বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫, ১৮ বৈশাখ ১৪৩২
ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৫ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯:২৪ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

বিয়ের তিনদিনের মাথায় স্বামী কারাগারে, ফিরে পেলেন ১৬ বছর পর

দীর্ঘ ১৬ বছর পর নিজ বাড়িতে ফিরলে মোতাহার হোসেন মানিককে দেখতে ভিড় জমান আত্মীয়স্বজন, প্রতিবেশীসহ বন্ধুবান্ধবরা।
দীর্ঘ ১৬ বছর পর নিজ বাড়িতে ফিরলে মোতাহার হোসেন মানিককে দেখতে ভিড় জমান আত্মীয়স্বজন, প্রতিবেশীসহ বন্ধুবান্ধবরা।

পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বিস্ফোরকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন ঠাকুরগাঁওয়ের বাসিন্দা সাবেক বিডিআর সদস্য মোতাহার হোসেন মানিক (৩৬)।

শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় দীর্ঘ ১৬ বছর পর নিজ বাড়িতে ফেরেন তিনি। তাকে দেখতে ভিড় জমান আত্মীয়স্বজন, প্রতিবেশীসহ বন্ধুবান্ধবরা। এ সময় আবেগে আপ্লুত হন উপস্থিত সবাই।

মোতাহার হোসেন ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আউলিয়াপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক সদস্য ও কচুবাড়ী জোতপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মৃত আবুল হোসেনের ছেলে। বাড়ি ফিরে বাবাকে না পেয়ে মোতাহার কান্নায় ভেঙে পড়েন। তিন বছর আগে তার বাবা মারা যান।

শনিবার (২৫ জানুয়ারি) মোতাহারের বাড়িতে গেলে তার মা মুক্তা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, বুকের ধন ফিরে পেয়েছি। আর যেন কোনো মাকে এভাবে কষ্ট ভোগ করতে না হয়।

চাকরির ছয় মাস বয়সে পিলখানা হত্যাকাণ্ড মামলায় ১৬ বছর জেল খাটেন মোতাহার। ট্রেনিং শেষে বাড়ি ফিরলে বাবা তাকে বিয়ে করান পাশের গ্রামের ববি আক্তারকে। তিন দিন সংসার শেষে কর্মস্থলে ফিরে যান তিনি। ১৬ বছর ধরে অপেক্ষায় থাকা স্ত্রীর কাছে ফিরলেন অবশেষে। স্বামীকে ফিরে পেয়ে কান্না আর থামছিল না তার। ববি বলেন, বিয়ের তিন দিনের মাথায় স্বামী কারাগারে চলে যান। তখন থেকে স্বামীর অপেক্ষায় ছিলাম। দিন গড়িয়ে বছর হয়েছে, বছর গড়িয়ে দশক হয়েছে, তবু তার মুক্তি মেলেনি। ১৬ বছর পর সেই দিন এলো।

পিলখানা হত্যাকাণ্ডের মামলায় কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়া মোতাহার হোসেন কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, সম্পূর্ণ বিনা বিচারে আমি ১৬ বছর কারাগারে ছিলাম। যদি সঠিক বিচার হতো, তাহলে আমার কারাভোগ করতে হতো না।

তিনি আরও বলেন, ১৬ বছর পর মায়ের কোলে ফেরা অন্যরকম এক অনুভূতি। এটা বলে বোঝানো যাবে না। এ জন্য আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জানাই। মাত্র ছয় মাস চাকরির বয়সে বিনা অপরাধে ১৬ বছর জেলখানায় কেটে গেছে। কী থেকে কী হয়েছে, এটা সবাই জানে।

মোতাহার হোসেন বলেন, ছয় মাস চাকরি আর ১৬ বছরের জেল। এ অল্প সময়ে কী অপরাধ করতে পারি বলেন? বাড়ি ফিরেছি, তবে একটাই চিন্তা, ১০ তারিখ কোর্ট আছে। প্রহসনের কোর্ট; মামলার বাদী বলেছেন, আমাদের ওপর প্রহসনের মামলা চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। সরকার ইচ্ছা করলেই এটি ডেস্ট্রয়, বাতিল বা শেষ করতে পারে। জানি না আর কত দিন হয়রানি হতে হবে।

সাবেক এ বিডিআর সদস্য বলেন, আমাদের অনেক অসহায় ভাই এখনো ভেতরে আছেন। তাদের কোনো অপরাধ নেই। মিথ্যা মামলায় তাদের ফাঁসানো হয়েছে। এ সরকারের উচিত তাদের ছেড়ে দেওয়া। ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে ফ্যাসিজম দূর হওয়ায় আমি মায়ের কোলে ফিরে আসতে পেরেছি।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সার্জেন্ট হেলালের সাহসিকতায় ২ ছিনতাইকারী আটক

শ্রমিকদের অধিকার আদায়ের ‘মহান মে দিবস’ আজ

নোবিপ্রবির পুকুরে ছাত্র-ছাত্রীদের গোসলের ছবি ভাইরাল, প্রশাসনের সতর্কতা

রাজধানী থেকে পুরনো যানবাহন সরাতে অ্যাকশনে নামছে বিআরটিএ

কালবেলায় সংবাদ প্রকাশের পর ইউএনওকে বদলি

ববি প্রশাসনকে ‘মৃত’ ঘোষণা করে গায়েবানা জানাজা

স্কুলের ১৮টি গাছ কাটলেন প্রধান শিক্ষক

শাহ আমানত বিমানবন্দরের রানওয়েতে কুকুর, ব্যবস্থা নিতে মেয়রকে চিঠি

আধিপত্য বিস্তারের দ্বন্দ্বে কুপিয়ে হত্যা

বাবরি মসজিদ বানাবেন পাকিস্তানি সেনারা : পাকিস্তানের সিনেটর

১০

কাশ্মীর হামলার পর চাপে ভারতের মুসলিমরা, বেড়েছে দমনপীড়ন

১১

ছাত্রদের ক্ষমতায় এনে দেশের ক্ষতি করা হয়েছে : সোহেল

১২

সন্ধ্যা নদীতে বাঁধ নির্মাণের দাবি

১৩

মে মাসে হতে পারে ২টি ঘূর্ণিঝড়

১৪

শ্রমিক সমাবেশে নির্দেশনামূলক বক্তব্য দেবেন তারেক রহমান

১৫

ভয়াবহ পরিস্থিতিতে ‘জরুরি অবস্থা’ ঘোষণা ইসরায়েলে

১৬

গ্রাহকদের জন্য বাড়তি সুবিধা আনল বাংলালিংক

১৭

জয়ের পরও শান্তর মুখে হতাশা

১৮

রাজশাহী মাউশি কার্যালয়ে দুদকের অভিযান নিয়ে প্রশ্ন

১৯

জিআই স্বীকৃতি পেল নরসিংদীর লটকন

২০
X