চট্টগ্রাম ব্যুরো
প্রকাশ : ১৪ জুন ২০২৩, ০৯:২৬ পিএম
আপডেট : ১৪ জুন ২০২৩, ০৯:৩৪ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

ভিসানীতির ভয়ে আওয়ামী লীগের হাঁটু কাঁপছে: ফখরুল

সমাবেশে বক্তব্য দিচ্ছেন মির্জা ফখরুল
সমাবেশে বক্তব্য দিচ্ছেন মির্জা ফখরুল

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমেরিকার ভিসানীতিকে সরকার ভয় পায় না বললেও আসলে এমন ভয় পেয়েছে যে, ওদের হাঁটু কাঁপতে শুরু করেছে। কারণ তাদের সবাই তো বিদেশে টাকা পাচার করেছে। ভিসানীতি এমন হয়েছে, এবার যদি তুমি ভোটে আবার কারচুপি করতে যাও বা দিনের ভোট রাতে করো তাহলে তোমার রেহাই নেই। সত্যিই এবার রেহাই নেই। আর রেহাই দেওয়া হবে না। আর সময় দেওয়া যাবে না। দেশের সব সম্পদ লুট করে বিদেশে পাচার করেছে আওয়ামী লীগ।

আজ বুধবার চট্টগ্রাম নগরের কাজীর দেউড়ি মোড়ে প্রথম বিভাগীয় ‘দেশ বাঁচাতে তারুণ্যের সমাবেশে’ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, আমেরিকা স্যাংশন দিয়েছে। স্যাংশন আছে। র্যাবকে কেন স্যাংশন দেওয়া হয়েছে। র্যাবকে কারা ব্যবহার করেছে? র্যাবকে ব্যবহার করে আমার ভাইদের গুম করতে বলেছে এই সরকার, হাসিনার সরকার।

বিএনপির মহাসচিব আওয়ামী লীগকে উদ্দেশ্য করে বলেন, দেখেন ওরা কত ভীরু, কাপুরুষ। কিন্তু লম্বা লম্বা কথা বলে। বলে ক্ষমতায় ওরা যাবে। ক্ষমতায় কীভাবে যাবে? ওই পুলিশ, ওই বিজিবি রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে তোমরা ফের ক্ষমতায় যাবে? আজ শুনে রাখুন- আমরা ক্ষমতায় যেতে চাই না। জনগণকে ক্ষমতায় নিতে চাই। ভোটের অধিকার নিশ্চিত করতে চাই।

সাম্প্রতিক সিটি নির্বাচন প্রসঙ্গ টেনে মির্জা ফখরুল বলেন, গাজীপুরে জাহাঙ্গীরের মায়ের কাছে হেরে গেছে নৌকা। এরপর যখন দেখল বরিশালে পীর সাহেবের কাছে হেরে যাবে তখন ইভিএমের কারসাজি করেছে। এরপর পীর সাহেবকে মারধর করে রক্তপাত ঘটিয়েছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগের ক্ষমতার ১৪ বছরে অনেক কিছু হয়েছে। শেখ হাসিনা আমাদের বহু কিছু কেড়ে নিয়েছেন। আমাদের ন্যায়বিচার পাওয়ার অধিকার কেড়ে নিয়েছেন। আমরা আদালতে যেতে পারি না। আদালতে গেলে আমাদের সরাসরি জেলে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। কোনো বিচার হয় না। মিথ্যা ও গায়েবি মামলা দিয়ে আটক করে রাখা হয়। হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে নিম্ন আদালতে গেলে আবার কারাগারে পাঠানো হয়। তারপর কারাগার থেকে বের হওয়ার সময় আবার নতুন মামলা দিয়ে দেওয়া হয়।

ফখরুল বলেন, সরকার বিদ্যুৎ দিতে পারে না। কিসের উন্নয়ন, কার উন্নয়ন হয়েছে। জনগণের টাকা দিয়ে আওয়ামী লীগ নিজেদের উন্নয়ন করেছে। মেগা প্রজেক্ট করেছে। নদীর তলদেশ দিয়ে টানেল করছে। এসবের দরকার আছে। কিন্তু তার আগে তো দেশের মানুষের বাঁচা দরকার। আগে শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা ও চাকরি নিশ্চিত করতে হবে। তারা তো শুধু ভোটচুরি নয়, সম্পদও চুরি করেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক চুরি করে নিয়ে গেছে। ব্যাংকগুলো খালি করে দিয়েছে। যদি এ রকম চোর আর এক দিনও ক্ষমতায় থাকে তাহলে দেশের ক্ষতি হবে।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, উন্নয়নের নামে লুটপাট করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের সঙ্গে যারা জড়িত তারা ছাড়া কেউ লাভবান হচ্ছে না। আমাদের ভোটের অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়েছে। ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। জাতীয় সংসদকে শেষ করে দেওয়া হয়েছে। নির্বাচন ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণ ভেঙে দিয়েছে ওরা।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, দেশকে রক্ষা করা আপনাদের দায়িত্ব। খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে মিথ্যা মামলা দিয়ে আটক করে রাখা হয়েছে। বারবার বলেছি তাকে মুক্তি দিন। আমরা জানি না কারাগারে তাকে পয়জনিং করা হয়েছে কিনা। কারণ এখন তার যে অবস্থা হয়েছে সেই অবস্থা হওয়ার কথা নয়। এখন তিনি জীবন-মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন। তারেক রহমানের দিকে নেতাকর্মীরা তাকিয়ে আছে। মিথ্যা মামলা দিয়ে তাকে নির্বাসিত করে রাখা হয়েছে। আজকে ৪০ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। সেখানে কি গণতন্ত্র থাকতে পারে?

