সিলেটের এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৪০ ঘণ্টা ইন্টার্ন চিকিৎসকদের কর্মবিরতির (ধর্মঘট) পর কর্মসূচি প্রত্যাহার করা হয়েছে। ধর্মঘট প্রত্যাহার করে ডিউটিতে ফিরেছেন চিকিৎসকরা।
বুধবার (২৩ আগস্ট) বিকেল ৩টা থেকে ওসমানী হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদ তাদের কর্মসূচি প্রত্যাহার করলে চিকিৎসকরা কাজে যোগ দেন।
এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সীমান্ত মজুমদার। তিনি বলেন, চিকিৎসকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের আশ্বাসের ভিত্তিতে আমরা বুধবার বিকেল ৩টা থেকে কাজে যোগ দিয়েছি।
এ কর্মবিরতি প্রত্যাহার করার ফলে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সহস্রাধিক রোগীর ৪০ ঘণ্টার দুর্ভোগ শেষ হলো।
উল্লেখ্য, গত সোমবার (২১ আগস্ট) হাসপাতালের ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন নগরের দক্ষিণ সুরমার এক রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে চিকিৎসকদের ওপর হামলা, নার্সদের হেনস্তা ও চিকিৎসক এবং নার্সদের কক্ষ ভাঙচুর করার প্রতিবাদে অনির্দিষ্টকালের জন্য কর্মবিরতির (ধর্মঘট) ডাক দেয় ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদ।
এ ঘটনায় পুলিশ চারজনকে আটক করে। পরে ওইদিন রাতে হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার রওশন হাবীব বাদী হয়ে আটককৃত ওই চারজনের নামোল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও তিনজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
মামলার আসামিরা হলেন- মহানগরের মোগলাবাজার থানাধীন কুচাই নোয়াগাঁওয়ের শাহাব উদ্দিনে ছেলে জুবেল আহমদ (২৭), তার সহোদর জুয়েল আহমদ (২৩) ও সাবেল আহমদ (২১) এবং তাদের চাচা একই গ্রামের বাতির আলীর ছেলে আব্দুল মালেক (৫৪)।
ওসমানী হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মাহবুবুর রহমান ভূঁইয়া জানান, বুধবার বিকেল ৩টা থেকে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা তাদের ডিউটিতে ফিরেছেন। আশা করব হাসপাতালে আসা রোগীরা নিয়মশৃঙ্খলা মেনে স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণ করবেন।
জানা গেছে, গত রোববার (২০ আগস্ট) কুচাই শ্রীরামপুর নোয়াগাঁওয়ে বাতির আলীর ছেলে শাহাব উদ্দিনকে (৪০) মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত কারণে হাসপাতালের ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের ১৯ নম্বর শয্যায় ভর্তি করা হয়। এরপর দিন সোমবার সন্ধ্যায় হাসপাতালের ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সদের সাথে রোগীর স্বজনদের কথাকাটাকাটি হয়।
ইন্টার্ন চিকিৎসকদের অভিযোগ, রোগীর স্বজনরা ওয়ার্ডে দায়িত্বরত ইন্টার্ন চিকিৎসক ও নার্সদের হেনস্তা করেন। ওয়ার্ডের ভেতরে চিকিৎসক ও নার্সের কক্ষ ভাঙচুর চালান। এ ঘটনায় হাসপাতালের চিকিৎসক নার্সসহ চারজন আহত হন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে চারজনকে আটক করে।
এ ঘটনার প্রতিবাদে গত সোমবার রাতে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির ডাক দেয় ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদ।
কর্মবিরতির ডাক দেওয়ার পর ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দুই দফায় ইন্টার্ন চিকিৎসকদের সাথে বৈঠক করলেও কর্মবিরতি প্রত্যাহার করেননি আন্দোলনকারীরা।
মন্তব্য করুন