সাতক্ষীরা প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৮ মার্চ ২০২৫, ০২:৩৮ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

সরকারি কাজে বাধা ও চাঁদা দাবির প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন

সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন মো. আব্দুর রহমান। ছবি : কালবেলা
সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন মো. আব্দুর রহমান। ছবি : কালবেলা

সাতক্ষীরার শ্যামনগরে সরকারি কাজে বাধা প্রদান ও চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় শনিবার (৮ মার্চ) দুপুরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের আব্দুল মোতালেব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগের বিষয়ে জানান ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আর রাদ করপোরেশনের অ্যাডমিন ইনচার্জ মো. আব্দুর রহমান।

কাজে বাধা প্রদান ও চাঁদাদাবির প্রতিবাদে অভিযোগ নজরুল ইসলামের বিরুদ্ধে। তিনি বুডিগোয়ালিনি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান।

সংবাদ সম্মেলনে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আর রাদ করপোরেশনের অ্যাডমিন ইনচার্জ মো. আব্দুর রহমান জানান, আর রাদ করপোরেশন ও বাংলাদেশ নৌবাহিনী যৌথ চুক্তির মাধ্যমে জাইকার অর্থায়নে পাওবি-১ এর শ্যামনগর উপকূলীয় পাঁচটি স্থানে নদীশাসনের কাজ পেয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় সেখানে কাজ চলমান রাখে। প্রকল্প শুরু থেকে যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করে টাস্কফোর্সের মাধ্যমে নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করে আসছে। এই কাজে ব্যবহৃত প্রতিটি উপাদান বুয়েট পরীক্ষাগারে কৃতকার্য হওয়ার পরে কাজে ব্যবহার করা হয়। তাছাড়া কাজটি জাইকার অর্থায়নে হওয়ায় জাইকার প্রতিনিধি দল প্রতিমুহূর্তে এখানে পরিদর্শন করেন। একই সঙ্গে পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রতিনিধি দল বিষয়টি মনিটরিং করেন।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সেক্ষেত্রে এখানে কোনো প্রকার অনিয়ম কিংবা দুর্নীতি করার কোনো সুযোগ থাকে না। তা ছাড়া ভালো সুনামধারী ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কখনো অনিয়ম কিংবা দুর্নীতি করে না। তবে অতি সম্প্রতি আর রাদ করপোরেশন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কিছু দুষ্কৃতিকারী লোক মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য দিয়ে জনসাধারণকে বিভ্রান্ত করছে। এখানে প্রকল্পের কাজ নিরবচ্ছিন্নভাবে চলমান রাখলেও গত ৫ আগস্টের পর দেখা দেয় নানা ধরনের বিপত্তি।

তিনি বলেন, স্থানীয় বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নজরুল হাজি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছে ১২ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। একই সঙ্গে প্রকল্প এলাকায় নজরুল হাজিকে অবৈধ সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার জন্য চাপ দেন। চাঁদার টাকা না দিয়ে এখানে কীভাবে কাজ সম্পন্ন হয় সে বিষয়ে দেখে নেওয়ার হুমকি প্রদান করেন, একই সঙ্গে প্রকল্পের অফিসের সমস্ত মালামাল লুটপাট করে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেওয়ার হুমকি প্রদান করেন। চেয়ারম্যান নজরুল হাজী তার সন্ত্রাসী বাহিনী দ্বারা প্রকল্পের কাজে নিয়োজিত কর্মচারীদের জীবননাশের হুমকি দেন। তাতে করে কর্মচারী ও শ্রমিকরা ভীতিসন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে।

তিনি বলেন, চাঁদার ১২ লাখ টাকার পাশাপাশি কমিশনের টাকা পর্যায়ক্রমে দিতে হবে একই সঙ্গে আকাশ নীলা ইকো ট্যুরিজমে আর রাদ কর্পোরেশন ফিসারিশ অ্যান্ড এগ্রো পার্কের নামে যে ঘের সরকারি বন্দোবস্তের মাধ্যমে নেওয়া হয়েছে সেই ঘেরেও একটি বড় অংশ থাকে দিতে হবে। অন্যথায় প্রকল্পের কাজ তিনি সম্পন্ন করতে দেবে না বলে জানিয়ে দেন। এ বিষয়ে গত ২২ আগস্ট প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডকইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস লিমিটেড ও বাংলাদেশ নৌবাহিনী সোনাকান্দা দপ্তরকে লিখিতভাবে অবহিত করা হয়।

লিখিত বক্তব্য তিনি বলেন, তারপরেও নজরুল হাজী ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী চাঁদা দাবিসহ হুমকি-ধামকি অব্যাহত রাখলে গত ১১ সেপ্টেম্বর শ্যামনগর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। এ ঘটনায় সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজ বাহিনী আরও ক্ষিপ্ত হয়ে প্রকল্প অফিস ভাঙচুর চালিয়ে প্রকল্পের সমস্ত কাজ বন্ধ করে দেয়। একই সঙ্গে প্রকল্প কর্মকর্তা কর্মচারীসহ কর্মরত শ্রমিকদের কাজ না করার নির্দেশ দিয়ে যান।

