বকেয়া মজুরি পরিশোধ, বোনাস, উৎসব ভাতা স্থায়ী বাসস্থান নিশ্চিত করণসহ ৭ দফা দাবিতে আগামী রোববার (২০ আগস্ট) থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য মহাসড়ক অবরোধ করতে যাচ্ছেন চা শ্রমিকরা।
মালিক পক্ষের দাবি, আলোচনা করে বকেয়া টাকা পরিশোধ করা হবে। এদিকে টাকার অভাবে কঠিন দিন কাটাচ্ছেন শ্রমিকরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার পানিউমদা ইউনিয়নে অবস্থিত ইমাম ও বাওয়ানী চা বাগান। এই দুটি বাগানে স্থায়ী-অস্থায়ী কাজ করেন প্রায় ৫০০ জন চা শ্রমিক। তাদের বকেয়া প্রায় দেড় কোটি টাকা রয়েছে মালিকপক্ষের কাছে। বকেয়া মজুরি পরিশোধসহ ৭ দফা দাবিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য মহাসড়ক অবরোধ করতে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন চা শ্রমিকরা।
শ্রমিকদের অভিযোগ, বাংলাদেশি চা-সংসদ ও বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের মধ্যে সম্পাদিত শ্রমচুক্তি মোতাবেক তাদের বকেয়া অর্থ পরিশোধ করছে না মালিকপক্ষ। শ্রমিকদের প্রায় দেড় কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে মালিকপক্ষের কাছে। ইতিমধ্যে মহাসড়ক অবরোধ, মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করে আসছেন শ্রমিকরা। তবে কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না।
এদিকে সর্বশেষ ২০ জুলাই নিয়মিত বেতনসহ পূর্বের বকেয়া টাকা পরিশোধ করার আশ্বাস দেওয়া হয়। কিন্তু ২০ জুলাইও টাকা পরিশোধ না হওয়ায় পরদিন থেকে কর্মবিরতি পালন করেছে শ্রমিকরা। তাদের দাবি বকেয়া মজুরি না পাওয়ায় তাদের জীবনে নেমে এসেছে হতাশা। কষ্টের মধ্যে তাদের দিনযাপন করতে হচ্ছে। অনেকেই টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছে না।
ইমাম বাগানের পঞ্চায়েত সভাপতি রামভোজন রবিদাস জানান, আমরা আগামী শনিবার (১৯ আগস্ট) এর মধ্যে বকেয়া মজুরি পরিশোধসহ দাবি না মানলে রবিবার থেকে মহাসড়কে উঠব। প্রয়োজনে সেখানেই আমাদের মৃত্যু হবে। তবুও আমরা পিছপা হবে না।
চা শ্রমিক ইউনিয়নের বালিশিরা ভ্যালির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শুভাশিষ দাস জানান, আমরা কারো কথায় আর বিশ্বাস করব না। অনেকস্থানে ঘুরেছি কোথাও কোনো কাজ হয়নি তাই বাধ্য হয়েই সড়কে উঠছি।
তিনি বলেন, টাকার অভাবে শ্রমিকদের জীবন কষ্টের মধ্যে যাচ্ছে কেউ খোঁজখবর নেয়নি। অনেকেই টাকার অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছে না। শ্রমিকরা অসহায় হয়ে গেছে। শ্রমিকদের বকেয়া মজুরির দাবিতে প্রয়োজনে মহাসড়কে আত্মহুতির ঘোষণা দেওয়া হবে।
ইমাম-বাওয়ানী বাগানের জেনারেল ম্যানেজার ফখরুল ইসলাম জানান, বাগান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে বকেয়া টাকা পরিশোধ করা হবে। শ্রমিকরা দেড় মাস ধরে কাজে না আসায় বাগানের কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে।
তিনি বলেন, শ্রমিকরা কাজে না আসায় এ বছর আমাদের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে না। অনেক ঘাটতি থাকবে।
মন্তব্য করুন