বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির প্রণীত ৩০ দফা শিক্ষা সংস্কার প্রস্তাবনা নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রোববার (১৭ আগস্ট) ছাত্রশিবিরের একটি প্রতিনিধি দল সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে মতবিনিময় করে।
প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক সিবাগতুল্লাহ। মতবিনিময় শেষে তিনি শিক্ষা সচিবের নিকট ছাত্রশিবির প্রণীত ৩০ দফা শিক্ষা সংস্কার প্রস্তাবনার কপি আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর করেন।
প্রতিনিধি দলে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সমাজসেবা সম্পাদক আব্দুল মোহাইমেন, ব্যবসায় শিক্ষা সম্পাদক গোলাম জাকারিয়া, শিক্ষা সম্পাদক মুহাম্মাদ ইব্রাহিম, বিতর্ক সম্পাদক আসাদুল ইসলাম এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি রিয়াজুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদের উদর থেকে জন্ম নেওয়া শিক্ষাব্যব্স্থাকে আধুনিক, যুগোপযোগী ও নৈতিক মূল্যবোধের ভিত্তিতে পুনর্গঠনের জন্য শিক্ষানীতি, পাঠ্যক্রম, শিক্ষা ব্যবস্থাপনা, মূল্যায়ন পদ্ধতি ও শিক্ষক প্রশিক্ষণসহ বিবিধ বিষয়কে সামনে রেখে ছাত্রশিবিরের পক্ষ থেকে ৩০ দফা সংস্কার প্রস্তাবনা জাতির সামনে তুলে ধরা হয়।
মতবিনিময় ও শিক্ষা সংস্কার প্রস্তাবনা হস্তান্তর শেষে সিবাগতুল্লাহ বলেন, ‘বাংলাদেশের তরুণ ছাত্রসমাজের রক্তের বিনিময়ে এ সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ছাত্রসমাজ প্রত্যাশা করেছিল, দেশের প্রতিটি সেক্টরে আমূল পরিবর্তন আসবে। কিন্তু একটি ছাত্রসংগঠন হিসেবে আমরা লক্ষ্য করছি, শিক্ষা খাতে যে ধরনের পরিবর্তন প্রয়োজন ছিল, তার ন্যূনতম প্রতিফলনও দেখা যাচ্ছে না। পূর্বেও এই খাতে ব্যাপক অব্যবস্থাপনা ছিল, এখনো সেই অবস্থা বহাল রয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থায় আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাকে পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করা হয়েছিল। পাঠ্যসূচিতে গল্প ও কবিতার মাধ্যমে জাতীয় সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও মূল্যবোধ প্রতিফলিত হওয়ার পরিবর্তে তা উপেক্ষিত হয়েছে। পাঠ্যসূচি, পাঠ্যক্রম, শিক্ষা কাঠামো, ছাত্র-শিক্ষকের সুযোগ-সুবিধাসহ শিক্ষা-সংশ্লিষ্ট প্রতিটি ক্ষেত্রে আমূল সংস্কার সময়ের দাবি। কিন্তু শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সেই পরিবর্তনের মনোভাব আমরা দেখতে পাচ্ছি না।’
সিবাগতুল্লাহ বলেন, ‘আমরা আশা করি, ছাত্রশিবির প্রস্তাবিত ৩০ দফা শিক্ষা সংস্কার প্রস্তাবনাটি সরকার গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবে। পাশাপাশি অন্যান্য সংগঠন, শিক্ষাবিদসহ শিক্ষা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন অংশীজনদের মূল্যবান মতামত অন্তর্ভুক্ত করে দেশের সার্বিক কল্যাণে আগামী বছর থেকেই এর বাস্তবায়নের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘একটা জাতি গঠনে প্রধান উপাদান শিক্ষা ব্যবস্থাকে উপেক্ষা করলে সৎ, দক্ষ ও দেশপ্রেমিক নাগরি তৈরির মাধ্যমে জাতি গঠনের যে স্বপ্ন দেখেছে আমাদের শহীদরা, তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে না। আমরা আশা করব, সরকার এই বিষয়টা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবে।’
মন্তব্য করুন