অদম্য মনোবল ও শিক্ষার প্রতি অগাধ ভালোবাসার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন শরীয়তপুরের এক এইচএসসি পরীক্ষার্থী। শরীয়তপুর সরকারি কলেজের মানবিক শাখার শিক্ষার্থী ইশা আলম (১৮) সন্তান জন্মদানের মাত্র দুই দিন পর হাসপাতালের বিছানায় বসেই অংশ নেন বাংলা দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষায়।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, শরীয়তপুর সদর উপজেলার তুলাশার গ্রামের বাসিন্দা মো. শাহ আলম সিকদারের মেয়ে ইশার বিয়ে হয় ২০২৩ সালের ২৮ জুন কাশাভোগ এলাকার মাহবুবুর রহমান তুষারের সঙ্গে। তুষার ঢাকায় একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত।
সন্তানসম্ভবা অবস্থায়ই চলতি এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছিলেন ইশা। গত বৃহস্পতিবার বাংলা প্রথম পত্র পরীক্ষার পর শুক্রবার রাতে প্রসববেদনা শুরু হলে তাকে শহরের একটি ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। ওই রাতেই তিনি কন্যাসন্তানের জন্ম দেন।
শারীরিক দুর্বলতা সত্ত্বেও রোববার (২৯ জুন) সকাল ১০টায় বাংলা দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষায় অংশ নেন তিনি। অধ্যক্ষের অনুমতি নিয়ে কলেজের একজন নারী শিক্ষক ও একজন নারী পুলিশ সদস্যের উপস্থিতিতে ক্লিনিকেই পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়।
ইশার স্বামী মাহবুবুর রহমান তুষার জানান, ইশা সবসময় পড়াশোনাকে গুরুত্ব দিয়েছে। সন্তান জন্মের পরপরই সে পরীক্ষায় বসবে- এটা কল্পনাও করিনি। কলেজ কর্তৃপক্ষের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ।
ইশা আলম বলেন, আমার স্বপ্ন বিচারক হওয়া। নারী অধিকার ও ন্যায়ের পক্ষে কাজ করতে চাই। কঠিন সময়ে পাশে থাকা সবার প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।
সরকারি গোলাম হায়দার খান মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মো. ওয়াজেদ কামাল কালবেলাকে বলেন, মানবিক বিবেচনায় পরীক্ষার বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছে। ইশার হাতের লেখা ছিল চমৎকার এবং সে মনোযোগের সঙ্গে পরীক্ষা দিয়েছে। মেয়েরা যেন সব বাধা অতিক্রম করে এগিয়ে যেতে পারে- এই আমাদের প্রত্যাশা।
মন্তব্য করুন