তিনি বলেন, আমাদের নেতা তারেক রহমান বলেছেন- এখনই পদত্যাগ করতে হবে সরকারকে। সংসদ বিলুপ্ত করতে হবে। একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে। এ জন্য আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। সব মানুষকে এক করতে হবে। সব রাজনৈতিক দলগুলোকে এক করতে হবে। সবাইকে এক করে দেশ রক্ষা করতে হবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে সময় এসেছে, মহান স্বাধীনতা রক্ষা করার। স্বাধীনতার অস্তিত্ব আজ বিপন্ন। বাংলাদেশের মানুষের ভবিষ্যৎও বিপন্ন। সেই বাংলাদেশকে আপনাদের রক্ষা করতে হবে। সরকার জোর করে ক্ষমতায় বসে আছে। পুলিশ ও রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে তারা ক্ষমতায় বসে আছে। জনগণের ওপর স্ট্রিম রোলার চালাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের কৃষক-শ্রমিকরা বাজারে যেতে পারে না। বাজারে আগুন। চাল, তেল, সবজি, লবণ, চিনি, ডিম, মুরগির দাম বেড়েছে। এরপরও তারা বলে বাংলাদেশের মানুষ ভালো আছে। কিন্তু তারা তো ভালো আছে। বাংলাদেশের মানুষের পকেট কেটে অনেক টাকা উপার্জন করেছে। তারপর তা বাইরে পাচার করেছে। বাংলাদেশের মানুষ সরকারের নির্যাতন সহ্য করছে। ১৫ বছর ধরে এই অত্যাচার নির্যাতন চলছে। অনেক নেতাকর্মীকে গুম, খুন করেছে। নেতাকর্মীদের মামলা দিয়ে হয়রানি করা হয়েছে। সারা দেশে ৬০০ মানুষকে গুম করা হয়েছে।

তিনি বলেন, সরকার দেশকে এমন পর্যায়ে নিয়ে গেছে কোথাও শান্তি নেই। প্রতিটি পদে পদে আমাদের গলা টিপে ধরেছে। অথচ সবাই চেয়েছিল একটি গণতান্ত্রিক দেশ।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

গোল্ডেন হারভেস্টে বড় নিয়োগ

যুক্তরাষ্ট্রের পর্যটন ভিসার ফি বাড়ছে দ্বিগুণের বেশি

জুম টিভির অফিসে নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযান

ধেয়ে আসছে শক্তিশালী ঝড়, ৬ লাখ মানুষকে সরানোর নির্দেশ 

হাসপাতালে বাণিজ্যিক নার্সারি, সন্ধ্যায় বসে মাদকসেবীদের আড্ডা

ইহুদিবিদ্বেষ ইস্যুতে মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে তলব করল ফ্রান্স

টিভিতে আজকের খেলা

এমবাপ্পের জোড়া গোলে লা লিগায় রিয়ালের সহজ জয়

ইবনে সিনায় চাকরির সুযোগ

সোমবার রাজধানীর যেসব এলাকার মার্কেট বন্ধ

১০

জেনে নিন আজকের নামাজের সময়সূচি

১১

এলোপাতাড়ি কুপিয়ে স্ত্রীকে হত্যা

১২

ক্যাশমেমো নেই, খুচরা বাজারে দ্বিগুণ দাম কাঁচামালে

১৩

রামপুরায় ভবনের ৬ তলা থেকে পড়ে রডমিস্ত্রির মৃত্যু

১৪

কুড়িয়ে পাওয়া ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা ফেরত দিলেন ভ্যানচালক

১৫

বুড়িগঙ্গা থেকে লাশ উদ্ধার / ৪ জনকেই হত্যা করা হয়েছে, ধারণা পুলিশের

১৬

ওসির বদলির খবরে মোহাম্মদপুর থানার সামনে মিষ্টি বিতরণ স্থানীয়দের

১৭

বিএনপি নেতা আব্দুস সালামের চিকিৎসার খোঁজ নিলেন ডা. কাঁকন 

১৮

সিপিএলে ইতিহাস গড়ে ফ্যালকনসকে জেতালেন সাকিব

১৯

নতুন ই-লার্নিং প্ল্যাটফর্মের উদ্বোধন / মাত্র ১০০ টাকায় করা যাবে দক্ষতা, চাকরি কিংবা ভর্তি প্রস্তুতির কোর্স

২০
X