল্য

রাশিয়া কেন ইরানকে সাহায্য করছে না, যা বললেন পুতিন

একতরফা নির্বাচনের পরিণতি দেখে ইসির সতর্ক হওয়া উচিত : ফারুক

অধিনায়কত্ব ছাড়ার গুঞ্জনে মুখ খুললেন শান্ত

দেড় কোটি টাকার স্বর্ণসহ পাচারকারী আটক

হাছান মাহমুদ দম্পত্তির দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

শাজাহানপুর বিএনপি কার্যালয়ে আ.লীগের শুভেচ্ছা পোস্টার!

নুরুল হুদার হেনস্তায় দলের কেউ জড়িত থাকলে ব্যবস্থা : সালাহউদ্দিন

বিক্ষোভের চেষ্টা, ধাওয়া করে শ্রমিক লীগ নেতাকে ধরল জনতা

চসিকের বাজেট ঘোষণা

১০

আন্দোলনে বিরতি দিলেন সচিবালয়ের কর্মচারীরা

১১

১২৫ বিমান দিয়ে ইরানে মার্কিন হামলা

১২

বাল্কহেডের ধাক্কায় আবারও ভাঙল নির্মাণাধীন সেতু

১৩

পৃথিবীতে আমার শ্বশুরবাড়িই সেরা : সোনাক্ষী

১৪

নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি গ্রেপ্তার

১৫

সীতাকুণ্ডে মালবাহী ট্রেন লাইনচ্যুত

১৬

অবিরাম সাইরেন বাজছে ইসরায়েলে, ব্যাপক বিস্ফোরণ

১৭

ইরানের হামলায় অন্ধকারে ডুবে গেল দক্ষিণ ইসরায়েল

১৮

রাষ্ট্রপতিকে শপথ পড়ানো নিয়ে রুলের চূড়ান্ত শুনানি ৭ জুলাই

১৯

চাঁদা না পেয়ে প্রবাসীকে হুমকি, অস্ত্রধারী বিএনপির সেই নেতা গ্রেপ্তার

২০
X