সাইফুল ইসলাম রয়েল, কলাপাড়া (পটুয়াখালী)
প্রকাশ : ২৮ মে ২০২৫, ০৩:০৫ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

বৃষ্টির ‘মন খারাপের’ দিনে ছাতা কারিগরদের মুখে হাসি

ছাতা মেরামতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কারিগর। ছবি : কালবেলা
ছাতা মেরামতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কারিগর। ছবি : কালবেলা

কেউ এসেছেন ছাতার শিক মেরামত করতে, আবার কেউ শক্ত গুনায় মুড়িয়ে ছাতা টেকসই করে নিতে। তবে কে আগে বর্ষায় সুরক্ষা উপকরণ হাতে পেয়ে গন্তব্যে ছুটবেন- তাই নিয়ে বেশ তাড়াহুড়ো বৃষ্টিভেজা মানুষের। ঠিক যেন মৌসুমি চিন্তায় স্বল্প খরচে শরীর সুরক্ষার তাগিদে নেমেছেন তারা।

আর আগে যাওয়ার এমন প্রতিযোগীদের ভিড়ে খুশির দরজা খুলেছে দীর্ঘ অপেক্ষায় থাকা ছাতা কারিগরদের। তাই এখন ক্রেতাদের মন রক্ষায় দ্রুত হাত চালাচ্ছেন ছাতা মেরামতকারিরা।

একদিকে মৌসুমি বায়ুর প্রভাব, অন্যদিকে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট লঘুচাপ- সব মিলিয়ে বুধবার (২৮ মে) সকাল থেকেই পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় মুশলধারে ঝরছে মেঘভাঙ্গা বৃষ্টি। আর বর্ষার এমন মন খারাপের দিনে ঘর থেকে বের হওয়াটাও মুশকিল। চাকরিজীবীসহ কর্মজীবী মানুষের গন্তব্যে পৌঁছাতেও বেগ পেতে হচ্ছে।

তাই ছাতা হাতেই ছুটতে হচ্ছে অতি প্রয়োজনীয় কাজে। ফলে ছাতার কদরও বেড়েছে কয়েকগুণ। আর এতেই ব্যস্ততাসহ আয় বেড়েছে কলাপাড়ার ছাতা কারিগরদের মাঝে। যেন দম ফেলারও ফুরসত নেই তাদের।

সরেজমিনে দেখা যায়, পৌর শহরের বিভিন্ন দোকানের সামনেই ছাতা মেরামতের সরঞ্জাম নিয়ে পসরা সাজিয়েছেন অনেক কারিগর। এদেরই একজন ইব্রাহীম খলিল। যার দোকানের চারপাশে ভিড় করে দাঁড়িয়ে আছেন অনেক বৃষ্টিভেজা মানুষ। আর অপলক দৃষ্টিতে দেখছেন ছাতা মেরামতের দৃশ্য।

কথা হয় ছাতা মেরামত করতে আসা চাকামইয়া ইউপির বাসিন্দা নুরুল হক হাওলাদারের সঙ্গে। তিনি জানান, গত কদিন ধরে বৃষ্টির কবলে পড়ে ভিজে বাড়ি ফিরেছেন। দিনমজুরি কাজ করে সংসার চলে তার। তাই নতুন ছাতা কেনার রসদও নেই তার হাতে। ফলে শিক ভাঙ্গা ছাতা মাত্র ৭০ টাকায় ঠিক করে নিয়েছেন। এ কারণে অন্তত ২শ টাকা বেঁচে গেছে বলেন এই শ্রমজীবী।

এই দোকানে ২টি ভাঙ্গা ছাতা নিয়ে এসেছেন মো. বাচ্চু আকন। জানালেন, ১শ ৮০ টাকায় সম্পূর্ণ ঠিক করে নিয়েছেন ছাতাগুলো। এখন তার পরিবার এবং সন্তানের স্কুলে যেতে সুরক্ষা দেবে এই ছাতা। এছাড়া নতুন ক্রয়ের ব্যয় থেকেও সাশ্রয় হয়েছে তার।

কথা হলে কারিগর ইব্রহিম জানান, ৩০ বছর ধরে এ পেশায় নিয়োজিত রয়েছেন তিনি। সারা বছর এই মৌসুমের অপেক্ষায় থাকেন তারা। এখন থেকে আগামী দুমাস ছাতার বিভিন্ন ত্রুটি নিয়ে তাদের কাছে আসবেন ক্রেতারা। ফলে বিক্রি ও মেরামতের মজুরিও পাচ্ছেন বেশ ভালো। গড়ে প্রায় প্রতিদিন ৭০-৮০টি ছাতা ঠিক করে কাস্টমারকে দিতে পারছেন। আর এতে ১২শ টাকা বা এর চেয়েও বেশি আয় হবে কারিগরদের। তার ভাষ্যমতে বর্ষার মন খারাপের দিনে তাদের ভাগ্য খুলে যায়।

কলাপাড়া পৌর বন্দর ব্যবসায়ী সমিতির যুগ্ম সম্পাদক রেহান উদ্দিন কালবেলাকে বলেন, মূলত ছাতা কারিগররা গরীবের বন্ধু। যাদের আর্থিক সচ্ছলতা কম, তারা এই কারিগরদের মাধ্যমে স্বল্প খরচে ঠিক করে ছাতা নিয়ে চলতে পারেন। এছাড়া নতুন ছাতার দাম সবার ক্রয়সাধ্যে থাকেও না। অল্প আয়ের মানুষজন তাই নতুন ছাতা কেনার চেয়ে ঘরে পড়ে থাকা ভাঙ্গা ছাতা মেরামতের দিকেই ঝুঁকছেন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

পালিয়ে থেকেও শেষরক্ষা হলো না রাকিবের

সাকিব ইস্যুতে যা বললেন বিসিবির নতুন সভাপতি

সিরিজ বাঁচাতে রানের পাহাড় টপকাতে হবে বাংলাদেশকে

শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রোগীদের মাঝে খাবার বিতরণ

যুক্তরাষ্ট্রে বন্ধ হচ্ছে ‘বার্থ ট্যুরিজম’

১০ দিনের ব্যবধানে হাতির আক্রমণে বৃদ্ধার মৃত্যু

পোস্টিং পছন্দ হয়নি তাই হাসপাতালে আসেন না চিকিৎসক

বাংলাদেশ-জাপান অর্থনৈতিক অংশীদারত্ব চুক্তি চলতি বছর

‘চিকেনস নেক’-এ রাফাল জেট ও এস-৪০০ বসাল ভারত

জিএম কাদেরের বাড়িতে হামলা, নেপথ্যে কারা

১০

টাঙ্গুয়ার হাওরে পর্যটকবাহী নৌকায় আগুন

১১

সমাজ পরিবর্তন শুধু স্লোগানে হবে না : ডা. তাহের

১২

যেসব কারণে পতন হলো ফারুক আহমেদের

১৩

চট্টগ্রামে পশুরহাটে উট, দর্শনার্থীদের ভিড়

১৪

রিয়ালে যোগ দিলেন আর্নল্ড

১৫

আতিকের বিরুদ্ধে ঘুষ দাবির অভিযোগ

১৬

গণতন্ত্রের প্রত্যাশায় দেশের মানুষ অপেক্ষা করছে : আমীর খসরু

১৭

আনোয়ারায় ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ মেরামতে সেনাবাহিনীর সহায়তা

১৮

বড় ভাইয়ের বঁটির কোপে ছোট ভাই নিহত

১৯

জিয়াউর রহমানের আদর্শই জাতীয়তাবাদী শক্তির মূল প্রেরণা : নয়ন

২০
X