‘কাজ করলে পেটে ভাত আসবে, না হয় পরিবার ছাওয়াল নিয়ে উপস থাকতে হবে। আমাদের কেউ খবর রাখে না। আমাদের কোনো বিশেষ দিন নেই।’ এভাবে কথাগুলো বলেছিলেন কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের ৩৬ বছর বয়সী ইটভাটা শ্রমিক নেজাম উদ্দিন।
বৃহস্পতিবার (১ মে) সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, লাকসাম বাংড্ডা সড়কের পাশে অবস্থিত ছাতিয়ানী গ্রামে মজুমদার ব্রিক ফিল ও ফাতেমা ব্রিক ফিল্ডে প্রচণ্ড গরমের মধ্যে অল্প বয়সী কিছু নারী ও পুরুষ শ্রমিক কাজ করছেন। কেউ ইট ভাঁজ করছে, কেউ কাঁধে ভর করে ইট টানছে। কাজের ফাঁকে ফাঁকে কথা হয় এসব শ্রমিকদের সঙ্গে। আলাপচারিতায় বেরিয়ে আসে তাদের দুঃখ-দুর্দশার কাহিনি।
শ্রমিক ইসরাফিল বলেন, একপাশে প্রচণ্ড ইটের বাটনার চুলার গরম, তার মধ্যে আশপাশে একটি গাছও নেই। এই রোদ আর গরম ভালো লাগে না। দাদনের টাকা নিয়েছি, শোধ করতে পারলে দেশে ফিরে যাব।
আঠার বছর বয়সী সুজন বলেন, কিশোরগঞ্জ থেকে এসেছি। গরিবের পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছি, বাড়িতে বাবা-মা থাকে। তাদের কথা চিন্তা করে আমরা দুই ভাই দাদনের মাধ্যমে টাকা নিয়ে ছয় মাসের জন্য এখানে কাজ করছি।
নারী শ্রমিক জোসনা বেগম বলেন, কাজ করলে দাদনের টাকা শোধ হবে। বৃষ্টি হলে কাজ ক্ষতিগ্রস্ত হবে, তখন মহাজন বকাঝকা করবে। কাজ করলে খাবারের ব্যবস্থা হবে আর কাজ না করলে মহাজন টাকা দেবে না।
কুমিল্লা দক্ষিণ শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা দিদার মিয়া বলেন, সারা দেশে কর্মসংস্থানের অভাব, অনেক মানুষ বেকার আমাদের কর্মসংস্থান নেই। ব্রিক ফিল্ডে যে শ্রমিকরা কাজ করে তাদের অনেক পরিশ্রম হয়। তারা দাদনের মাধ্যমে এখানে কাজে যোগদান করে। সময় শেষ হলে তারা আবার চলে যায়। ব্রিক ফিল্ডের শ্রমিকসহ সব শ্রমিকের জন্য দরকার একটা ন্যূনতম মজুরি।
মন্তব্য করুন