মাদারীপুরে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতের বাড়িতে মৌসুমি ফল বিতরণ শেষে ফেরার পথে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন পাঁচজন।
মঙ্গলবার (১০ জুন) রাত ৮টার দিকে জেলার মুকসুদপুর উপজেলার ছাগলছিড়া এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটেছে।
হামলায় আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি মাদারীপুর জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যুগ্ম আহ্বায়ক আশিকুর ইসলাম (২৩) ও কিরণ আক্তার (২৬)। এছাড়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যসচিব মাসুম বিল্লাহ, আরেক যুগ্ম আহ্বায়ক দিয়া ইসলাম ও মিথিলা ফারজানা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন বলে জানা গেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যদের একটি দল জুলাই আন্দোলনে রাজৈর উপজেলার শহীদ ও আহত পাঁচ শিক্ষার্থীর বাড়িতে মৌসুমি ফল বিতরণ করে মাদারীপুর শহরে ফিরছিলেন। ফেরার পথে তাদের বহনকারী পিকআপভ্যান রাজৈর উপজেলার সীমান্তবর্তী গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর উপজেলার ছাগলছিড়া এলাকার একটি রেস্তোরাঁয় গিয়ে তারা বসেন। এ সময় ছাত্রদের লক্ষ্য করে কটূক্তিমূলক মন্তব্য করেন একটি বাসের শ্রমিকরা। এর প্রতিবাদ করতে ওই বাসে ওঠেন কয়েকজন ছাত্র। এ সময় বাসের শ্রমিকদের সঙ্গে তাদের কথাকাটাকাটি হয়।
একপর্যায়ে বাসের শ্রমিক ও রেস্তোরাঁর কর্মরত শ্রমিকরা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীদের ওপর লাঠি নিয়ে হামলা চালায়। এ সময় স্থানীয় জনতা এগিয়ে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। পরে আহতদের উদ্ধার করে মাদারীপুর জেলা হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
মাদারীপুর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক অখিল সরকার বলেন, দুইজন ছাত্রনেতা আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি আছেন। এ ছাড়া মারধরের শিকার আরও কয়েকজনকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
মাদারীপুর জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যুগ্ম আহ্বায়ক দিয়া ইসলাম বলেন, আমাদের নারী সদস্যরাও হামলাকারীদের হাতে মারধরের শিকার হয়েছেন।
গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্যসচিব জাবের বিন নূর জানান, রেস্টুরেন্টে আমরা খাওয়া-দাওয়া করার জন্য আসি। এ সময় আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালানো হয়। এ ঘটনায় মাদারীপুর জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই নেতা কিরণ ও আশিক গুরুতর আহত হয়েছেন। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। হামলাকারীদের দ্রুত বিচার দাবি করছি।
গোপালগঞ্জ জেলার মুকসুদপুর থানার ওসি মোস্তফা কামাল জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীদের ওপর হামলার ঘটনায় উপজেলা চরপ্রসন্নদী গ্রামের আজিজুল শেখের ছেলে ইব্রাহিম শেখ ওরফে সাগরকে আটক করা হয়েছে। বাকিদের ধরতে আমাদের পুলিশে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের ওপর হামলার খবর পেয়ে ঘটনাস্থল ও হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।
মন্তব্য করুন