বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেছেন, শেখ হাসিনাসহ স্বৈরাচারের সব দোসরদের বিচার সবাই চায়। আমরাও চাই। কিন্তু একটি বিচারকার্য সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে অন্তত ৪-৫ বছর লেগে যায়। তাই বিচারের জন্য নির্বাচন বন্ধ রাখা চলবে না।
তিনি বলেন, ১৬ বছরে কেউ ভোট দিতে পারে নাই। নির্বাচনের জন্যই আন্দোলন সংগ্রাম ও যুদ্ধ করে ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে বিদায় করা হয়েছে। তাই সংস্কারের নামে নির্বাচন বন্ধ রাখার কোনো অর্থই হয় না।
শনিবার (৩ মে) সন্ধ্যায় সিরাজগঞ্জ আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ মেমোরিয়াল বার লাইব্রেরি মিলনায়তনে সুধীজনদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
এসময় তিনি আরও বলেন, বিএনপির ৩১ দফার মধ্যে সব সংস্কারের কথা বলা হয়েছে। দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট পার্লামেন্ট, প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা ভারসাম্য, একজন দুবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী হতে পারবে না ও অর্থনৈতিক সংস্কার সব ধরনের সংস্কার। বিচার বিভাগের সংস্কারের কথা উল্লেখ করে বলেন, বিগত সময়ে বিচারকরা বিচার করত না। হাসিনার থেকে ওহি নাজিল হতো বিচারকরা সেটাই বাস্তবায়ন করত। যেসব দল যেসব পয়েন্টে একমত হয়েছে সেগুলোর জন্য প্যানেল তৈরি করে সংস্কার করে নির্বাচন করা যাবে। এর জন্যতো জুন মাস পর্যন্ত সময় লাগবে কেন? তাই ডিসেম্বর মধ্যেই নির্বাচন দিতে হবে।
টুকু বলেন, শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে পিতা হত্যার বদলা নিতে গিয়ে দেশকে ও জাতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে। আওয়ামী লীগের ক্ষমতায় আসা মানেই ইতিহাস বিকৃতি শুরু হয়। ’৭১-৭৫-এর ইতিহাস মানুষ জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী আওয়ামী লীগ মাত্র পাঁচ দিনে দেড় হাজার মানুষ হত্যা করেছে।
ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু আরও বলেন, কেউ কেউ বলে আওয়ামী লীগ যা করেছে বিএনপি ক্ষমতায় এলে তাই করবে- এমন কথা বিএনপির বেলায় মানায় না। আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিএনপির তুলনা যারা করে- তারা মিথ্যা কথা বলে। মূলত তারা বিএনপির জনপ্রিয়তাকে ভয় পায়। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে যত জঘন্য কাজ করেছে, বিএনপি ক্ষমতায় থেকে তার ছিটেফোঁটাও করে নাই। আওয়ামী লীগের নেতারাই বলেছিল, ক্ষমতাচ্যুত হলে আওয়ামী লীগের লাখ লাখ লোক মারা যাবে। ৫ আগস্টের পরে বিএনপির হাতে একজন লোকও মরে নাই। কারণ আমরা শান্ত থেকেছি। বিএনপি শান্তি প্রিয় দল।
আওয়ামী লীগের নির্যাতনের কথা উল্লেখ করে টুকু বলেন, বেগম খালেদা জিয়া পায়ে হেঁটে জেলে গিয়েছিলেন, হুইল চেয়ারে বেরিয়ে এসেছেন। হাজার হাজার নেতাকর্মীকে নির্যাতন, জুলুম অত্যাচার করেছে। উন্নয়নের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করেছে।
জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি শাকিল মোহাম্মদ শরিফুর হায়দার রফিক সরকারের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ছাইদুর রহমান বাচ্চু। এসময় বিএনপির স্থানীয় নেতৃবৃন্দ সাংবাদিক ও আইনজীবীসহ সর্বস্তরের পেশাজীবী নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন