মঠবাড়িয়া (পিরোজপুর) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ০৪ জুলাই ২০২৫, ০৩:৫২ পিএম
অনলাইন সংস্করণ
জুলাই আন্দোলন

এখনো ছেলের ফিরে আসার অপেক্ষায় মা

ঘরের দরজার সামনে অশ্রুসিক্ত চোখে শহীদ জাফরের মা। ছবি : কালবেলা
ঘরের দরজার সামনে অশ্রুসিক্ত চোখে শহীদ জাফরের মা। ছবি : কালবেলা

ছেলে আবু জাফরের ফেরার অপেক্ষায় মা সেতারা বেগম। প্রায়ই স্বপ্নে দেখেন ছেলে ফিরে আসার। ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদে ওঠেন তিনি। ছেলের ফিরে আসার অপেক্ষায় দরজার পাশে দাঁড়িয়ে থাকেন তিনি।

জানা গেছে, ২০২৪ সালের ১৮ জুলাই সন্ধ্যায় রাজধানীর গোলাপবাগে আন্দোলনের সময় গুলিতে নিহত হন জাফর। ১৯ জুলাই রাতে গ্রামের বাড়িতে তার লাশ দাফন করা হয়।

গ্রামের বাড়ি পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার ছোট মাছুয়া গ্রামে। পরিবারের ছোট ছেলে আবু জাফর স্ত্রী ও তিন ছেলেকে নিয়ে বসবাস করতেন। শ্যামলী পরিবহনের চালক ছিলেন তিনি।

জাফরের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, এখনো ঘরের ভেতরে বৃদ্ধা মা সেতারা বেগম ছেলে হারানোর শোকে কান্নাকাটি করছেন। তিনি বলেন, আবু জাফরের আয়েই সংসার চলত। পৈতৃক সূত্রে পাওয়া বসতবাড়িটি ছাড়া আর কোনো সম্পদও নেই। আমার ছেলের অপরাধ কী? কেন গুলিতে তার মরতে হলো? আবু জাফরের তিন ছেলের মধ্যে বড় ছেলে পড়াশোনা শেষ করে বেকার। মেজ ছেলে কেরানীগঞ্জের একটি মাদ্রাসায় এবং ছোট ছেলে স্থানীয় বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়াশোনা করে। তার মৃত্যুতে আমরা নিঃস্ব হয়ে গেছি। এই সরকার আমার সন্তান হত্যার বিচার করবে। আমরা ন্যায়বিচার চাই। অন্তত মৃত্যুর আগে সন্তান হত্যার বিচার দেখে যেতে চাই।

জাফরের পরিবারের সদস্যরা জানান, ১৭ জুলাই সন্ধ্যায় শ্যামলী পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস নিয়ে মঠবাড়িয়া থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন তিনি। পরদিন বিকেলে তাকে ফোন করে বাস কাউন্টারে যেতে বলেন পরিবহনটির কর্মকর্তারা। ফোন পেয়ে ওই দিন সন্ধ্যা সাতটার দিকে ঢাকার বাসা থেকে বের হয়ে হেঁটে কর্মস্থলের দিকে যাচ্ছিলেন। পরে রাজধানীর গোলাপবাগ এলাকায় পৌঁছানোর পর পুলিশের ছোড়া গুলি এসে তার গলা ও বুকে বিদ্ধ হয়। এতে তিনি ঘটনাস্থলে সড়কের ওপর লুটিয়ে পড়েন। আশপাশের পথচারীরা উদ্ধার করে মুগদা হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। পথচারী এক নারীর কাছ থেকে মুঠোফোনে জাফরের মৃত্যুর খবর পান তারা।

বাসচালক আবু জাফরের পরিবারের দিকে খেয়াল রাখার কথা জানান উপজেলা সমাজসেবা অফিস। কর্মকর্তা মো. শফিকুল আলম জানান, পরিবারকে প্রয়োজনীয় সরকারি সহায়তা দেওয়া হয়েছে। তার পরিবারকে সরকারের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করতে প্রচেষ্টা চলমান।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

বাংলাদেশ ছাত্রপক্ষের সভাপতি মুহাম্মদ প্রিন্স ও সা. সম্পাদক রাফিউর রহমান

চট্টগ্রামে ৩ হাজার লিটার অকটেনসহ একজন আটক

চট্টগ্রামে চালু হলো থাইল্যান্ডের মেডপার্ক হাসপাতালের অফিস

একসঙ্গে ৩ কন্যা সন্তানের জন্ম

রাতে সন্দেহজনক ঘোরাফেরা করছিল রোহিঙ্গা কিশোর, অতঃপর...

কমিউনিটি ব্যাংকের সঙ্গে হোটেল সারিনার ব্যবসায়িক চুক্তি স্বাক্ষর

এ-লেভেল শেষ করেই এ-লেভেলের পাঠ্যবই লিখলেন সালাহউদ্দিন-পুত্র

ফিরছিলেন হজ শেষে, বিমানবন্দরে আ.লীগ নেতা আটক

ইরানের দূতাবাসে ‘নেতানিয়াহুর অপরাধের’ নিন্দা জানালেন ইহুদিরা

তেলবাহী ট্রাকচাপায় নিহত ৩, আহত ৪

১০

স্থানীয় শিল্পে উৎপাদিত ফ্রিজ, এসির খুচরা যন্ত্রাংশ আমদানিতে সম্পূরক শুল্ক প্রত্যাহার

১১

যুদ্ধবিরতির পর প্রথম আলোচনায় বসছে ইরান-যুক্তরাষ্ট্র

১২

জুলাইয়ে আহত সাংবাদিকদের খোঁজ নেয়নি কেউই!

১৩

৫ দিনের আলটিমেটাম ট্রাম্পের, শুল্কারোপ নিয়ে নতুন বার্তা

১৪

দ্বিতীয় ম্যাচে ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যয় তানজিদের

১৫

মুরাদনগরে তিন খুন / মানুষ না থাকায় গ্রাম পুলিশ দিয়ে খোঁড়া হয়েছে কবর

১৬

তরুণদের ‘ভরসা’ দিতে বললেন জয়সুরিয়া

১৭

দায়মুক্ত হয়েছে জামায়াত : এটিএম আজহার

১৮

চার ওমরাহ প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স স্থগিত, অনেককে জরিমানা

১৯

শরণার্থীদের বিষয়ে কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে জার্মান সরকার

২০
X