বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলায় মৎস্য অধিদপ্তরের আওতায় গরু বিতরণ অনুষ্ঠানে গিয়ে হট্টগোল করেছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। তাদের জিজ্ঞাসা না করে কেন গরু বিতরণ করা হচ্ছে, এ অভিযোগ তুলে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা নাজমুস সালেহীনের সঙ্গে হট্টগোল করেন তারা।
তাদের বাধায় বিতরণ কার্যক্রম বন্ধের উপক্রম হয়। পরে বিএনপি নেতাদের দেওয়া তালিকা অনুযায়ী ৭টি বাছুর বিতরণ করার পর পরিস্থিতি শান্ত হয়।
মঙ্গলবার (৪ মার্চ) দুপুর ১২টা থেকে বিকেল পর্যন্ত উপজেলা পরিষদ চত্বরে এ ঘটনা ঘটেছে।
বিষয়টি কালবেলাকে নিশ্চিত করে বাবুগঞ্জ উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা এএফএম নাজমুস সালেহীন বলেন, ইলিশ সম্পদ উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের আওতায় মৎস্যজীবীদের বিকল্প কর্মসংস্থানে উপজেলার ৮০ জন জেলের মধ্যে বকনা বাছুর বিতরণ করা হয়। বিতরণ করেন বাবুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ফারুক আহমেদ। তবে তিনি ৪৮টি বাছুর বিতরণ করে চলে যান। পরে বিএনপির নেতাকর্মীরা এসেছিলেন। তখন একটু ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল। পরে বিষয়টি নিয়ে বিএনপি নেতারা দুঃখ প্রকাশ করেছেন।
মৎস্য কর্মকর্তা বলেন, তালিকা নাম থাকা চার জেলে আসেননি এবং তিনজনের বিরুদ্ধে আপত্তি থাকায় তাদের বাদ দেওয়া হয়েছে। পরে নতুন করে সাতজন প্রকৃত জেলের মধ্যে বাছুর বিতরণ করা হয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মকর্তা বলেন, বাছুর বিতরণের সময় উপজেলার দেহেরগতি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি এবিএম মোস্তাফিজুর রহমান ফারুক, বাবুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সদস্য খোকন প্যাদা, চাদপাশা ইউনিয়ন বিএনপির নেতা রুবেল সরকার ও নান্টু জমাদ্দারসহ কয়েকজন বিএনপি নেতা এসে হট্টগোল করেন। তারা এসে মৎস্য কর্মকর্তাকে প্রশ্ন করেন- গরু দেওয়ার বিষয়ে কেন জিজ্ঞেস করেননি।
বিএনপি নেতারা মৎস্য কর্মকর্তাকে উদ্দেশ করে বলেন, তারা দীর্ঘদিন বঞ্চিত ছিলেন। এখনো তাদের লোককে বারবার বঞ্চিত করা হচ্ছে। তারা অভিযোগ করেন, মৎস্য কর্মকর্তা এর আগে জামায়াত নেতাদের নিয়ে জেলে কার্ড করেছেন। বিএনপির লোকদের কাছেও ভিড়তে দেন না। এসময় মৎস্য কর্মকর্তাকে ‘আওয়ামী লীগের প্রেতাত্মা’ হিসেবে আখ্যায়িত করে বিএনপি নেতারা বলেন- আপনি আওয়ামী লীগের লোকের মধ্যে গরু বিতরণ করছেন। আপনি খারাপ লোক। এ সময় মৎস্য কর্মকর্তাকে অফিস ছেড়ে চলে যেতেও বলেন বিএনপি নেতারা।
এ বিষয়ে বাবুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ফারুক আহমেদ কালবেলাকে বলেন, গরু বিতরণ নিয়ে একটু ঝামেলা হয়েছে শুনেছি। অভিযোগ পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মোস্তাফিজুর রহমান ফারুক বলেন, মৎস্য কর্মকর্তার সঙ্গে তাদের কিছু হয়নি। আওয়ামী লীগের চেয়ারম্যান-মেম্বারদের দেওয়া তালিকা অনুযায়ী গরু বিতরণ করছিলেন তিনি। তারা সেটা না করার জন্য বলেছেন।
উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব অহিদুল ইসলাম প্রিন্স বলেন, কিছু হয়নি। আওয়ামী লীগের লোকজনদের গরু দেওয়ায় বিএনপির কিছু নেতাকর্মী প্রতিবাদ করেছেন মাত্র।
মন্তব্য করুন