মানিকগঞ্জের ঘিওরের বিভিন্ন বাজারে পানির দামে বিক্রি হচ্ছে দুধ, যা বাজারের বোতলজাত লিটার পানির সমান। বাজারে দুধের সরবরাহ বেশি এবং চাহিদা কমে যাওয়ায় অনেক খামারিই এখন বাধ্য হয়ে কম দামে দুধ বিক্রি করছেন। অন্যদিকে গো-খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছে খামারিরা।
রোববার (২২ জুন) সকালে সরেজমিনে উপজেলার সিংজুরী বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতিদিনের মতোই আশপাশের প্রায় ২০ গ্রামের স্থানীয় খামারি ও কৃষক বাজারে দুধ বিক্রি করতে এসেছেন। মান ভেদে প্রতি লিটার দুধ বিক্রি হচ্ছে ৩০ থেকে ৪০ টাকা লিটার।
বাজারের ব্যবসায়ীদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, প্রতিদিন এই বাজারে ১৫০ থেকে ২০০ মণ দুধ বিক্রি হয়ে থাকে। বিভিন্ন জায়গা থেকে মিষ্টির দোকানি ও পাইকাররা দুধ কিনে থাকেন।
দুধ বিক্রি করতে আসা কৃষক মজনু মিয়া বলেন, প্রতিদিনের মতোই বাজারে ১৮ কেজি দুধ নিয়ে এসেছি। বৃষ্টির কারণে বাজারে পাইকার কম থাকায় বাধ্য হয়ে ৪০ টাকা দরে দুধ বিক্রি করেছি। যেখানে গো-খাদ্য ১ কেজি ভুসির দাম ৫৫ টাকা, সেখানে এক কেজি দুধের দাম ৪০ টাকা।
কৃষক আ. হালেম বলেন, বাজারের দুধের দাম খুবই কম। ৯ লিটার দুধ এনেছি, ৩৫ টাকা দরে বিক্রি করেছি, যা বিক্রি করে গরুর খাদ্যও হচ্ছে না।
বাজারের দুধের পাইকার হাবিব ঘোষ জানায়, বৃষ্টির কারণে দুধের চাহিদা কমে গেছে এবং বাজারে আম-কাঁঠাল ওঠায় মিষ্টির দোকানে দুধের চাহিদা কম। যার প্রভাব পড়েছে প্রান্তিক খামারিদের ওপর। তবে কিছুদিনের মধ্যে দুধের চাহিদা বেড়ে যাবে। তখন খামারিরা ভালো দাম পাবে।
সচেতন খামারিরা বলছেন, এই সমস্যা সমাধানের জন্য সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এগিয়ে আসতে হবে। দুধের একটি ন্যায্য দাম নিশ্চিত করতে হবে, যা খামারিদের উৎপাদন খরচ মিটিয়ে লাভজনক হয়।
জেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ মজিবুর রহমান বলেন, আমরা নিয়মিত বাজার মনিটরিং করছি। বর্তমানে দুধের উৎপাদন বেশি, বাজারে দুধের চাহিদা কম। কোরবানির ঈদ পরবর্তী বাজারে দেশীয় ফলের মৌসুম শুরু হয়েছে, এর ফলে দুধের দাম খুব কম যাচ্ছে। তবে দ্রুতই দুধের ন্যায্য দাম পাবে কৃষক। খামারিদের হতাশ না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
মন্তব্য করুন