সাভারে আগস্টের ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদ শিক্ষার্থী শ্রাবণ গাজীর মরদেহ উত্তোলনে বাধা দেয় তার পরিবার। ফলে মরদেহ উত্তোলন কার্যক্রম স্থগিত করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বাধীন সিআইডি টিম।
মঙ্গলবার (৬ মে) দুপুরে আদালতের নির্দেশে আশুলিয়ার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাদিয়া আক্তারের নেতৃত্বে সিআইডির একটি দল ময়নাতদন্তের জন্য সাভারের ডেইরি ফার্ম আবাসিক এলাকার কবরস্থান থেকে শহীদ শ্রাবণের মরদেহ উত্তোলনে যান।
কিন্তু খবর পেয়ে দ্রুত কবরস্থানে পৌঁছান শ্রাবণের স্বজনরা। তারা ধর্মীয় ও পারিবারিক অনুভূতির কথা জানিয়ে মরদেহ উত্তোলনে বাধা দেন। একপর্যায়ে সিআইডি ও ম্যাজিস্ট্রেটের দল মরদেহ উত্তোলন না করেই ফিরে যান।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাদিয়া আক্তার সাংবাদিকদের বলেন, আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী সকল প্রস্তুতি নিয়ে আমরা এসেছিলাম। তবে শহীদের পরিবারের সদস্যরা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, তারা দীর্ঘদিন পর সন্তানের মরদেহ উত্তোলন করতে চান না। তাদের অনুভূতির প্রতি সম্মান জানিয়ে আমরা ফিরে গিয়েছি। আদালতকে এ বিষয়টি অবগত করা হবে।
এ ঘটনায় এলাকায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। অনেকেই বলছেন, শহীদ শ্রাবণ গাজীর পরিবার যা করেছে তা একান্তই তাদের ব্যক্তিগত এবং ধর্মীয় সিদ্ধান্ত। অন্যদিকে, অনেকে মনে করছেন, ন্যায়বিচারের স্বার্থে তদন্ত প্রক্রিয়া চলা উচিত।
উল্লেখ্য, মো. শ্রাবণ গাজী (২০) জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন আশুলিয়ার ডেইরি ফার্ম এলাকার মো. মান্নান গাজী ও শাহনাজ বেগম দম্পতির একমাত্র ছেলে। দুই ভাই-বোনের মধ্যে শ্রাবণ ছিল বড়। মালয়েশিয়ার টুঙ্কু আব্দুল রহমান ইউনিভার্সিটি অব ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড টেকনোলজিতে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়াশোনা করছিলেন শ্রাবণ। তিনি গত ১৬ জুলাই দেশে আসেন।
ঘটনার দিন গত ৫ আগস্ট জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মার্চ টু ঢাকা কর্মসূচির অংশ হিসাবে ছাত্র-জনতার যেই পদযাত্রা শুরু হয়, সেই পদযাত্রার অগ্রভাগে ছিলেন শ্রাবণ। পদযাত্রাটি সাভারে পৌঁছানোর পর হঠাৎ একটি গুলি এসে শ্রাবণের মাথায় লাগলে মুহূর্তেই মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় নিহতের বাবা মান্নান গাজী বাদী হয়ে গত ২২ আগস্ট আশুলিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।
মন্তব্য করুন