টাঙ্গাইলে বসতভিটার পাশে ৩ শতাধিক সাপ পুষছেন মো. ইদ্রিস আলী। আর এই সাপ পোষ মানাতে কামড় খেয়েছেন দুই শতাধিক।
জানা যায়, টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলায় কারও বাড়িতে সাপের উপদ্রব হলেই ডাক পড়ে ইদ্রিস আলীর। সেই সাপ ধরে এনে তার নিজ বাড়িতে সাপের সংগ্রহশালায় রাখছেন। ঘাটাইল উপজেলার প্রত্যন্ত গ্রামের মেঠো পথেই ইদ্রিস আলীর বিচরণ। এক সময় মাছ শিকার করে জীবিকা নির্বাহ করলেও বর্তমানে সাপ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন। জীবিকার তাগিদে সাপ ধরাই এখন তার প্রধান পেশা।
উপজেলার লক্ষিন্দর ইউনিয়নের শালিয়াবহ গ্রামের নিজ বাড়ির সংগ্রহশালায় রয়েছে ৩শ সাপ। প্রায় ৪ বছর আগে থেকে সাপ ধরা শুরু করেন তিনি। এরইমধ্যে বিষধর সাপের কামড়ও খেয়েছেন দুই শতাধিকের মতো। তার সঙ্গে সবসময় এন্টিভেনম থাকে।
এলাকাবাসী জানান, লোকালয়ে ঘরে কিংবা বাইরে কোথাও সাপের উপস্থিতির খবর পেলে সেখানেই ছুটে যান ইদ্রিস আলী। দেশের দূর-দূরান্ত থেকেও সাপ তাড়াতে বা ধরতে খবর পড়ে তার।
স্থানীয় আবুল মিয়া বলেন, ইদ্রিস আলী বিভিন্ন জায়গা থেকে বড় বড় সাপ ধরে। স্থানীয় পর্যায়ে যখন তিনি সাপ ধরেন, তখন আমরা সরাসরি দেখি।
ওই এলাকার বাসিন্দা হাসমত বলেন, আমরা আগে সাপ দেখে প্রচুর ভয় পেতাম। বর্তমানে আমাদের এলাকায় ‘সাপের বাড়ি’ নামে পরিচিতি পেয়েছে ইদ্রিস আলীর বাড়ি। সেই বাড়িতে দুএকবার যাতায়াত করলে সাপের ভয় কেটে যাবে।
ইদ্রিস আলীর স্ত্রী কালবেলাকে বলেন, প্রায় ৪ বছর ধরে আমার স্বামী সাপ ধরেন। তাকে সাপ ধরতে আগে না করেছি। এখন আর না করি না। আগে সাপ দেখে ভয় পেলেও এখন আর ভয় পাই না। বর্তমানে এই সাপের মাধ্যমে আমাদের রুটি রোজগারের ব্যবস্থা।
ইদ্রিস আলী বলেন, প্রাকৃতিক ভারসাম্যের বিষয়টি মাথায় রেখে সাপকে সংরক্ষণ রেখেছি। এসব সাপ রক্ষণাবেক্ষণ করতে গিয়ে দুইশবারের মতো কামড় খেয়েছি। তবে থেমে যাইনি আমি।
টাঙ্গাইলের সিভিল সার্জন ডা. ফরাজি মো. মাহবুল আলম মঞ্জু বলেন, ইদ্রিস আলী নামে এক ব্যক্তি বিষাক্ত সাপ নিয়ে সংগ্রহশালায় রাখছে। সে বিষয়ে বন্যপ্রাণী আইন সংরক্ষণে ধারা রয়েছে। এ ছাড়া পর্যাপ্ত পরিমাণে সিকিউরিটি না থাকায় বিষাক্ত সাপ সংগ্রহশালায় রাখাটা ঝুঁকি।
এন্টিভেনম সম্পর্কে তিনি বলেন, এটা শুধু হাসপাতালে ডাক্তারদের তত্ত্বাবধানে রাখা হয়। তাই ইদ্রিস আলী অ্যান্টিভেনম কখনোই পেতে পারেন না। এন্টিভেনম ব্যবহারের জন্য ডাক্তারদের আলাদা প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। এন্টিভেনম ঝুঁকিপূর্ণ। এটি সহজেই কেউ পেতেও পারে না। কেউ ইচ্ছা করলে দিতেও পারে না।
মন্তব্য করুন