তিনি আরও বলেন, কোনো উপায়ান্তর না পেয়ে সাতক্ষীরার সেনা ক্যাম্পের অধিনায়কের কাছে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়। এরপর হুমকি ধামকি উপেক্ষা করে প্রকল্পের কাজ চলমান রাখা হয়। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক শ্যামনগরে প্রকল্পের কাজ প্রদর্শনে আসলে উক্ত সন্ত্রাসী ও চাঁদাবাজ বিভিন্ন মাধ্যমে ব্যবস্থাপনা পরিচালককে চাঁদা প্রদানের জন্য চাপ প্রয়োগ করেন এবং তাদের কথা না শুনলে আক্রমণ হতে পারে বলে ভয়-ভীতি দেখান।

তিনি বলেন, কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক অন্যায়ের কাছে নত শিকার করবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন। কোম্পানির সম্মান ক্ষুণ্ন করতে ৫ মার্চ তাদের নিজস্ব লোক দ্বারা মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন করেন। তাদের চাহিদা অনুযায়ী চাঁদা দিলে থেমে যাওয়ার কথাও জানান। সংবাদ সম্মেলনে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দুর্গাবাটি এলাকার ও ইয়ার্ডের জায়গা তার নিজের বলেও দাবি করেন। তবে এই জায়গাটি এক নম্বর খাস খতিয়ানের সরকারি সম্পত্তি যেটা জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করে সরকারি কাজে ব্যবহারের জন্য অনুমোদন নেওয়া হয়েছে। হাজী নজরুল প্রকল্পের অফিসের যেটা জায়গাটি নিজের বলে দাবি করে আসছেন, প্রকৃতপক্ষে সে জায়গাটি তাহার নয় সংবাদ সম্মেলনে তিনি যে দাগ নম্বর উপস্থাপন করেছেন সীট নং-৯ এ সে দাগ নম্বরটিও ভুল।

তিনি আরও জানান, বর্তমানে আমাদের এলসি পাথর জাহাজ প্রকল্পের সাইটের প্রায় কাছাকাছি চলে আসছে। আগামী সাত দিনের মধ্যে আমাদের আয়াত্তে পর্যাপ্ত পরিমাণ পাথর পৌঁছাবে। তাই আগামী সাত দিনের মধ্যেই কাজটি শুরু করা হবে। এ সময় সংশ্লিষ্ট সব দপ্তরসহ প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ধেয়ে আসছে অতি ভারী বৃষ্টিবলয় ‘স্পিড’, কবে কোথায় প্রভাব ফেলবে

এশিয়া কাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ নিয়ে যে সিদ্ধান্ত নিল ভারত সরকার

ইমিগ্রেশনের সময় যে ৭ কথা বললেই মহাবিপদ

সাগর-রুনির সন্তান মেঘের হাতে পূর্বাচলের প্লটের দলিল হস্তান্তর

৮ মামলায় ইমরান খানের জামিন

মাদ্রাসাপ্রধানদের জন্য অধিদপ্তরের জরুরি নির্দেশনা, না মানলে ব্যবস্থা

বরাদ্দ পেল বগুড়া বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

স্থিতিশীল অর্থনীতির জন্য গ্যাস উৎপাদন বাড়ানোর দাবি ব্যবসায়ীদের

কক্সবাজার যাচ্ছেন প্রধান উপদেষ্টা

যে বয়সের আগেই শিশুকে ৮ শিক্ষা দেওয়া জরুরি

১০

দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীকে ‘চাঁদাবাজ’ আখ্যা প্রধান শিক্ষকের, তদন্তে কমিটি

১১

চট্টগ্রাম-৩ আসনে ধানের শীষের মনোনয়নপ্রত্যাশী মিল্টন ভুঁইয়া

১২

বাড়ি ভাড়া ও চিকিৎসা ভাতা নিয়ে ‘সুখবর’ পাচ্ছেন শিক্ষক-কর্মচারীরা

১৩

ফেসবুক পেজ জনপ্রিয় করার ৮ কৌশল

১৪

বাড়ির আঙিনায় বিষধর পদ্মগোখরা, অতঃপর...

১৫

মোবাইল দিয়েই ডিএসএলআর ক্যামেরার মতো ছবি তোলার ৫ কৌশল

১৬

বরইতলা নদীর ‘বাঁধ’ এখন মৃত্যু যন্ত্রণায় কাতর

১৭

ইস্পাত খাতে বিশেষ তহবিল চান ব্যবসায়ীরা

১৮

বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য বৃদ্ধিতে আগ্রহী পাকিস্তান

১৯

উপকূলজুড়ে টানা বৃষ্টিপাত, জনজীবনে দুর্ভোগ

২০
X